জনমানবশূন্য দ্বীপে ৪০ বছর আছেন যিনি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০১:০৯:১০ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

কয়েকশ প্রজাতির পাখি, শত শত বন্য ঘোড়া এবং সহস্র সীল মাছের আবাসস্থল আর চারদিকে সমুদ্রের নীল নোনা জলরাশিবেষ্টিত দ্বীপ স্যাবেল আইল্যান্ড। সমুদ্রে ভেসে আসা  জাহাজের ভাঙা টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নির্জন এই দ্বীপটির অবস্থান কানাডার মূল ভূ-খণ্ড থেকে ১৯০ মাইল দূরে। দৈর্ঘ্যে ২৬ মাইল এবং প্রস্থে এক মাইল আয়তনের এই দ্বীপটি বছরের অর্ধেক প্রায় ১২৫ দিন ঢেকে থাকে কুয়াশায়।

ভৌগলিকভাবে এমন অদ্ভুত হওয়ায় কানাডায় এটি ‘ভূতূড়ে দ্বীপ’ হিসেবে পরিচিত। ফলে কিছু সাহসী পর্যটক ছাড়া সারা বছর তেমন কেউ ওই দ্বীপে যান না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, যে দ্বীপে সাধারণ মানুষ আনাগোনা নেই বললেই চলে সেখানে গত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এক নারী একা বাস করছেন।

জো লুকাস নামের ওই নারী ছিলেন কানাডার হালিফাক্স শহরের বাসিন্দা। ১৯৭১ সালে লুকাস যখন একুশ বছরের তরুণী তখন প্রথমবারের মতো ঘোড়া নিয়ে গবেষণার কাজে স্যাবেল দ্বীপে আসেন।  প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ার মতো দ্বীপটির প্রেমে পড়েন তিনি। সিদ্ধান্ত নেন থেকে যাবেন এই জন-মানবহীন দ্বীপে। গবেষণা করবেন প্রকৃতি নিয়ে।

সেই থেকে শুরু। মাঝখানে কেটে গেছে চার দশক। একুশ বছরের তরুণী লুকাস এখন সাতষট্টি বছরের বৃদ্ধা। এই সময়ের মাঝে পৃথিবীতে পরিবর্তন এসেছে অনেক। কিন্তু লুকাস ওই দ্বীপে বাস করছেন ঠিক আগের মতোই। কিন্তু একা কীভাবে সময় কাটে তার? কী খান তিনি? সব প্রশ্নের জবাবে তিনি ডেইলি মেইল ট্রাভেলকে শুনিয়েছেন এতগুলো বছর দ্বীপের এই বিরূপ আবহাওয়ায় তার টিকে থাকার অজানা কাহিনি।

যেহেতু ফেরি বা ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া এখানে পৌঁছানো সম্ভব না, সেহেতু কয়েক সপ্তাহ পরপর মূল ভূ-খণ্ড থেকে লুকাস খাবারসহ বেঁচে থাকার রসদ আনিয়ে নেন। এছাড়া মাঝে মধ্যে তিনি মূল ভূ-খণ্ডে যান। তবে সেখানে তিনি থাকেন না। কারণ এই দ্বীপই এখন তার সব। সময় কাটানোর জন্য লুকাসের রয়েছে ডায়েরি এবং বাইনোকুলার। ডায়েরিতে তিনি পর্যবেক্ষণসমূহ লিখে রাখেন। আর বাইনোকুলারের লেন্স দিয়ে দ্বীপের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

দ্বীপের সংগ্রামী জীবন পার করা এই নারী এখন পরিবেশবিদদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। পরিবেশবিদ গ্রেগ স্টুয়ার্ড বলেন, ‘চার দশকে তিনি অসংখ্য ঘোড়ার কঙ্কাল সংগ্রহ করেছেন যা গবেষকদের কাছে অতি মূল্যবান। এছাড়া তিনি দ্বীপে ঘুরে ঘুরে সমুদ্রে ভেসে আসা বর্জ্য সংগ্রহ করে সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধেও সাহায্য করছেন।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জনমানবশূন্য দ্বীপে ৪০ বছর আছেন যিনি !

