সকল জায়গায় নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে “আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই; ফাঁসি চাই, মাগুরায় ধর্ষণের অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই; আশ্বাস নয় আইনের বাস্তবায়ন চাই; আমি মেয়ে আমি অবহেলিত; ধর্ষক সমাজের ঘুণ পোকা আর ধর্ষণ হলো ব্যাধি” ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা তো কমছেই না, বরং তা বেড়েই চলেছে। এমনকি বৃদ্ধ ও শিশুরাও ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। আবার ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের মতো ঘটনাও ঘটছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেখছি না। আমাদের আট বছরের শিশু বোন মাগুরা শহরে ধর্ষণের শিকার। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। একজনকে জনসম্মুখে শাস্তি দিলে হয়তো সবাই সচেতন হবে বলে আশাবাদী। বর্তমান সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা মাঠে নামতে বাধ্য হবে।
মানববনন্ধনে সহ-সমন্বয়ক ইয়াসুর কবির বলেন, যদি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে কোনো প্রভাব বিস্তার ছাড়া ধর্ষকদের প্রকাশে শাস্তি দেওয়া হতো তাহলে হয়তো আজকে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের মতো পরিস্থিতির স্বীকার হতে হতো না। দেশে প্রতিটি জায়গায় যেন নারীরা নির্বিচারে চলাফেরা করতে পারে সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি যারা নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত তাদের ব্যবহার ভদ্র এবং নম্র হতে হবে। পরিশেষে যথাযথ আইনের সংস্কার করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া এখনো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে । গত ৫ বছরে প্রায় ৬ হাজারের অধিক ধর্ষণের ফাইল ডকুমেন্টস হয়েছে। ডকুমেন্টের বাইরেও অনেক ভুক্তভোগী আছে যারা নিজের আত্মসম্মানের জন্য মামলা দায়ের করে না। জুলাই বিল্পবে নারীরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। যদি ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমাদের জুলাই বিল্পব ব্যাহত হবে। কেউ যদি ধর্ষণ করে তাহলে তার একটাই শাস্তি তা হলো মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। অতিদ্রুত যদি এসব ধর্ষণের বিচার করা না হয় তাহলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে এবারই প্রথম অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নারী দিবস হিসেবে পালন করতেছি। সরকারকে অনুরোধ করছি ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার জন্য। আন্দোলনে আমাদের বোনেরা সাহস জুগিয়েছিল এখন তাদেরকে যদি নিরাপত্তা দিতে না পারি তাহলে আন্দোলন ব্যাহত হবে। মাগুরা যে ঘটনাটি ঘটেছে প্রয়োজনে দেশের বাহিরে হলেও উন্নত মানের চিকিৎসা দিতে হবে। বর্তমান বিচারহীনতার যে উদাসীনতা চলতেছে তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নয়তো শিক্ষার্থীরা আবারও নিজের অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে নামবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরা শহরে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসা আট বছরের এক শিশু (আছিয়া) ধর্ষণের শিকার হয়। পরের দিন সকালে অচেতন অবস্থায় প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো জীবননাশের আশঙ্কায় আছে বলে জানা যায়।