কে হচ্ছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:৫২:৫৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেক্সঃ

ব্রিটেনে জাতীয় নির্বাচন আজ। সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব কমন্স’-এর ৬৫০ আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। এসব আসনে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ৯ রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখন পর্যন্ত এটাই রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী।

এর মধ্যে ৩৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন যাদের ৯ জন নারী। বাংলাদেশি পুরনো মুখের সঙ্গে নতুন মুখ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা। মুসলিম অধ্যুষিত নির্বাচনি এলাকাগুলোয় গাজা ইস্যু নিয়ে ভোট ভাগ হলেও নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। বিতর্কের শুরু লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণকে কেন্দ্র করে। তবে সেই বাংলাদেশই এখন নির্বাচনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অভিবাসী নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায় অন্যতম বড় আলোচনার বিষয়। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে অবৈধভাবে আসার তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম ২০ দেশের মধ্যেও নেই।

তারপরও কিয়ার স্টারমার বলেছেন, বাংলাদেশের মতো নিরাপদ দেশ থেকে এসে অবৈধ হওয়াদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। অভিবাসী নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা এ নির্বাচনে অন্যতম বড় তুরুপের তাস। কনজারভেটিভ পার্টি জিতলে রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে আর লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে সেই রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাতিল হবে। এ ছাড়া কনজারভেটিভ ঘোষিত স্বামী বা স্ত্রী আনার ক্ষেত্রে যে ২৯ হাজার পাউন্ড বেতন করা হয়েছে যেটা আগামী জানুয়ারিতে ৩৮ হাজার করার পরিকল্পনা সেটা ২৯ হাজারেই রাখবে লেবার পার্টি। এ ছাড়া অবৈধদের শনাক্ত করে তৃতীয় কোনো দেশে না পাঠিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চিন্তা করছে লেবার পার্টি।

এদিকে ব্রেক্সিট ও কভিডে ভয়াবহ অর্থনীতির পতন ঘটে ব্রিটেনের। তার ওপর আবার লিজ ট্রাসের স্বপ্নবিলাসী বাজেটের কারণে রাতারাতি ধস নামে বিশ্বের অন্যতম অর্থনীতির শক্তিশালী দেশ ব্রিটেনের। মুদ্রাস্ফীতি ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সেই জায়গা থেকে দেড় বছরে অর্থনীতি একটা সম্মানজনক জায়গায় এনেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। মূলত এই কারণেই তিনি আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশ কমে ২.৩ শতাংশ হয়েছে। সেটা নিজের সাফল্য ধরলেও লেবার পার্টি বলছে তারা কর কমিয়ে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করে অর্থনীতির চাকা সচল করবে। যারাই সরকার গঠন করবে তাদের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে দেশের অর্থনীতির হারানো শক্তি ফিরিয়ে আনা। কভিডে ব্রিটেনে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। লাখ লাখ মানুষ মারা যান, হাসপাতালে তৈরি হয় বিশাল জট। এখনো সেই চিকিৎসা জট থেকে বের হতে পারেনি দেশের স্বাস্থ্য খাত। একই সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতাল স্টাফদের বেতন বৃদ্ধি, কর্মঘণ্টা কমানো এবং নতুন লোকবল নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে দেশে। লেবার পার্টি বলছে, এনএইচএস (ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস)-কে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে হবে। তারা ওয়েটিং টাইম কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছে তাদের নির্বাচনি প্রচারণায়। এদিকে কনজারভেটিভও বলছে তারা এনএইচএসে রোগীদের অপেক্ষার তালিকা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করবে।

দুই দলই এনএইচএসকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে। এদিকে সব জরিপে এগিয়ে আছে লেবার পার্টি। ইউগোভ বলছে, মেজরিটি নিয়ে লেবার ক্ষমতায় যাবে। আর কনজারভেটিভ পাবে মাত্র ৫৫ আসন। এদিকে সাভান্থা জরিপে নিজ আসনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কনজারভেটিভ দলনেতা সুনাক। আগের সব জরিপ যদি সঠিক হয় তাহলে ১৪ বছর পর ব্রিটেনে ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। আর সেটি হলে নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ আছেন স্যার কিয়ার স্টারমার।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ৬ জনকে অব্যাহতি

