শিরোনাম :
Logo ভেড়ামারায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার Logo বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে আটক ৪৪৮ জন Logo ফ্রান্সে ভয়াবহ দাবানল, আহত শতাধিক মানুষ Logo জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা Logo বীরগঞ্জে দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অনিয়ম, ৬০ হাজার টাকা জরিমানা Logo দিনমজুরি করেও স্বপ্ন দেখেছে আইনজীবী হওয়ার, পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পেয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হলেও পড়ালেখার ভবিষ্যৎ টাকার অভাবে অনিশ্চিৎ Logo কুবিতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপনের দায়িত্বে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাকর্মীরা! Logo মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা Logo সুপারস্টার ডি এ তায়েব অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী” শিশু শিল্পী টুনটুনির জন্মদিন উদযাপন Logo রাবিতে ডাইনিং সংকটসহ ৫ দফা দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমছে নিম্নাঞ্চলে ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:১৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
  • ৭৫৯ বার পড়া হয়েছে

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

কমছে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতঘর বাড়ি, ফসলিজমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৮৩ হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি, রাস্তা ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাঁত কারখানা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।

একই সঙ্গে চর ও নিম্নাঞ্চলের ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। দেখা দিচ্ছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড়, শাহজাদপুর উপজেলার হাট-পাঁচিল, জালালপুর ও কৈজুরীতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে বসতবাড়ি, বহুতল ভবন, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশের বিভিন্ন দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।

জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের বেলুটিয়া গ্রামের লাইলী খাতুন  বলেন, ঘরের মধ্যে বুক পানি। যাওয়ার উপায় নাই। ঘর ধসে পড়ছে। ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে বিপদে আছে। রান্না করার জায়গা নাই। কি খাই না খাই দেখার কেউ নাই। চেয়ারম্যান মেম্বরের খোঁজ খবর নাই।

একই গ্রামের  গফুর মোল্লা বলেন, এত পানি বাড়ি যাওয়া যাচ্ছে না। ঘরের সব কিছু তলাইয়া গেছে। খেয়ে না খেয়ে জীবন চলছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিছি। কাম কাজ বন্ধ। কি খাবো কেউ খোঁজ খবর নেয় না। গরু-ছাগল নিয়েও বিপদে আছি। পাট, তীল পানিতে তলাইয়া গেছে। চারিদিকে শুধু বিপদ।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করেছে। এবং ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর  বলেন, বন্যার পানিতে জেলার ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনই ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা ইতোমধ্যেই তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আমাদের আরও যথেষ্ট পরিমান খাদ্য মজুদ আছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমছে নিম্নাঞ্চলে ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:১৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

কমছে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতঘর বাড়ি, ফসলিজমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৮৩ হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি, রাস্তা ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাঁত কারখানা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।

একই সঙ্গে চর ও নিম্নাঞ্চলের ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। দেখা দিচ্ছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড়, শাহজাদপুর উপজেলার হাট-পাঁচিল, জালালপুর ও কৈজুরীতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে বসতবাড়ি, বহুতল ভবন, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশের বিভিন্ন দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।

জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের বেলুটিয়া গ্রামের লাইলী খাতুন  বলেন, ঘরের মধ্যে বুক পানি। যাওয়ার উপায় নাই। ঘর ধসে পড়ছে। ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে বিপদে আছে। রান্না করার জায়গা নাই। কি খাই না খাই দেখার কেউ নাই। চেয়ারম্যান মেম্বরের খোঁজ খবর নাই।

একই গ্রামের  গফুর মোল্লা বলেন, এত পানি বাড়ি যাওয়া যাচ্ছে না। ঘরের সব কিছু তলাইয়া গেছে। খেয়ে না খেয়ে জীবন চলছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিছি। কাম কাজ বন্ধ। কি খাবো কেউ খোঁজ খবর নেয় না। গরু-ছাগল নিয়েও বিপদে আছি। পাট, তীল পানিতে তলাইয়া গেছে। চারিদিকে শুধু বিপদ।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করেছে। এবং ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর  বলেন, বন্যার পানিতে জেলার ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনই ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা ইতোমধ্যেই তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আমাদের আরও যথেষ্ট পরিমান খাদ্য মজুদ আছে।