শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল Logo বাজেট উপস্থাপনের সময় পরিবর্তন Logo কুবির সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির নিন্দা ও প্রতিবাদ Logo রোটারেক্ট ক্লাব অব এইচএসটিইউ এর নেতৃত্বে সিয়াম-নিলয় Logo চুয়াডাঙ্গায় গাফফার হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ Logo বিজিএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মাহমুদ হাসান খান বাবু জীবননগর উপজেলা বিএনপিসহ প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে অভিনন্দন Logo চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ভারতীয় নাগরিক Logo বিচারহীনতায় বাড়ছে মানব পাচার, কার্যকর উদ্যোগ নেই সরকারের6 Logo এবার নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন জামায়াত আমির

গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধের শামিল: জাতিসংঘ কর্মকর্তা

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং সেখানে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়াকে ‘জোরপূর্বক অনাহার’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার। তিনি বলেছেন, গাজার মানুষেরা এখনো প্রতিদিন অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, আর ইসরায়েলের নীতির কারণেই এমনটি হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লেচার বলেন, গাজায় খাবার সীমান্তে মজুদ থাকলেও সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমরা শুনছি, ইসরায়েলি মন্ত্রীরা নিজেরাই বলছেন, গাজার জনগণের ওপর চাপ তৈরি করতেই এ বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

বিবিসি জানতে চাইলে, এটি যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ে কিনা— উত্তরে ফ্লেচার বলেন, “হ্যাঁ, এটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে আদালত। শেষ পর্যন্ত ইতিহাসই এর বিচার করবে।”

ফ্লেচার সম্প্রতি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে তার আগের এক মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, সহায়তা না পৌঁছালে ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে। পরে জাতিসংঘ এ তথ্য সংশোধন করে, এবং ফ্লেচার স্বীকার করেন যে ভাষা ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়া দরকার।

এদিকে, ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল। প্রায় তিন মাসের অবরোধের পর সীমিত পরিসরে কিছু খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয় সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে, যার জেরে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনো আটক থাকা ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্ত করতেই তারা এ অভিযান চালাচ্ছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে জীবিত রয়েছেন মাত্র ২০ জন।

সম্প্রতি ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, গাজার মানুষ যেন বুঝে নেয় যে তাদের কিছুই পাওয়ার নেই এবং তারা যেন অন্য কোথাও গিয়ে নতুন জীবন শুরু করে। এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন টম ফ্লেচার। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর উচিত এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা।”

ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বেও প্রশ্ন উঠছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস বলেন, “হামাসের বিরুদ্ধে যতটুকু প্রয়োজন, তার চেয়েও বেশি মাত্রায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।” জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎর্স বলেন, “ইসরায়েলের আসল লক্ষ্য এখন আর স্পষ্ট নয়।”

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানালে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাদের বিরুদ্ধে হামাসের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন।

 

ট্যাগস :

বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধের শামিল: জাতিসংঘ কর্মকর্তা

আপডেট সময় : ১১:০১:২৭ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং সেখানে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়াকে ‘জোরপূর্বক অনাহার’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার। তিনি বলেছেন, গাজার মানুষেরা এখনো প্রতিদিন অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, আর ইসরায়েলের নীতির কারণেই এমনটি হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লেচার বলেন, গাজায় খাবার সীমান্তে মজুদ থাকলেও সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমরা শুনছি, ইসরায়েলি মন্ত্রীরা নিজেরাই বলছেন, গাজার জনগণের ওপর চাপ তৈরি করতেই এ বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

বিবিসি জানতে চাইলে, এটি যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ে কিনা— উত্তরে ফ্লেচার বলেন, “হ্যাঁ, এটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে আদালত। শেষ পর্যন্ত ইতিহাসই এর বিচার করবে।”

ফ্লেচার সম্প্রতি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে তার আগের এক মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, সহায়তা না পৌঁছালে ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে। পরে জাতিসংঘ এ তথ্য সংশোধন করে, এবং ফ্লেচার স্বীকার করেন যে ভাষা ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়া দরকার।

এদিকে, ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল। প্রায় তিন মাসের অবরোধের পর সীমিত পরিসরে কিছু খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয় সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে, যার জেরে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনো আটক থাকা ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্ত করতেই তারা এ অভিযান চালাচ্ছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে জীবিত রয়েছেন মাত্র ২০ জন।

সম্প্রতি ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, গাজার মানুষ যেন বুঝে নেয় যে তাদের কিছুই পাওয়ার নেই এবং তারা যেন অন্য কোথাও গিয়ে নতুন জীবন শুরু করে। এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন টম ফ্লেচার। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর উচিত এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা।”

ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বেও প্রশ্ন উঠছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস বলেন, “হামাসের বিরুদ্ধে যতটুকু প্রয়োজন, তার চেয়েও বেশি মাত্রায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।” জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎর্স বলেন, “ইসরায়েলের আসল লক্ষ্য এখন আর স্পষ্ট নয়।”

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানালে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাদের বিরুদ্ধে হামাসের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন।