শিরোনাম :
Logo সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে : সেনাপ্রধান Logo জীবননগরের উথলীতে আবারও রেললাইনে ফাটল, তবে স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন চলাচল Logo Alpha connect day প্রতিযোগিতায় দেশসেরা জাককানইবির আশরাফুল ইসলাম Logo চাঁদপুর জেলা পুলিশের সফল অভিযান; গত ৩ মাসে ১০৩ জন কিশোর গ্যাং ও ডাকাত আটক Logo শেরপুরে ৫ দফা দাবিতে মউশিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান Logo চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের আলোচনা ও ইফতার মাহফিল Logo ইসবগুল যেভাবে খেলে বেশি উপকার মেলে Logo জিহ্বা দেখেই বুঝে নিন শরীরে কোন রোগ বাসা বেঁধেছে Logo ঈদ উদযাপনে পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা আসিফ মাহমুদ এর Logo মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে এলো জাহাজভর্তি মাটিমিশ্রিত কয়লার চালান

অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ধান ও আলুর ৫ জাত !

  • আপডেট সময় : ০৬:২২:০৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৫৭ বার পড়া হয়েছে

N D  : কয়েক বছর ধরেই দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে জোর দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে এবার অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ধান ও আলুর পাঁচটি জাত। এসব নতুন জাত অনুমোদন দেবে জাতীয় বীজ বোর্ড। একই সঙ্গে আমদানি করা হাইব্রিড জাতের ১১টি জাতও ছাড় করা হবে।

 

বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব জাত আমন মৌসুমে চাষের এবং দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী।

 

বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির উপ-পরিচালক (মান নিয়ন্ত্রয়ণ) কৃষিবীদ মো. নাসির উদ্দীন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আগামীকাল রোববার এসব জাতের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এরই মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।’

 

জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণ করতে লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা ও রোদসহিষ্ণু জাত নির্বাচন করছে মন্ত্রণালয়। এজন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণালব্ধ বিভিন্ন জাত ছাড় করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে নতুন তিনটি ধানসহ দুটি আলুর জাত অনুমোদন দেবে জাতীয় বীজ বোর্ড।

 

ধানের যে তিনটি জাত ছাড় হচ্ছে তা হলো- ব্রি-৭৮, বিইউ ধান-২ এবং বিনা ধান-১। আলুর জাত দুটি হলো বারি-৭২ ও বারি-৭৩ জাতের আলু। এর মধ্যে ব্রি-৭৮ ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এ জাতটি আমন মৌসুমে চাষের উপযোগী। এ ছাড়া বিইউ ধান-২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এবং বিনা ধান-১ বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত।

 

আলুর জাত দুটি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এর বাইরে একই দিন আমদানি করা হাইব্রিড জাতের ১১টি জাতও ছাড় করা হবে। এসব জাতই দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এতদিন দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা উপযোগী ধানের উপযোগী জাতের গবেষণা ও ছাড় করা হতো। এবার নতুন জাতের আলু উদ্ভাবনে মনোযোগ দিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এসব জাত ছাড় করা হচ্ছে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান বীজ কর্মকর্তা মো. আজিম উদ্দিন জানান, এখন বীজ ছাড় করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। কম জমিতে বেশি ফলন ও দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি সম্প্রারণে সরকারের যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে- এ দুটি বিষয় মাথায় রেখেই গবেষণা ও বীজ ছাড় করা হবে।

 

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের খাদ্যভাণ্ডার খ্যাত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। নতুন করে আরো বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দেশে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে আগামীতে বেশি খাদ্যের প্রয়োজন। সে কথা চিন্তা করেই সরকার তুলনামূলক কম চাষাবাদ ও ফলন কম- এ রকম এলাকায় নিবিড় চাষের পরিকল্পনা শুরু করে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এবং বেসরকারি খাত ও সুশীলসমাজের মতামত নিয়ে এফএওর কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি উন্নয়নের জন্য ২০১৩ সালে এক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে।

 

মহাপরিকল্পনার আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের ১৪ জেলা- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ মহাপরিকল্পনায় বৃহৎ আকারে পাঁচটি বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

এগুলো হচ্ছে- কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে জমির উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন, ভূউপরিস্থ পানি কৃষি সেচে ব্যবহার এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি ও গরুর খামার স্থাপনে সহায়তা করা।

 

দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে যেসব খাতভিত্তিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- শস্য, বনায়ন ও কৃষিপণ্য উৎপাদন, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু, পুষ্টি, পানি ব্যবস্থাপনা, বাঁধ ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন, কৃষিভিত্তিক ব্যবসা, কৃষিঋণ ও দক্ষতা উন্নয়ন করা। এসব বিষয় মাথায় রেখেই কৃষি মন্ত্রণালয় নতুন নতুন ফসলের জাত ছাড় করছে।

 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে : সেনাপ্রধান

অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ধান ও আলুর ৫ জাত !

