নিউজ ডেস্ক:
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি দেশ ও দেশের বাইরের একটি শক্তিশালী চক্রের সমন্বয়ে হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার তদারককারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, ‘চুরির সময় কেউ সিস্টেম দুর্বল করেছেন, কেউ ভুয়া অ্যাকাউন্ট করেছেন। ফিল্ড অপারেটিভদের হাত ঘুরে মূল হোতাদের হাতে টাকা পৌঁছানোর সব প্রক্রিয়াও চিহ্নিত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা চুরি করেছে, ফিলিপাইনে ও শ্রীলঙ্কায় তাদের সঙ্গে লিঙ্কটা কী, তা আমরা খুঁজে পাব। একই সঙ্গে মূল হোতা কারা তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। একটি পরিপূর্ণ প্রতিবেদন তৈরি করতে এবং বিদেশিদের শনাক্ত করতে একটু সময় লাগছে। এ কারণে প্রতিবেদন কবে দেওয়া যাবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পর তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগসহ দুটি বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার কম্পিউটারের ডাটা সংগ্রহ করা হয়। এদের অনেকের কাছ থেকে তথ্যও নেওয়া হয়। ব্যাংকে কর্মরত এরকম আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই এদের ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে। তবে তারা যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদের সঙ্গে আবার বাইরের দুই থেকে তিনজন আইটি বিশেষজ্ঞও কাজ করেছেন হ্যাকারদের সহযোগিতায়। তবে বিদেশি কারা জড়িত তাদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। ঘটনার বড় একটি অংশের তদন্ত বিদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। তারা এসব লোককে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। তবে রোববার পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে বিদেশিদের নাম জানা গেলেও এখনো কোনো সংস্থা থেকে বিস্তারিত জানানো হয়নি। বিদেশের জন্যই মূলত প্রতিবেদন তৈরি করতে দেরি হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত বছরের জানুয়ারির শেষদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটারের নানা সিস্টেম দুর্বল করে দেওয়া হয়। এ কারণে বাইরে থেকে হ্যাকাররা সহেজই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে এবং টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়। এজন্য বেশ কিছু নতুন নতুন প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়। যা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি হয়। অনেক দিন ঘটনাটি গোপন থাকলেও ফিলিপাইনের একটি গণমাধ্যমে প্রথম এ খবর আসে। এর পরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। শুরু হয় তদন্ত। ১৫ মার্চ অজ্ঞাত হ্যাকারদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।