নিউজ ডেস্ক:
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যা পিয়েরে ল্যাঁক্রুয়া এবং জাতিসংঘের পুলিশ এডভাইজার স্টিফেন ফেলার বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। শান্তিরক্ষা মিশনে তারা অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও উল্লেখ করেন এই দুই কর্মকর্তা। তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, পৃথিবীর যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতা অত্যন্ত উচুমানের। তারা বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এবং অনবদ্য অবদান রাখছেন। বিশেষ করে ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় কথা বলতে পারায় বাংলাদেশের পুলিশসহ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্য-কর্মকর্তারাও বিশেষ পারদর্শিতা প্রদর্শনে সক্ষম হচ্ছেন।
স্থানীয় সময় গত সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে শান্তি রক্ষা মিশনের সচিবালয়ে এই দুই কর্মকর্তার সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হক বিপিএম, পিপিএম। শান্তিরক্ষা মিশনে নিজ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসার জন্য শহিদুল হকও আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও পুলিশ এডভাইজারকে ধন্যবাদ জানান।
জাতিসংঘের পুলিশ এডভাইজার স্টিফেন ফেলারসহ শীর্ষ কর্মকর্তাগণের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হক।
শহিদুল হক বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ফ্রেঞ্চ ভাষা শেখানোর কার্যক্রম আরও জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রমে আরও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারেন-এমন সবকিছুই করা হচ্ছে। গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে দক্ষতার সাথে কাজের মধ্য দিয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কর্মরত জাতিসংঘের যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক জাতিসংঘকে আরও অবহিত করেন যে, শান্তিরক্ষা মিশনের স্বার্থে ঢাকায় যদি কোন কর্মশালা ও সেমিনারের প্রয়োজন হয়, তাহলেও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যাবতীয় সহায়তা দিয়ে যাবে।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বশান্তি রক্ষায় তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমানে সমর্থ হয়েছে। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশকে সুযোগ ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে হাইতি ও কঙ্গো মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের দুটি পূর্ণাঙ্গ নারী ইউনিট অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বৈঠকে জাতিসংঘের চলমান ও ভবিষ্যৎ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে নারী সদস্যসহ বাংলাদেশ পুলিশের অধিক হারে অংশগ্রহণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়। এ বিষয়ে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ একমত পোষণ করেন।
জাতিসংঘ সচিবালয়ে কর্মরত বাংলাদেশিদের সাথেও মহাপরিদর্শক সাক্ষাৎকরেন এবং তাদের কর্মপরিধি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
মঙ্গলবার সকালে তিনি হাইতির উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে তিনি তার ঘনিষ্ঠজনদের সাথে সাক্ষাৎ ছাড়াও একটি ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা, বিশেষ করে জঙ্গি দমনে জনতার সমর্থনে পুলিশ বাহিনী সদা তৎপর রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মহাপরিদর্শক। মহাপরির্শকের সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময়কারি বিশিষ্ট প্রবাসীদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক আহমেদ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশি-আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক লীগের সভাপতি খোরশেদ খন্দকার, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গির হোসেন ও ইসমত হক খোকন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দার প্রমুখ।