শিরোনাম :
Logo মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে Logo স্বর্ণের দামে সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস Logo দুবাইয়ে বিগ টিকিট লটারি জিতে লাখপতি দুই বাংলাদেশি Logo বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ Logo এটিএম আজহার মুক্তি না পাওয়ায় আমরা ব্যথিত, তবে হতাশ নই Logo আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ৩ বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে বিএনপি Logo ধর্ম নিরপেক্ষতা বিলুপ্তে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত বিএনপি Logo হঠাৎ বৃষ্টিতে চাঁদপুর শহরের মুসলিম কবরস্থান রোড এলাকা সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী Logo ইনসাফের আকাঙ্ক্ষা থেকেই চব্বিশের লড়াই:ব্যারিস্টার ফুয়াদ Logo ইবিতে বিভাগের নাম পরিবর্তসহ দুই দফা দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ

ঋণ পরিশোধে ১৫ বছরের রেকর্ড ভাঙলো সরকার !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৪৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

চলতি অর্থবছরে বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু ঋণ নেওয়া দূরের কথা, উল্টো আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাস পর্যন্ত সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। ঋণ পরিশোধে গত ১৫ বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ রেকর্ড। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আহরিত হওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে সরকারকে এখন আর ব্যাংকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ বাজেটে ঘাটতির পরিমাণও ছিল সর্বোচ্চ। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। বিশাল এই ঘাটতি পূরণে ব্যাংকিং খাত থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু ওই ঋণ না নিয়ে উল্টো আগের বছরের নেওয়া ঋণ শোধ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকে সরকারের মোট ঋণ স্থিতি ছিল ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। তা গত অর্থবছর শেষে ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। এই হিসাবে সরকারের ঋণ কমেছে ২৫ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। সরকার এই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার দায় শোধ ও তফসিলি খাতের ব্যাংকগুলোর ৮ হাজার ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

গত ১৫ বছরের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১২ বছরই ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু সর্বশেষ পর পর তিন অর্থবছরে ঋণ নেওয়ার চেয়ে বেশি পরিশোধ করেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকার এক বছর আগেও তফসিলি খাতের ব্যাংকগুলো থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরে তা কমে গেছে। এতে তফসিলি ব্যাংকগুলোর দেওয়া ঋণের পরিমাণ খুবই সামান্য বেড়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগ মন্দা পরিস্থিতিতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরকারের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ট্রেজারি বিল বা বিভিন্ন বন্ডে বিনিয়োগ করে অনেক ব্যাংক কিছু মুনাফা করার চেষ্টা করছে।

ব্যাংকের আমানতের তুলনায় সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে দ্বিগুণ সুদ পাওয়া যায়। এতে সাধারণ সঞ্চয়ী লোকজন এখন আর ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। তারা বেশি মুনাফার আশায় সঞ্চয়পত্র স্কিমে টাকা রাখছেন। এতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের আট মাসে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ হওয়ার কাছাকাছি। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৩৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

সূত্র জানায়, দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত তারল্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। আর বিনিয়োগ মন্দা পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এ অর্থ সরকারের ট্রেজারিতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। আগে সরকারকে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলো অনীহা দেখালেও বর্তমানে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় লেগে গেছে। তবে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ায় ব্যাংক ঋণে সরকারের আগ্রহ কমেছে।

এটি সরকারের জন্য ভালো নয় উল্লেখ করে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত বলেন, সরকার ইচ্ছা করে সঞ্চয়পত্র কিনছে না। বিক্রি বেড়েছে। তাই আয় বাড়ছে। এটি সরকারের সুদের বোঝা বাড়াচ্ছে। এ জন্য ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া ভালো। এটি চলমান বিনিয়োগ মন্দার মধ্যে ব্যাংকের জন্য ভালো। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো। বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যুক্তিসঙ্গত বলেও মনে করেন তিনি। খবর: আমাদের সময়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে

ঋণ পরিশোধে ১৫ বছরের রেকর্ড ভাঙলো সরকার !

আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

চলতি অর্থবছরে বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু ঋণ নেওয়া দূরের কথা, উল্টো আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাস পর্যন্ত সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। ঋণ পরিশোধে গত ১৫ বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ রেকর্ড। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আহরিত হওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে সরকারকে এখন আর ব্যাংকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ বাজেটে ঘাটতির পরিমাণও ছিল সর্বোচ্চ। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। বিশাল এই ঘাটতি পূরণে ব্যাংকিং খাত থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু ওই ঋণ না নিয়ে উল্টো আগের বছরের নেওয়া ঋণ শোধ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকে সরকারের মোট ঋণ স্থিতি ছিল ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। তা গত অর্থবছর শেষে ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। এই হিসাবে সরকারের ঋণ কমেছে ২৫ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। সরকার এই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার দায় শোধ ও তফসিলি খাতের ব্যাংকগুলোর ৮ হাজার ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

গত ১৫ বছরের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১২ বছরই ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু সর্বশেষ পর পর তিন অর্থবছরে ঋণ নেওয়ার চেয়ে বেশি পরিশোধ করেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকার এক বছর আগেও তফসিলি খাতের ব্যাংকগুলো থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরে তা কমে গেছে। এতে তফসিলি ব্যাংকগুলোর দেওয়া ঋণের পরিমাণ খুবই সামান্য বেড়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগ মন্দা পরিস্থিতিতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় সরকারের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ট্রেজারি বিল বা বিভিন্ন বন্ডে বিনিয়োগ করে অনেক ব্যাংক কিছু মুনাফা করার চেষ্টা করছে।

ব্যাংকের আমানতের তুলনায় সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে দ্বিগুণ সুদ পাওয়া যায়। এতে সাধারণ সঞ্চয়ী লোকজন এখন আর ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। তারা বেশি মুনাফার আশায় সঞ্চয়পত্র স্কিমে টাকা রাখছেন। এতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের আট মাসে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ হওয়ার কাছাকাছি। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৩৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

সূত্র জানায়, দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত তারল্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। আর বিনিয়োগ মন্দা পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এ অর্থ সরকারের ট্রেজারিতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। আগে সরকারকে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলো অনীহা দেখালেও বর্তমানে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় লেগে গেছে। তবে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ায় ব্যাংক ঋণে সরকারের আগ্রহ কমেছে।

এটি সরকারের জন্য ভালো নয় উল্লেখ করে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত বলেন, সরকার ইচ্ছা করে সঞ্চয়পত্র কিনছে না। বিক্রি বেড়েছে। তাই আয় বাড়ছে। এটি সরকারের সুদের বোঝা বাড়াচ্ছে। এ জন্য ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া ভালো। এটি চলমান বিনিয়োগ মন্দার মধ্যে ব্যাংকের জন্য ভালো। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো। বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যুক্তিসঙ্গত বলেও মনে করেন তিনি। খবর: আমাদের সময়।