শিরোনাম :
Logo দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড এবং চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিবাদ Logo উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল Logo কচুয়ায় বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরন ও মিছিল Logo চাঁদপুরে খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল তারবিয়াত অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর জেলা বিজেপি’র জেলা কমিটি গঠনকল্পে সমন্বয় সভা আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশে সুস্থধারার রাজনীতির দিকপাল ………উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ Logo কুষ্টিয়ায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ৬ জনকে অব্যাহতি

কেয়ামতের আগে মরুভূমিতে যে আলামত প্রকাশ পাবে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১২:১৩:৫৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • ৭২৯ বার পড়া হয়েছে

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সুরা কামারের প্রথম আয়াতে বলেছেন, ‘কেয়ামত সন্নিকটে’। কোরআনে আরও বর্ণিত হয়েছে, তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ -(সুরা মুহাম্মদ: ১৮)

নবীজি সা. কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহুর্তের বেশ কিছু আলামতের কথা বলেছেন। এই আলামতগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ও ভয়াবহ হলো দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটা। দাজ্জাল কেয়ামতের ৪০ দিন আগে পৃথিবীতে আসবে এবং মানুষকে বিপথগামী করতে সবধরনের চেষ্টা চালাবে।

দাজ্জালের আবির্ভাবের বিষয়টি কোরআন-হাদিস সমর্থিত। সে মিথ্যা জান্নাত-জাহান্নামের চিত্র দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। হাদিসের বর্ণনামতে, ‘দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয়, দাজ্জালের চলার গতিও সেরকম হবে।’(মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

এছাড়াও কেয়ামতের আলামতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরেকটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে ভরপুর।

হজরত আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২২২৯)

হাদিস বিশারদদের মতে, মহানবী (সা.)-এর হাদিস দ্বারা শুধু বর্তমান সৌদি আরব উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। শুধু সৌদ রাষ্ট্রকে নয়। আরব উপদ্বীপকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত হয়েছে।

আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল-কাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর), ইয়েমেন ও ওমান।

কেয়ামতের বড় আলামত

রাসুলুল্লাহ (স.) কেয়ামতের যেসব আলামতের বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্যে বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা (আ.) এর আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। -(সহিহ জামে আস্-সগীর: ৭৭৫২)।

ছোট আলামত

এছাড়াও কেয়ামতের ছোট ছোট অনেক আলামত রয়েছে, যেমন—প্রচুর ধন-সম্পদ হওয়া এবং জাকাত খাওয়ার লোক না-থাকা, নানারকম গোলযোগ (ফিতনা) সৃষ্টি হওয়া, আমানতদারিতা না-থাকা, ইলম উঠিয়ে নেওয়া ও অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করা, সুদ-ব্যভিচার-মদ-বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপকতা, রাখাল শ্রেণির অট্টালিকা নির্মাণ, কৃতদাসী কর্তৃক স্বীয় মনিবকে প্রসব, মা-বাবার অবাধ্যতা, হত্যা, বেশি ভূমিকম্প হওয়া, মানুষের আকৃতি রূপান্তর, আকাশ থেকে পাথর পড়া, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য বেড়ে যাওয়া, নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া, ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীতে স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাওয়া, হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলা ইত্যাদি। ( বুখারী, ৭১১৫; মুসলিম, ১৫৭; মিশকাত, ৫৪১০, বুখারী, ৫৬৭১)

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড এবং চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিবাদ

কেয়ামতের আগে মরুভূমিতে যে আলামত প্রকাশ পাবে

আপডেট সময় : ১২:১৩:৫৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সুরা কামারের প্রথম আয়াতে বলেছেন, ‘কেয়ামত সন্নিকটে’। কোরআনে আরও বর্ণিত হয়েছে, তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ -(সুরা মুহাম্মদ: ১৮)

নবীজি সা. কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহুর্তের বেশ কিছু আলামতের কথা বলেছেন। এই আলামতগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ও ভয়াবহ হলো দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটা। দাজ্জাল কেয়ামতের ৪০ দিন আগে পৃথিবীতে আসবে এবং মানুষকে বিপথগামী করতে সবধরনের চেষ্টা চালাবে।

দাজ্জালের আবির্ভাবের বিষয়টি কোরআন-হাদিস সমর্থিত। সে মিথ্যা জান্নাত-জাহান্নামের চিত্র দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। হাদিসের বর্ণনামতে, ‘দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয়, দাজ্জালের চলার গতিও সেরকম হবে।’(মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

এছাড়াও কেয়ামতের আলামতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরেকটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে ভরপুর।

হজরত আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২২২৯)

হাদিস বিশারদদের মতে, মহানবী (সা.)-এর হাদিস দ্বারা শুধু বর্তমান সৌদি আরব উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। শুধু সৌদ রাষ্ট্রকে নয়। আরব উপদ্বীপকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত হয়েছে।

আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল-কাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর), ইয়েমেন ও ওমান।

কেয়ামতের বড় আলামত

রাসুলুল্লাহ (স.) কেয়ামতের যেসব আলামতের বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্যে বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা (আ.) এর আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। -(সহিহ জামে আস্-সগীর: ৭৭৫২)।

ছোট আলামত

এছাড়াও কেয়ামতের ছোট ছোট অনেক আলামত রয়েছে, যেমন—প্রচুর ধন-সম্পদ হওয়া এবং জাকাত খাওয়ার লোক না-থাকা, নানারকম গোলযোগ (ফিতনা) সৃষ্টি হওয়া, আমানতদারিতা না-থাকা, ইলম উঠিয়ে নেওয়া ও অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করা, সুদ-ব্যভিচার-মদ-বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপকতা, রাখাল শ্রেণির অট্টালিকা নির্মাণ, কৃতদাসী কর্তৃক স্বীয় মনিবকে প্রসব, মা-বাবার অবাধ্যতা, হত্যা, বেশি ভূমিকম্প হওয়া, মানুষের আকৃতি রূপান্তর, আকাশ থেকে পাথর পড়া, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য বেড়ে যাওয়া, নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া, ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীতে স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাওয়া, হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলা ইত্যাদি। ( বুখারী, ৭১১৫; মুসলিম, ১৫৭; মিশকাত, ৫৪১০, বুখারী, ৫৬৭১)