শিরোনাম :

নির্বাচনে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়: জামায়াত আমির

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদদের রক্তের মর্যাদা রক্ষা করে খুবই সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করি। নির্বাচনে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। রোববার (৮ জুন) দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, খুব ভালো নির্বাচন আমরা আশা করি। কেউ নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমাদের শহীদদের প্রতি আমরা ইমানদারি রক্ষা করতে পারবো না। আমাদের শহীদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন কোনো নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, অতীতে যে যা করেছে তার কিছু পাওনা তারা পেয়েছে, আরও পাবে, বাকিটা আখিরাতেও পাবে। আমরা একটা প্রতিহিংসামুক্ত সমাজ দেখতে চাই। আমার বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের মামলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তখন আমার সেই বয়সও ছিল না। আমি সেই অর্থে কোনো সংগঠনের সঙ্গে মোটেই যুক্ত ছিলাম না। এখন যেহেতু আমি জামায়াতে ইসলামীর আমির, তাই আমাকে যুদ্ধাপরাধী বানানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু আমার বিষয়ে কুলাউড়ার একটা মানুষও খারাপ কোনো কথা বলেনি। আমি এই ঝণ আজীবন শোধ করতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রতি যদি এরকম আচরণ করা হয় তাহলে রাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে কি করা হয়েছে তা এখান থেকেই বোঝা যায়। আমরা এটার কোন প্রতিশোধ নেব না। কে বা কারা করেছে আমরা সব জানি। প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধ যদি নিতেই থাকি, তাহলে এর কোনো শেষ নাই। এই সমাজ একটা অসুরের সমাজে পরিণত হবে। একটা মানবিক সমাজ আর বানাতে পারবো না। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের ন্যায়বিচার হোক, এই দাবি আমাদের বলিষ্ঠ। এখানে আমরা কোনো ছাড় দেবো না।

শফিকুর রহমান বলেন, দেশের মানবসম্পদ আর আল্লাহর দেওয়া সম্পদই যথেষ্ট বাংলাদেশকে বদলানোর জন্য। আমাদের কুশিক্ষার জায়গায় সুশিক্ষা ফিরিয়ে আনতে হবে। যদি শিক্ষার কারিকুলাম ও মডিউল নৈতিকতার ভিত্তিতে হয়, তাহলেই শিক্ষার পরিপূর্ণ পূর্ণতা পাবে। আকাশ সংস্কৃতির কারণে পরিবারের কাঠামো এলোমেলো হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানে একজন মানুষে কীভাবে নিজে বড়লোক হবে, শুধু এটাই শেখানো হয়। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি পর্যন্ত সবাই ট্যাক্স দেয়। সেই ট্যাক্সের টাকায় কোনো না কোনোভাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার ব্যয় করেছে।

তিনি বলেন, যারা উচ্চশিক্ষায় পড়ালেখা করেছি, জাতির টাকা আমাদের পেটে ঢুকেছে, মগজে ঢুকেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ইট, বালি, পাথরের সঙ্গে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ জড়িত। এই শিক্ষাটাই যদি মানুষকে দেওয়া হতো যে, তোমাদের বেড়ে ওঠার পেছনে সমস্ত মানুষের অবদান। তাদের দান-অনুদানে তুমি আজ এই জায়গায় এসেছো। যত বড় মেধাবী যতবড় শিক্ষিত ততবেশি তারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। এটাই যদি তাদের মগজে প্রতিষ্ঠা করা যেতো, তাহলে ঘুষ নেওয়ার সময় তাদের হাত থরথর করে কাঁপতো। এই নৈতিক দায়বদ্ধতা যদি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত করতে পারি তাহলে আমাদের শিক্ষিত সমাজ জাতির সম্পদে পরিণত হবে।

সভায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও ঢাকা পল্টন থানা আমির শাহীন আহমদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত কত?

নির্বাচনে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়: জামায়াত আমির

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:৪৪ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদদের রক্তের মর্যাদা রক্ষা করে খুবই সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করি। নির্বাচনে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। রোববার (৮ জুন) দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, খুব ভালো নির্বাচন আমরা আশা করি। কেউ নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমাদের শহীদদের প্রতি আমরা ইমানদারি রক্ষা করতে পারবো না। আমাদের শহীদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন কোনো নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, অতীতে যে যা করেছে তার কিছু পাওনা তারা পেয়েছে, আরও পাবে, বাকিটা আখিরাতেও পাবে। আমরা একটা প্রতিহিংসামুক্ত সমাজ দেখতে চাই। আমার বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের মামলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তখন আমার সেই বয়সও ছিল না। আমি সেই অর্থে কোনো সংগঠনের সঙ্গে মোটেই যুক্ত ছিলাম না। এখন যেহেতু আমি জামায়াতে ইসলামীর আমির, তাই আমাকে যুদ্ধাপরাধী বানানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু আমার বিষয়ে কুলাউড়ার একটা মানুষও খারাপ কোনো কথা বলেনি। আমি এই ঝণ আজীবন শোধ করতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রতি যদি এরকম আচরণ করা হয় তাহলে রাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে কি করা হয়েছে তা এখান থেকেই বোঝা যায়। আমরা এটার কোন প্রতিশোধ নেব না। কে বা কারা করেছে আমরা সব জানি। প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধ যদি নিতেই থাকি, তাহলে এর কোনো শেষ নাই। এই সমাজ একটা অসুরের সমাজে পরিণত হবে। একটা মানবিক সমাজ আর বানাতে পারবো না। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের ন্যায়বিচার হোক, এই দাবি আমাদের বলিষ্ঠ। এখানে আমরা কোনো ছাড় দেবো না।

শফিকুর রহমান বলেন, দেশের মানবসম্পদ আর আল্লাহর দেওয়া সম্পদই যথেষ্ট বাংলাদেশকে বদলানোর জন্য। আমাদের কুশিক্ষার জায়গায় সুশিক্ষা ফিরিয়ে আনতে হবে। যদি শিক্ষার কারিকুলাম ও মডিউল নৈতিকতার ভিত্তিতে হয়, তাহলেই শিক্ষার পরিপূর্ণ পূর্ণতা পাবে। আকাশ সংস্কৃতির কারণে পরিবারের কাঠামো এলোমেলো হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানে একজন মানুষে কীভাবে নিজে বড়লোক হবে, শুধু এটাই শেখানো হয়। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি পর্যন্ত সবাই ট্যাক্স দেয়। সেই ট্যাক্সের টাকায় কোনো না কোনোভাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার ব্যয় করেছে।

তিনি বলেন, যারা উচ্চশিক্ষায় পড়ালেখা করেছি, জাতির টাকা আমাদের পেটে ঢুকেছে, মগজে ঢুকেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ইট, বালি, পাথরের সঙ্গে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ জড়িত। এই শিক্ষাটাই যদি মানুষকে দেওয়া হতো যে, তোমাদের বেড়ে ওঠার পেছনে সমস্ত মানুষের অবদান। তাদের দান-অনুদানে তুমি আজ এই জায়গায় এসেছো। যত বড় মেধাবী যতবড় শিক্ষিত ততবেশি তারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। এটাই যদি তাদের মগজে প্রতিষ্ঠা করা যেতো, তাহলে ঘুষ নেওয়ার সময় তাদের হাত থরথর করে কাঁপতো। এই নৈতিক দায়বদ্ধতা যদি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত করতে পারি তাহলে আমাদের শিক্ষিত সমাজ জাতির সম্পদে পরিণত হবে।

সভায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও ঢাকা পল্টন থানা আমির শাহীন আহমদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।