নিউজ ডেস্ক:
নিজের ভুল স্বীকার করে আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান। রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ক্ষমা চেয়ে তিনি একটি আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, গত ২৯.১২.১৬ তারিখে আদালতের আদেশের কারণে লিখিত ভাবে জানাচ্ছি যে, সূত্রে বর্ণিত সি আর মামলাটি থানায় প্রাপ্তির পর মিস ফাইল হয়ে যাওয়ায় মামলাটি যথাসময়ে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে মামলাটি খুঁজে পাওয়ার পর রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদান্তাধীন আছে। আমার এই অনিচ্ছাকৃত ভুলে জন্য মাননীয় আদালতের নিকট ক্ষমা প্রার্থী। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। আমাকে প্রথমবারের মত ক্ষমা করিয়া কারণ দর্শানোর দায় হতে অব্যাহতির মর্জি হয়।
পরে শুনানি শেষে বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান কারণ দর্শানোর দায় থেকে ওসি এস এম কামরুজ্জামানকে অব্যাহতি প্রদান করেন। এ বিষয়ে আদালতের পেশকার মো. শরিফ উদ্দিন ভূইয়া সাংবাদিকদের জানান, সাভার থানার ওসি আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা চাইলে বিচারক তাকে কারণ দর্শানোর দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করেন এবং ভবিষ্যতে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা সাভারের বাসিন্দা ইমদাদুল হক মারধার ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করতে সাভার থানায় একাধিক বার গেলেও ওসির মামলা গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ ৪ ডিসেম্বর তারিখ সাভার থানায় মামলা করতে গেলেও ওসি মামলা নেয়নি। পরে বাদী ৬ ডিসেম্বর আদালতে স্থানীয় তিন ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। সেই সি আর মামলার আরজির ৭ম পৃষ্ঠায় বাদী উল্লেখ করেন ঘটনার বিষয়ে সাভার থানার ওসির নিকট মামলা করতে গেলেও দিনের পর দিন আশ্বস্ত করে কালক্ষেপন করে হয়রানি করেন। কিন্তু মামলা থানা কর্তৃপক্ষ রেকর্ড করেনি। ওসি প্রতিপক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বাদী ইমদাদুলকে শুধুই ঘুরিয়েছে। পরে আদালত মামলার অভিযোগ গুরুত্ব বুঝে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন এবং থানাকে এফ আই আর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।
এরপর শুরু হয় ওসির খেলা। আদালতের আদেশের পরও বেশ কিছুদিন মামলাটি এফ আই আর হিসেবে গ্রহণ করেননি সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান। পরে বাদীর আইনজীবী আনিছুর রহামন বৃহস্পতিবার বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে আদালত করণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। কারণ দর্শানোর নির্দেশে বলা হয়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা দীর্ঘদিন মামলাটি এফ আই আর হিসাবে গ্রহণ না করায় আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে আদেশের কপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকার ডিআইজি, পুলিশ সুপার, সাভার থানার এ এস পির কাছে পাঠানো হয়।