রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (রুয়া)-এর নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত আন্দোলনে শাখা শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদের “আন্দোলন অহিংস থেকে সহিংস হবে” এক বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে ছাত্রদল অপর দিকে অসাবধানতাবশত প্রদত্ত বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা।
শুক্রবার (২মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য (দাপ্তরিক দায়িত্বে) আতিক শাহরিয়ার আবির এবং শাখা ছাত্রশিবির প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মোঃ নওসাজ্জামানের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করে এ দুই ছাত্রসংগঠন।
গত ১মে এডহক কমিটির জরুরী সভায় সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের মতামতের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী ১০ মে রুয়া’র কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। বিকেল ৪টায় রুয়া নির্বাচন স্থগিত হওয়ার প্রতিবাদে ভিসির বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন রুয়া’র পদপ্রত্যাশী প্রার্থীরা।এসময় গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে, দাবি না মানা হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে “১০ তারিখে রুয়া নির্বাচন না হলে আন্দোলন অহিংস থেকে সহিংস হবে।” বলেন।
রাবি শিবিরের এ বক্তব্যে নিন্দা প্রকাশ করে
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “রাবি শিবির সভাপতির বক্তব্য তাদের পুরনো অতীতকেই মনে করিয়ে দেয়। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আর কোনো সন্ত্রাসবাদের রাজনীতি চলতে দেওয়া হবে না। ক্যাম্পাসে মুক্ত ও জ্ঞানচর্চার পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনকে বন্ধুপ্রতীম হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই।”
এবিষয়ে শাখা শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (RUAA) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ও একাডেমিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদান রাখার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলের মতো বর্তমানেও দলীয় প্রভাব ও কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের বঞ্চিত করার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি RUAA নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে, যা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার খর্ব করার শামিল। একটি রাজনৈতিক চক্র নির্বাচন স্থগিত করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে দিয়ে কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করানো, নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ স্যারের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের মতো নিন্দনীয় ঘটনা ঘটিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, ” সাবেক শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার রক্ষার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমি গতকাল RUAA নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। গণমাধ্যমে প্রদত্ত বক্তব্যে, দাবি না মানা হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ‘সহিংস আন্দোলন’ শব্দটি উচ্চারণ করে ফেলি। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ ব্যবহারের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে আমি আমার বক্তব্য ও শব্দচয়নের ক্ষেত্রে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল থাকার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।”