আপডেট সময় : ০৬:২২:০৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

N D  : কয়েক বছর ধরেই দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে জোর দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে এবার অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ধান ও আলুর পাঁচটি জাত। এসব নতুন জাত অনুমোদন দেবে জাতীয় বীজ বোর্ড। একই সঙ্গে আমদানি করা হাইব্রিড জাতের ১১টি জাতও ছাড় করা হবে।

 

বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব জাত আমন মৌসুমে চাষের এবং দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী।

 

বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির উপ-পরিচালক (মান নিয়ন্ত্রয়ণ) কৃষিবীদ মো. নাসির উদ্দীন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আগামীকাল রোববার এসব জাতের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এরই মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।’

 

জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণ করতে লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা ও রোদসহিষ্ণু জাত নির্বাচন করছে মন্ত্রণালয়। এজন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণালব্ধ বিভিন্ন জাত ছাড় করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে নতুন তিনটি ধানসহ দুটি আলুর জাত অনুমোদন দেবে জাতীয় বীজ বোর্ড।

 

ধানের যে তিনটি জাত ছাড় হচ্ছে তা হলো- ব্রি-৭৮, বিইউ ধান-২ এবং বিনা ধান-১। আলুর জাত দুটি হলো বারি-৭২ ও বারি-৭৩ জাতের আলু। এর মধ্যে ব্রি-৭৮ ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এ জাতটি আমন মৌসুমে চাষের উপযোগী। এ ছাড়া বিইউ ধান-২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এবং বিনা ধান-১ বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত।

 

আলুর জাত দুটি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এর বাইরে একই দিন আমদানি করা হাইব্রিড জাতের ১১টি জাতও ছাড় করা হবে। এসব জাতই দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এতদিন দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা উপযোগী ধানের উপযোগী জাতের গবেষণা ও ছাড় করা হতো। এবার নতুন জাতের আলু উদ্ভাবনে মনোযোগ দিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এসব জাত ছাড় করা হচ্ছে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান বীজ কর্মকর্তা মো. আজিম উদ্দিন জানান, এখন বীজ ছাড় করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। কম জমিতে বেশি ফলন ও দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি সম্প্রারণে সরকারের যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে- এ দুটি বিষয় মাথায় রেখেই গবেষণা ও বীজ ছাড় করা হবে।

 

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের খাদ্যভাণ্ডার খ্যাত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। নতুন করে আরো বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দেশে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে আগামীতে বেশি খাদ্যের প্রয়োজন। সে কথা চিন্তা করেই সরকার তুলনামূলক কম চাষাবাদ ও ফলন কম- এ রকম এলাকায় নিবিড় চাষের পরিকল্পনা শুরু করে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এবং বেসরকারি খাত ও সুশীলসমাজের মতামত নিয়ে এফএওর কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি উন্নয়নের জন্য ২০১৩ সালে এক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে।

 

মহাপরিকল্পনার আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের ১৪ জেলা- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ মহাপরিকল্পনায় বৃহৎ আকারে পাঁচটি বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

এগুলো হচ্ছে- কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে জমির উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন, ভূউপরিস্থ পানি কৃষি সেচে ব্যবহার এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি ও গরুর খামার স্থাপনে সহায়তা করা।

 

দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে যেসব খাতভিত্তিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- শস্য, বনায়ন ও কৃষিপণ্য উৎপাদন, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু, পুষ্টি, পানি ব্যবস্থাপনা, বাঁধ ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন, কৃষিভিত্তিক ব্যবসা, কৃষিঋণ ও দক্ষতা উন্নয়ন করা। এসব বিষয় মাথায় রেখেই কৃষি মন্ত্রণালয় নতুন নতুন ফসলের জাত ছাড় করছে।