পাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন বিকর্ণ দাশ দিব্য ও প্রণয় কুণ্ডু।
রবিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘শুক্রবার (১৪ মার্চ) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তাদের বিভাগ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। তবে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা প্রশাসনের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি।
এরপর আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
এ ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার রাতে, যখন বিকর্ণ দাশ দিব্য ও প্রণয় কুণ্ডুর ফেসবুক পোস্ট এবং মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান।
এদিকে, শনিবার রাতে ফার্মেসি বিভাগের সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের মেসেঞ্জার গ্রুপের কিছু কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফাঁস হলে বিষয়টি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই গ্রুপের কয়েকজন সদস্য ধর্ম অবমাননামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বিদ্যুৎ সরকার, সুবর্ণা সরকার (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), দীপু বিশ্বাস (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), তনয় সরকার (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) ও অংকন ঘোষ (২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ)।
এই ঘটনার পর রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীর বহিষ্কার দাবি করেন। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে অবস্থান নেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, অভিযুক্ত সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে ঘোষণা দেন যে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ফার্মেসি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন সিদ্ধান্ত জানাবে। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।