আতঙ্ক ও অস্থিরতা দূর করতে যা খাবেন

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৩ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে
পুষ্টি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নওরিন মাহ্ফুজ জানাচ্ছেন— আমাদের শরীরে ভিটামিন ডির বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে মানসিক চাপ, আতঙ্ক-অস্থিরতাসহ বেশ কিছু সমস্যার সমাধান মেলে।

তিনি জানান, সরাসরি সূর্যের আলোতে আমাদের শরীর প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করে। তবে কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও সাপ্লিমেন্ট থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ

১. চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি রয়েছে।

২. হাড়, পেশিতে দুর্বলতা এবং ব্যথা, অস্থিসন্ধির বিকৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।

৩. শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ-আতঙ্ক দেখা দিতে পারে, যা ঘনঘন মেজাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

৪. স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে, ভালোভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আপনি অলস এবং ক্লান্তবোধ করেন, তবে বুঝতে হবে, আপনার ভিটামিন ডি-র অভাব রয়েছে।

৫. অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়াকেও  ভিটামিন ডি-র ঘাটতি বলে মনে করা হয়। কিংবা হঠাৎ ওজন কমতে থাকা, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়ার পরও ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণও ভিটামিন ডি-র অভাব হতে পারে।

৭. থাইরয়েডে সমস্যা, মেরুদণ্ডের ব্যথা ও অসময়ে দাঁত পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব হলে।

৮. ভিটামিন ডি-র অত্যাবশ্যকীয় অভাবে পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যেতে পারে। এ ছাড়াও গাঁটে ব্যথা এবং বৃদ্ধরা বাতের সমস্যায় ভোগেন।

৯. শিশুদের রিকেট রোগ, বড়দের অস্টিওমিলেশিয়া এবং বয়স্কদের হাড়জনিত ক্ষয় রোগের বড় কারণ ভিটামিন ডি।

যেসব খাবারে মিলবে ভিটামিন ডি

১. ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে প্রথমেই যে খাবারটির কথা বলা যায় সেটি হলো ডিম। এটি ভিটামিন ডি-র একটি উৎকৃষ্ট উৎস।

২. দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। খাবারের ছয়টি উপাদানের পাশাপাশি গরুর দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. সহজে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণে ডায়েটে রাখতে পারেন দইও। পেটের সুরক্ষায় আর গরম থেকে স্বস্তি পেতে নিয়মিত শিশুকে দই খাওয়ানো উচিত।

৪. ভিটামিন ডি-র জন্য প্রতিদিন একটি কমলাও খেতে পারেন। এতে একই সঙ্গে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

৫. অতি বেগুনি রশ্মিতে রাখলে মাশরুম ভিটামিন ডি তৈরি করে। এটি একমাত্র অপ্রাণিজ খাদ্য যেখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি মেলে।

৬. ফ্যাটি ফিশ যেমন: টুনা, ম্যাকরেল, স্যালমন সামুদ্রিক জাতীয় মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে।

৭. কড লিভার অয়েল বা মাছের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণ করার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ রাখে আপনার হার্টকেও।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আতঙ্ক ও অস্থিরতা দূর করতে যা খাবেন

আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৩ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
পুষ্টি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নওরিন মাহ্ফুজ জানাচ্ছেন— আমাদের শরীরে ভিটামিন ডির বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে মানসিক চাপ, আতঙ্ক-অস্থিরতাসহ বেশ কিছু সমস্যার সমাধান মেলে।

তিনি জানান, সরাসরি সূর্যের আলোতে আমাদের শরীর প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করে। তবে কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও সাপ্লিমেন্ট থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ

১. চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি রয়েছে।

২. হাড়, পেশিতে দুর্বলতা এবং ব্যথা, অস্থিসন্ধির বিকৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।

৩. শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ-আতঙ্ক দেখা দিতে পারে, যা ঘনঘন মেজাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

৪. স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে, ভালোভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আপনি অলস এবং ক্লান্তবোধ করেন, তবে বুঝতে হবে, আপনার ভিটামিন ডি-র অভাব রয়েছে।

৫. অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়াকেও  ভিটামিন ডি-র ঘাটতি বলে মনে করা হয়। কিংবা হঠাৎ ওজন কমতে থাকা, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়ার পরও ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণও ভিটামিন ডি-র অভাব হতে পারে।

৭. থাইরয়েডে সমস্যা, মেরুদণ্ডের ব্যথা ও অসময়ে দাঁত পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব হলে।

৮. ভিটামিন ডি-র অত্যাবশ্যকীয় অভাবে পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যেতে পারে। এ ছাড়াও গাঁটে ব্যথা এবং বৃদ্ধরা বাতের সমস্যায় ভোগেন।

৯. শিশুদের রিকেট রোগ, বড়দের অস্টিওমিলেশিয়া এবং বয়স্কদের হাড়জনিত ক্ষয় রোগের বড় কারণ ভিটামিন ডি।

যেসব খাবারে মিলবে ভিটামিন ডি

১. ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে প্রথমেই যে খাবারটির কথা বলা যায় সেটি হলো ডিম। এটি ভিটামিন ডি-র একটি উৎকৃষ্ট উৎস।

২. দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। খাবারের ছয়টি উপাদানের পাশাপাশি গরুর দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. সহজে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণে ডায়েটে রাখতে পারেন দইও। পেটের সুরক্ষায় আর গরম থেকে স্বস্তি পেতে নিয়মিত শিশুকে দই খাওয়ানো উচিত।

৪. ভিটামিন ডি-র জন্য প্রতিদিন একটি কমলাও খেতে পারেন। এতে একই সঙ্গে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

৫. অতি বেগুনি রশ্মিতে রাখলে মাশরুম ভিটামিন ডি তৈরি করে। এটি একমাত্র অপ্রাণিজ খাদ্য যেখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি মেলে।

৬. ফ্যাটি ফিশ যেমন: টুনা, ম্যাকরেল, স্যালমন সামুদ্রিক জাতীয় মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে।

৭. কড লিভার অয়েল বা মাছের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণ করার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ রাখে আপনার হার্টকেও।