কে হচ্ছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:৫২:৫৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেক্সঃ

ব্রিটেনে জাতীয় নির্বাচন আজ। সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব কমন্স’-এর ৬৫০ আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। এসব আসনে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ৯ রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখন পর্যন্ত এটাই রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী।

এর মধ্যে ৩৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন যাদের ৯ জন নারী। বাংলাদেশি পুরনো মুখের সঙ্গে নতুন মুখ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা। মুসলিম অধ্যুষিত নির্বাচনি এলাকাগুলোয় গাজা ইস্যু নিয়ে ভোট ভাগ হলেও নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। বিতর্কের শুরু লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণকে কেন্দ্র করে। তবে সেই বাংলাদেশই এখন নির্বাচনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অভিবাসী নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায় অন্যতম বড় আলোচনার বিষয়। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে অবৈধভাবে আসার তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম ২০ দেশের মধ্যেও নেই।

তারপরও কিয়ার স্টারমার বলেছেন, বাংলাদেশের মতো নিরাপদ দেশ থেকে এসে অবৈধ হওয়াদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। অভিবাসী নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা এ নির্বাচনে অন্যতম বড় তুরুপের তাস। কনজারভেটিভ পার্টি জিতলে রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে আর লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে সেই রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাতিল হবে। এ ছাড়া কনজারভেটিভ ঘোষিত স্বামী বা স্ত্রী আনার ক্ষেত্রে যে ২৯ হাজার পাউন্ড বেতন করা হয়েছে যেটা আগামী জানুয়ারিতে ৩৮ হাজার করার পরিকল্পনা সেটা ২৯ হাজারেই রাখবে লেবার পার্টি। এ ছাড়া অবৈধদের শনাক্ত করে তৃতীয় কোনো দেশে না পাঠিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চিন্তা করছে লেবার পার্টি।

এদিকে ব্রেক্সিট ও কভিডে ভয়াবহ অর্থনীতির পতন ঘটে ব্রিটেনের। তার ওপর আবার লিজ ট্রাসের স্বপ্নবিলাসী বাজেটের কারণে রাতারাতি ধস নামে বিশ্বের অন্যতম অর্থনীতির শক্তিশালী দেশ ব্রিটেনের। মুদ্রাস্ফীতি ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সেই জায়গা থেকে দেড় বছরে অর্থনীতি একটা সম্মানজনক জায়গায় এনেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। মূলত এই কারণেই তিনি আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশ কমে ২.৩ শতাংশ হয়েছে। সেটা নিজের সাফল্য ধরলেও লেবার পার্টি বলছে তারা কর কমিয়ে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করে অর্থনীতির চাকা সচল করবে। যারাই সরকার গঠন করবে তাদের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে দেশের অর্থনীতির হারানো শক্তি ফিরিয়ে আনা। কভিডে ব্রিটেনে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। লাখ লাখ মানুষ মারা যান, হাসপাতালে তৈরি হয় বিশাল জট। এখনো সেই চিকিৎসা জট থেকে বের হতে পারেনি দেশের স্বাস্থ্য খাত। একই সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতাল স্টাফদের বেতন বৃদ্ধি, কর্মঘণ্টা কমানো এবং নতুন লোকবল নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে দেশে। লেবার পার্টি বলছে, এনএইচএস (ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস)-কে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে হবে। তারা ওয়েটিং টাইম কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছে তাদের নির্বাচনি প্রচারণায়। এদিকে কনজারভেটিভও বলছে তারা এনএইচএসে রোগীদের অপেক্ষার তালিকা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করবে।

দুই দলই এনএইচএসকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে। এদিকে সব জরিপে এগিয়ে আছে লেবার পার্টি। ইউগোভ বলছে, মেজরিটি নিয়ে লেবার ক্ষমতায় যাবে। আর কনজারভেটিভ পাবে মাত্র ৫৫ আসন। এদিকে সাভান্থা জরিপে নিজ আসনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কনজারভেটিভ দলনেতা সুনাক। আগের সব জরিপ যদি সঠিক হয় তাহলে ১৪ বছর পর ব্রিটেনে ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। আর সেটি হলে নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ আছেন স্যার কিয়ার স্টারমার।