কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খোকন চন্দ্র বর্মন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৬মে) বিকেল ৫ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে একাই এ যে কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তিনি ‘কৃষক বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, নায্যমূল্য নিশ্চিত কর’, ‘ফসলের নায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে কৃষক মরবে ঋণগ্রস্থ আর হতাশায়’, ‘উত্তরবঙ্গের কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হোক’—এমন প্লাকার্ডে মাধ্যমে নীরব প্রতিবাদ জানান।
এসময় খোকন চন্দ্র বর্মন বলেন, “আমাদের বাজারে সবজির দাম নিয়ে অনেক নিউজ হয়। অথচ কৃষকের ফসল চাষের পিছনে পরিশ্রম, অর্থ ব্যয়, সার কীটনাশকে দাম বৃদ্ধি এগুলো নিয়ে কেউ কথা বলে না।আমাদের উত্তরবঙ্গে ৯০% মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে মূলত কৃষির উপরে। কিন্তু এইবার কৃষকের অবস্থা নাজেহাল সার কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি হওয়ার পরেও তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল চাষ করে। অথচ এইবার তারা সেই ফসলের ন্যায্যদাম তো দূরের কথা ফসল বিক্রি করতে পারে না। ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকের কাছে থেকে প্রতি কেজি কুমড়া কিনছে ৫-৬ টাকায়। ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা শহর,বিভাগীয় শহর গুলোতে সেই কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়।
এই বাজার ব্যবস্থার কারণে আমার জেলার প্রতিটা কৃষক ঋণে জর্জরিত এখন। আলুতে ক্ষতির শিকার হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। কুমড়া ও ভুট্টাতে লসের অপেক্ষায়।
তিনি আরো বলেন, কৃষককে এবার ন্যূনতম কেজি প্রতি ২০ টাকা না দিলে আগামীতে ৬০-৭০ টাকায় কিনতে হবে সকল ভোক্তাকে।
কৃষককে বাঁচাতে সরকার, ভোক্তা, ব্যবসায়ী সকলে মিলে ন্যূনতম দাম নির্ধারণ করা অতিপ্রয়োজন। আশা করবো সরকার কৃষকের কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণের অতিজরুরী পদক্ষেপ নিবেন।
উল্লেখ্য, তিনি আজকে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল তিনি একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি সৌধে এই কর্মসূচি পালন করেন। আর এই কর্মসূচিকে অনেকেই সমর্থন জানান।
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ হচ্ছে দেশের অন্যতম কৃষি অঞ্চল। উত্তরবঙ্গের কৃষি শুধু এখানকার মানুষের জীবিকা নির্বাহেই নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাজার ব্যবস্থাপনা, বাজার সিন্ডিকেটসহ ইত্যাদি কারণে কৃষকরা বছরের পর বছর ধরে তারা তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। তাই উত্তরবঙ্গের কৃষকদের এই দুর্ভোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।