শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল Logo বাজেট উপস্থাপনের সময় পরিবর্তন Logo কুবির সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির নিন্দা ও প্রতিবাদ Logo রোটারেক্ট ক্লাব অব এইচএসটিইউ এর নেতৃত্বে সিয়াম-নিলয় Logo চুয়াডাঙ্গায় গাফফার হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ Logo বিজিএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মাহমুদ হাসান খান বাবু জীবননগর উপজেলা বিএনপিসহ প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে অভিনন্দন Logo চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ভারতীয় নাগরিক Logo বিচারহীনতায় বাড়ছে মানব পাচার, কার্যকর উদ্যোগ নেই সরকারের6 Logo এবার নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন জামায়াত আমির

আরাকান আর্মির হাতে প্রাণ গেল মিয়ানমার জেনারেলের

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর কিয়াউকফিউ নিয়ন্ত্রণে নিতে জোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। চীনের বিনিয়োগকেন্দ্রিক এই এলাকায় চলমান সংঘর্ষে জান্তা বাহিনীর একাধিক ঘাঁটি ইতোমধ্যেই দখল করেছে বিদ্রোহীরা। তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে নিহত হয়েছেন জান্তা বাহিনীর এক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও আউং।

স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, কিয়াউকফিউ-রাম্রি সড়কের পাশে পিয়াইন সি কাই গ্রামসংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। শহরের মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই এলাকায় জান্তাদের একটি সদর দপ্তর ঘিরে ফেলেছে আরাকান আর্মি। একইসঙ্গে, চীনের তেল ও গ্যাস টার্মিনালের কাছাকাছিও লড়াইয়ের খবর মিলেছে।

এর আগে গত সোমবার (২৬ মে) আরাকান আর্মির স্নাইপার হামলায় মারা যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও আউং ও এক সেনা ক্যাপ্টেন। কিয়াও মিও আউং ১১ নম্বর ডিভিশনের একজন কৌশলবিদ ছিলেন। পরে তার মরদেহ বিশেষ বিমানে ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৪৫ বছর বয়সী কিয়াও মিও আউং কর্তব্য পালনকালে মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনের মিংগালাডন সামরিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে কিয়াউকফিউ শহর রক্ষা করতে জান্তা সরকার স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীকে একযোগে ব্যবহার করছে। তবে পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাখাইনের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইরাবতী জানিয়েছে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে নিযুক্ত চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে ড্রোন হামলায় জান্তা বাহিনীকে সহায়তা করছে। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি ইরাবতী।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকার একটি আইন প্রণয়ন করে। এতে বলা হয়, চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মিয়ানমারে অস্ত্র বহন করে তাদের বিনিয়োগ রক্ষা করতে পারবে। এর পর থেকে কিয়াউকফিউতে চীনা কর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। সেখানে চীন একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে, যার মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে সরাসরি প্রবেশাধিকার পাবে বেইজিং।
রাখাইনের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, লড়াই শহরের খুব কাছাকাছি চলে আসায় অনেক জান্তা প্রশাসক কিয়াউকফিউ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, চীনের কৌশলগত তেল ও গ্যাস পাইপলাইন কিয়াউকফিউ থেকে শুরু হয়, যা চীনের ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০২৩ সালের নভেম্বরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে তারা রাখাইন রাজ্যের ১৭ টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতোয়া অঞ্চল দখলে নিয়েছে। এখন তারা রাজ্যের রাজধানী সিত্তুই দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

জান্তা বাহিনী এর পাল্টা জবাবে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত গ্রাম ও শহরগুলোতে বিমান হামলা চালিয়ে বহু বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে। তবে চলতি বছরে রাখাইন ছাড়িয়ে মাগওয়ে, বাগো ও আয়েয়ারওয়াডি অঞ্চলেও নিজেদের প্রভাব বিস্তৃত করেছে আরাকান আর্মি।

ট্যাগস :

বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আরাকান আর্মির হাতে প্রাণ গেল মিয়ানমার জেনারেলের

আপডেট সময় : ১২:২২:৫৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর কিয়াউকফিউ নিয়ন্ত্রণে নিতে জোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। চীনের বিনিয়োগকেন্দ্রিক এই এলাকায় চলমান সংঘর্ষে জান্তা বাহিনীর একাধিক ঘাঁটি ইতোমধ্যেই দখল করেছে বিদ্রোহীরা। তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে নিহত হয়েছেন জান্তা বাহিনীর এক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও আউং।

স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, কিয়াউকফিউ-রাম্রি সড়কের পাশে পিয়াইন সি কাই গ্রামসংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। শহরের মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই এলাকায় জান্তাদের একটি সদর দপ্তর ঘিরে ফেলেছে আরাকান আর্মি। একইসঙ্গে, চীনের তেল ও গ্যাস টার্মিনালের কাছাকাছিও লড়াইয়ের খবর মিলেছে।

এর আগে গত সোমবার (২৬ মে) আরাকান আর্মির স্নাইপার হামলায় মারা যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও আউং ও এক সেনা ক্যাপ্টেন। কিয়াও মিও আউং ১১ নম্বর ডিভিশনের একজন কৌশলবিদ ছিলেন। পরে তার মরদেহ বিশেষ বিমানে ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৪৫ বছর বয়সী কিয়াও মিও আউং কর্তব্য পালনকালে মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনের মিংগালাডন সামরিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে কিয়াউকফিউ শহর রক্ষা করতে জান্তা সরকার স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীকে একযোগে ব্যবহার করছে। তবে পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাখাইনের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইরাবতী জানিয়েছে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে নিযুক্ত চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে ড্রোন হামলায় জান্তা বাহিনীকে সহায়তা করছে। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি ইরাবতী।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকার একটি আইন প্রণয়ন করে। এতে বলা হয়, চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মিয়ানমারে অস্ত্র বহন করে তাদের বিনিয়োগ রক্ষা করতে পারবে। এর পর থেকে কিয়াউকফিউতে চীনা কর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। সেখানে চীন একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে, যার মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে সরাসরি প্রবেশাধিকার পাবে বেইজিং।
রাখাইনের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, লড়াই শহরের খুব কাছাকাছি চলে আসায় অনেক জান্তা প্রশাসক কিয়াউকফিউ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, চীনের কৌশলগত তেল ও গ্যাস পাইপলাইন কিয়াউকফিউ থেকে শুরু হয়, যা চীনের ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০২৩ সালের নভেম্বরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে তারা রাখাইন রাজ্যের ১৭ টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতোয়া অঞ্চল দখলে নিয়েছে। এখন তারা রাজ্যের রাজধানী সিত্তুই দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

জান্তা বাহিনী এর পাল্টা জবাবে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত গ্রাম ও শহরগুলোতে বিমান হামলা চালিয়ে বহু বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে। তবে চলতি বছরে রাখাইন ছাড়িয়ে মাগওয়ে, বাগো ও আয়েয়ারওয়াডি অঞ্চলেও নিজেদের প্রভাব বিস্তৃত করেছে আরাকান আর্মি।