শিরোনাম :
Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে কবরস্থ করতে দেওয়া শিশু মৃত নয়, জীবিত! Logo “শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা” – ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান Logo সিরাজগঞ্জে বসতবাড়ির জমি দখলের হুমকির অভিযোগে জিডি Logo  ইবির পাঁচ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ 

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৭:০০:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭
  • ৭৫৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। যা এখন কর্তৃপক্ষের অনেকটা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা অতিক্রম করেছে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই। প্রতি মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। এর ফলে সঞ্চয়পত্র ক্রেতাদেরকে সুদ হিসেবে পরিশোধ করতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

জাতীয় সংসদের বিগত অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদহার আমাদের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। কিন্তু জনগণের একটি বিশাল অংশ সঞ্চয়পত্র কিনে উপকৃত হচ্ছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে হুট করে এর সুদের হার কমানো সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া, অন্যদিকে সরকারের সুদের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে আর্থিক খাতে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি (আট মাসে) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩২ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা, যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬৫ দশমিক ৪ ভাগ বেশি। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে এবার সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্তির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬২ দশমিক ১৮ ভাগ। এ পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে অধিক পরিমাণ ঋণ গ্রহণে সরকারের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

ব্যাংকে আমানতের সুদের হার ব্যাপক কমে যাওয়া এবং পুঁজিবাজারে ধস- এ দুই কারণে সাধারণ মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রকে বেছে নিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই সঞ্চয়পত্রে মানুষের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে বাজেটে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরে ৯ মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৪২০ কোটি ৫৯ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। তার আগের মাস ডিসেম্বরে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ২৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা ৭২ শতাংশ। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় নিট বিক্রি।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালের এপ্রিলে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার গড়ে ২ শতাংশ কমানো হলেও এর বিক্রি কমেনি।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, গত বছর নভেম্বর মাসে ৪ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, অক্টোবরে ৪ হাজার ২৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার ৮৫৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আগস্টে ৪ হাজার ২৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। জুলাই ও জুনে বিক্রির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩ হাজার ৪৯৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ও ৩ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া !

আপডেট সময় : ০৭:০০:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। যা এখন কর্তৃপক্ষের অনেকটা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা অতিক্রম করেছে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই। প্রতি মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। এর ফলে সঞ্চয়পত্র ক্রেতাদেরকে সুদ হিসেবে পরিশোধ করতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

জাতীয় সংসদের বিগত অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদহার আমাদের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। কিন্তু জনগণের একটি বিশাল অংশ সঞ্চয়পত্র কিনে উপকৃত হচ্ছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে হুট করে এর সুদের হার কমানো সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া, অন্যদিকে সরকারের সুদের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে আর্থিক খাতে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি (আট মাসে) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩২ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা, যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬৫ দশমিক ৪ ভাগ বেশি। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে এবার সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্তির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬২ দশমিক ১৮ ভাগ। এ পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে অধিক পরিমাণ ঋণ গ্রহণে সরকারের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

ব্যাংকে আমানতের সুদের হার ব্যাপক কমে যাওয়া এবং পুঁজিবাজারে ধস- এ দুই কারণে সাধারণ মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রকে বেছে নিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই সঞ্চয়পত্রে মানুষের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে বাজেটে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরে ৯ মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৪২০ কোটি ৫৯ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। তার আগের মাস ডিসেম্বরে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ২৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা ৭২ শতাংশ। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় নিট বিক্রি।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালের এপ্রিলে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার গড়ে ২ শতাংশ কমানো হলেও এর বিক্রি কমেনি।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, গত বছর নভেম্বর মাসে ৪ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, অক্টোবরে ৪ হাজার ২৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার ৮৫৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আগস্টে ৪ হাজার ২৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। জুলাই ও জুনে বিক্রির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩ হাজার ৪৯৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ও ৩ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।