ভারত-পাকিস্তানের মাত্র চারদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি দশকের পর দশক ধরে চলে আশা সামরিক মতবাদ বদলে দিয়েছে। পরাশক্তি ও পশ্চিমা বিশ্বের শ্রেষ্ঠত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একই সঙ্গে শক্তি ও আধুনিক প্রযুক্তির বিচারে চীনের উদ্ভাবনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
গত ৭ মে রাত ১টা বেজে ৫ মিনিট থেকে দেড়টার মধ্যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে অভিযানে নামে ভারত। তবে এই সময় প্রতিরোধ গড়ে তোলে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, তাদের বিমানবাহিনী (পিএএফ) আধুনিক বিমান যুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছে পাল্টা আক্রমণ চালানোর মাধ্যমে।
বিশ্বব্যাপী যেকোনো বিমান বাহিনীর জন্য প্রথমবারের মতো ফরাসি-নির্মিত ৪.৫ প্রজন্মের ১২০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বহুমুখী যুদ্ধবিমান ডাসল্ট রাফায়েল সফলভাবে ভূপাতিত করার মাধ্যমে সংঘাতে প্রথম নজিরবিহীন ক্ষতি সাধন করে পিএএফ। রাফায়েল ধ্বংসে ব্যবহার করা হয় চীনের তৈরি ৪.৫ প্রজন্মের জে-১০সি যুদ্ধবিমান। এই ফাইটার জেটটি রাফায়েলের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ কম মূল্যের (৪০ মিলিয়ন ডলার)।
দামে এতো কম হলেও কৌশলগত দিক দিয়ে যে জে-১০সি অনেকটা এগিয়ে সেটি প্রমাণ করেছে পাকিস্তানকে সফলতা এনে দেয়ার মধ্য দিয়ে। এটি সামরিক বিমান প্রযুক্তির বিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। তাই কৌশলগতভাবে পাকিস্তানের বিজয় হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়।
কম মূল্যের এবং চীনা প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানের এই সফলতা বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা সম্প্রদায়ের জন্যও একটি স্পষ্ট বার্তা যে শ্রেষ্ঠত্বের আবরণ আর কেবল পশ্চিমা মহাকাশ শক্তির ওপর নির্ভর করতে পারে না। এমনটি প্রমাণিত হওয়ার পথেও রয়েছে। রাফায়েল ভূপাতিত হওয়ার পরের দিন এর নির্মাতা কোম্পানি ডাসল্ট এভিয়েশনের শেয়ার ৬ শতাংশ কমে যায়। দিনের মধ্যেই এত বড় পতন অত্যন্ত অস্বাভাবিক যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার উল্লেখযোগ্য ক্ষতিকে প্রতিফলিত করে।
বিপরীতে, জে-১০সি-এর নির্মাতা এভিয়েশন ইনডাস্ট্রি করপোরেশন অব চায়না (এভিআইসি)-এর শেয়ার শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে নজিরবিহীনভাবে ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বাজারের প্রতিক্রিয়া প্রতিষ্ঠানটির প্রতি আস্থার একটি শক্তিশালী অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি কল্পনাতীত বিষয় যে প্রথমবারের মতো চীনা প্ল্যাটফর্মে তৈরি যুদ্ধাস্ত্র বাস্তব-বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে একটি পশ্চিমা ফ্ল্যাগশিপ ফাইটারকে নিরপেক্ষ করেছে। এর অর্থ পশ্চিমা বিমানের শ্রেষ্ঠত্ব দাবির প্রসঙ্গটি বেশ দুর্বল। এর আরেকটি অর্থ হলো চীনের বিমান শক্তি এখন বিশ্ব মঞ্চে যুদ্ধ-প্রমাণিত।