গত ২১ এপ্রিল (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘ল্যাব পরিষেবা নীতি’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তবে আগামী ৬ মে টেকনিক্যাল কমিটির মিটিংয়ে এ নিয়ে পর্যালোচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেন্ট্রাল ল্যাব পরিচালক। আপাতত পর্যন্ত ল্যাব ব্যবহারে ফি সংক্রান্ত নির্দেশনা স্থগিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি (Thermo Scientific Gas Chromatography) প্রতি নমুনার জন্য A ক্যাটাগরিতে ২০০০ টাকা, B ক্যাটাগরিতে ৪০০০ টাকা এবং C ক্যাটাগরিতে ৫০০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। হাই-পারফরম্যান্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি (HPLC) প্রতি নমুনার জন্য A ক্যাটাগরিতে ২০০০ টাকা, B ক্যাটাগরিতে ৪০০০ টাকা এবং C ক্যাটাগরিতে ৫০০০ টাকা নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে ।GC-MS বিশ্লেষণের জন্য প্রতি নমুনায় A ক্যাটাগরিতে ২৫০০ টাকা, B ক্যাটাগরিতে ৪৫০০ টাকা এবং C ক্যাটাগরিতে ৫০০০ টাকা ফি নির্ধারিত সহ আরো কয়েকটি বিষয়ে অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করা হয়।
তবে এই তিনটি ক্যাটাগরিতে মধ্যে A ক্যাটাগরি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এম.এসসি./এম.ফিল./পিএইচডি করা শিক্ষার্থীদের জন্য। যেখানে সবোর্চ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আলোচনা সমালোচনা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এত পরিমাণ ফি শিক্ষার্থীদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। এতে করে অনেকেই গবেষণাবিমুখ হয়ে পড়বে। তারা মনে করেন, এই সিদ্ধান্তটি অযৌক্তিক, অমানবিক এবং গবেষণার মৌলিক চেতনার পরিপন্থি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবকাঠামো ও আর্থিক বাস্তবতায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও গবেষণার জন্য অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহ ও সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ই বিভাগের মুবাশ্বশির বলেন, আমাদের ল্যাবে অনেক যন্ত্রপাতি এখনও অকার্যকর। এবং আর যেসব যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো পরিচালনার জন্য তেমন কোন দক্ষ জনবল নেই। এ সব বিষয় ঠিক না করে ল্যাব ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের থেকে ফি নেওয়া অযৌক্তিক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্ট্রাল ল্যাবের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিভাগগুলোতে আলাদা ল্যাব আছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের একাডেমিক কাজে প্রয়োজনীয় ল্যাব করতে পারবে। সেন্ট্রাল ল্যাব হলো একটি বিশেষায়িত ল্যাব যেখানে বিশেষ ধরনের গবেষণার কাজ করা হয়ে থাকে। একজন ১ম, ২য় কিংবা ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীর সচরাচর সেন্ট্রাল ল্যাবের প্রয়োজন হয় না। সেন্ট্রাল ল্যাবের প্রয়োজন হয় পিএইচডি, মাস্টার্স কিংবা এমফিল শিক্ষার্থীদের। তাদের জন্য এই চার্জটা প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে যেসকল শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করছে তারা আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করার চেষ্টা করেননি। আমার সাথে আলোচনা করলে হয়তো আমি তাদের বুঝিয়ে বলতে পারতাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করার আগে কারোর উচিত আগে একটু কর্তৃপক্ষের কাছে জেনে-শুনে যাচাই করে নেয়া।’
তিনি আরোও বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহারে ফি একটু বেশি ধরা হয়েছে। এটি আমাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। এটি সংশোধন করার জন্য আমরা ৬ মে তারিখ পর্যন্ত এটি স্থগিত করেছি। আশা করি শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’