আপডেট সময় : ০১:০৯:১০ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

কয়েকশ প্রজাতির পাখি, শত শত বন্য ঘোড়া এবং সহস্র সীল মাছের আবাসস্থল আর চারদিকে সমুদ্রের নীল নোনা জলরাশিবেষ্টিত দ্বীপ স্যাবেল আইল্যান্ড। সমুদ্রে ভেসে আসা  জাহাজের ভাঙা টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নির্জন এই দ্বীপটির অবস্থান কানাডার মূল ভূ-খণ্ড থেকে ১৯০ মাইল দূরে। দৈর্ঘ্যে ২৬ মাইল এবং প্রস্থে এক মাইল আয়তনের এই দ্বীপটি বছরের অর্ধেক প্রায় ১২৫ দিন ঢেকে থাকে কুয়াশায়।

ভৌগলিকভাবে এমন অদ্ভুত হওয়ায় কানাডায় এটি ‘ভূতূড়ে দ্বীপ’ হিসেবে পরিচিত। ফলে কিছু সাহসী পর্যটক ছাড়া সারা বছর তেমন কেউ ওই দ্বীপে যান না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, যে দ্বীপে সাধারণ মানুষ আনাগোনা নেই বললেই চলে সেখানে গত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এক নারী একা বাস করছেন।

জো লুকাস নামের ওই নারী ছিলেন কানাডার হালিফাক্স শহরের বাসিন্দা। ১৯৭১ সালে লুকাস যখন একুশ বছরের তরুণী তখন প্রথমবারের মতো ঘোড়া নিয়ে গবেষণার কাজে স্যাবেল দ্বীপে আসেন।  প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ার মতো দ্বীপটির প্রেমে পড়েন তিনি। সিদ্ধান্ত নেন থেকে যাবেন এই জন-মানবহীন দ্বীপে। গবেষণা করবেন প্রকৃতি নিয়ে।

সেই থেকে শুরু। মাঝখানে কেটে গেছে চার দশক। একুশ বছরের তরুণী লুকাস এখন সাতষট্টি বছরের বৃদ্ধা। এই সময়ের মাঝে পৃথিবীতে পরিবর্তন এসেছে অনেক। কিন্তু লুকাস ওই দ্বীপে বাস করছেন ঠিক আগের মতোই। কিন্তু একা কীভাবে সময় কাটে তার? কী খান তিনি? সব প্রশ্নের জবাবে তিনি ডেইলি মেইল ট্রাভেলকে শুনিয়েছেন এতগুলো বছর দ্বীপের এই বিরূপ আবহাওয়ায় তার টিকে থাকার অজানা কাহিনি।

যেহেতু ফেরি বা ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া এখানে পৌঁছানো সম্ভব না, সেহেতু কয়েক সপ্তাহ পরপর মূল ভূ-খণ্ড থেকে লুকাস খাবারসহ বেঁচে থাকার রসদ আনিয়ে নেন। এছাড়া মাঝে মধ্যে তিনি মূল ভূ-খণ্ডে যান। তবে সেখানে তিনি থাকেন না। কারণ এই দ্বীপই এখন তার সব। সময় কাটানোর জন্য লুকাসের রয়েছে ডায়েরি এবং বাইনোকুলার। ডায়েরিতে তিনি পর্যবেক্ষণসমূহ লিখে রাখেন। আর বাইনোকুলারের লেন্স দিয়ে দ্বীপের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

দ্বীপের সংগ্রামী জীবন পার করা এই নারী এখন পরিবেশবিদদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। পরিবেশবিদ গ্রেগ স্টুয়ার্ড বলেন, ‘চার দশকে তিনি অসংখ্য ঘোড়ার কঙ্কাল সংগ্রহ করেছেন যা গবেষকদের কাছে অতি মূল্যবান। এছাড়া তিনি দ্বীপে ঘুরে ঘুরে সমুদ্রে ভেসে আসা বর্জ্য সংগ্রহ করে সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধেও সাহায্য করছেন।’