বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস পালিত Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক

পা দিয়ে কাপড় সেলাই করেন যে ব্যক্তি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:০৬:০১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৭২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতো শরীর নিয়ে জন্মাননি তিনি। দুটি হাত ছাড়াই পৃথিবীতে এসেছিলেন মদন লাল (৪৫)। ভাগ্যের নির্মম এই পরিহাস মেনে নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু অন্যের করুণা নিয়ে বেঁচে নেই তিনি। দুটি সুস্থ স্বাভাবিক হাত ছাড়া যে পেশার কথা কল্পনাও করা যায় না সেই দর্জির কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। পা  দিয়ে কাপড় সেলাই করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এছাড়া হাত ছাড়াই দিব্যি রান্না, খাওয়া, চলাফেরাসহ দৈনন্দিন সব কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

তবে যত সহজে কথাগুলো বলা হলো মদন লালের জীবন কিন্তু এত সহজ ছিল না। ১৯৭২ সালে তার জন্ম। ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের প্রত্যন্ত এক গ্রামে। একে তো দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার উপর দুটি হাত নেই। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। ছোট বেলা স্কুলে ভর্তি হবার জন্য বিভিন্ন স্কুলের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু দুটি হাত না থাকায় কোনো স্কুল তাকে ভর্তি করতে চায়নি। এতে জেদ চেপে যায় মদন লালের। প্রতিজ্ঞা করেন এমন কিছু করবেন যেন সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারেন- হাত না থাকলেও কারো চেয়ে কম নন তিনি।

সিদ্ধান্ত নিলেন দর্জির কাজ শিখবেন। কিন্তু চাইলে কি আর তা পারা যায়। ধরনা দেন বিভিন্ন দর্জির কাছে। কিন্তু সবার এক কথা- যার হাত নাই সে কী করে দর্জির কাজ শিখবে? তবুও আশা ছাড়েননি মদন লাল। অদৃষ্টের হাতে নিজের ভাগ্য সপে দিয়ে রওনা হলেন ফতেহবাদ শহরে। এবার ভাগ্য তার সহায় হলো। দেখা পেলেন এক মহৎ হৃদয়ের মানুষের। তিনিই মদন লালকে দর্জির কাজ শেখাতে রাজি হলেন। শুরু হলো তার জীবন যুদ্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়। এক বছর কঠোর পরিশ্রম করে মদন লাল শিখে নিলেন কাপড় কাটা থেকে শুরু করে সেলাইয়ের সব কলাকৌশল।

ফিরে গেলেন গ্রামে। ছোট একটা দোকান দিলেন। তবে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা তার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল। কারণ যার হাত নেই তার কাছে শখের কাপড় কে দেবে? কিন্তু মদন লাল হেরে যাবার পাত্র নন। ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে লাগলেন। এক সময় সবাই তার কাজ দেখে মুগ্ধ হলেন। এখন গ্রামের সবাই তার কাছ থেকে কাপড় তৈরি করে নেন।

আজ দুঃখের দিন ফুরিয়ে সুদিন ফিরেছে মদন লালের। প্রবল ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছেন তিনি সামনের দিকে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক

পা দিয়ে কাপড় সেলাই করেন যে ব্যক্তি !

আপডেট সময় : ০৫:০৬:০১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতো শরীর নিয়ে জন্মাননি তিনি। দুটি হাত ছাড়াই পৃথিবীতে এসেছিলেন মদন লাল (৪৫)। ভাগ্যের নির্মম এই পরিহাস মেনে নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু অন্যের করুণা নিয়ে বেঁচে নেই তিনি। দুটি সুস্থ স্বাভাবিক হাত ছাড়া যে পেশার কথা কল্পনাও করা যায় না সেই দর্জির কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। পা  দিয়ে কাপড় সেলাই করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এছাড়া হাত ছাড়াই দিব্যি রান্না, খাওয়া, চলাফেরাসহ দৈনন্দিন সব কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

তবে যত সহজে কথাগুলো বলা হলো মদন লালের জীবন কিন্তু এত সহজ ছিল না। ১৯৭২ সালে তার জন্ম। ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের প্রত্যন্ত এক গ্রামে। একে তো দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার উপর দুটি হাত নেই। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। ছোট বেলা স্কুলে ভর্তি হবার জন্য বিভিন্ন স্কুলের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু দুটি হাত না থাকায় কোনো স্কুল তাকে ভর্তি করতে চায়নি। এতে জেদ চেপে যায় মদন লালের। প্রতিজ্ঞা করেন এমন কিছু করবেন যেন সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারেন- হাত না থাকলেও কারো চেয়ে কম নন তিনি।

সিদ্ধান্ত নিলেন দর্জির কাজ শিখবেন। কিন্তু চাইলে কি আর তা পারা যায়। ধরনা দেন বিভিন্ন দর্জির কাছে। কিন্তু সবার এক কথা- যার হাত নাই সে কী করে দর্জির কাজ শিখবে? তবুও আশা ছাড়েননি মদন লাল। অদৃষ্টের হাতে নিজের ভাগ্য সপে দিয়ে রওনা হলেন ফতেহবাদ শহরে। এবার ভাগ্য তার সহায় হলো। দেখা পেলেন এক মহৎ হৃদয়ের মানুষের। তিনিই মদন লালকে দর্জির কাজ শেখাতে রাজি হলেন। শুরু হলো তার জীবন যুদ্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়। এক বছর কঠোর পরিশ্রম করে মদন লাল শিখে নিলেন কাপড় কাটা থেকে শুরু করে সেলাইয়ের সব কলাকৌশল।

ফিরে গেলেন গ্রামে। ছোট একটা দোকান দিলেন। তবে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা তার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল। কারণ যার হাত নেই তার কাছে শখের কাপড় কে দেবে? কিন্তু মদন লাল হেরে যাবার পাত্র নন। ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে লাগলেন। এক সময় সবাই তার কাজ দেখে মুগ্ধ হলেন। এখন গ্রামের সবাই তার কাছ থেকে কাপড় তৈরি করে নেন।

আজ দুঃখের দিন ফুরিয়ে সুদিন ফিরেছে মদন লালের। প্রবল ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছেন তিনি সামনের দিকে।