‘শক্তি’র ভয়ে আতঙ্কিত উপকূলবাসী

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:০৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
  • ৭১২ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। একে মোকাবিলায় ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে, আতঙ্কিত করে তুলেছে দেশের দক্ষিণ উপকূলের বাসিন্দাদের।

এদিকে সাতক্ষীরা উপজেলার গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, কাশিমাড়ী পদ্মপুকুর মুন্সিগঞ্জ রমজান নগর কৈখালী এলাকার কয়েকটি বেড়িবাঁধ অতিঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরাও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, বুড়িগোয়ালিনীর দুর্গাবাটি ও দাতিনাখালীর ৩ জায়গায় বাঁধের অবস্থা ভালো না। গত আম্ফানে জায়গাগুলো ভেঙে গিয়েছিল। পরে মেরামত করা হলেও তা পুরোপুরি ঠিক হয়নি।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন মোট ৩৮০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ ও ৩ কিলোমিটার অতি-ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ঝড়ের আভাস পেয়ে অতি-ঝুঁকিপূর্ণ ৩ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা চলছে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সানাউল ইসলামের ভাষ্য, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মাটির ধরন অন্য এলাকার থেকে ভিন্ন। বাঁধ নির্মাণের সময় কোন মাটিতে কাজ করা হচ্ছে, কোন লেয়ার দিয়ে করা হচ্ছে এবং কোন সময়ে করা হচ্ছে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। সম্ভবত এর অনেক কিছু মাথায় রাখা হয়নি। তাই এই অবস্থার মধ্যে বার বার পড়তে হয় উপকূলীয় মানুষদের।

খুলনা অঞ্চলে এর আগে ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার সম ৬৮৩ কিলোমিটার এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় ৪৭৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যার ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলবাসী। এর মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় শক্তি।

অপরদিকে, ভোলা জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ মোকাবিলায় এরই মধ্যে ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মাটির কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ হাজার ৮৬০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। ৯৮টি মেডিকেল টিম এবং গবাদিপশুর জন্য ২১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসকের ত্রাণ তহবিলে মজুত আছে ২ লাখ ২৯১ টন চাল, এক হাজার ১৫ প্যাকেট শুকনো খাবার। এ ছাড়া ছয় লাখ ২২ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

‘শক্তি’র ভয়ে আতঙ্কিত উপকূলবাসী

আপডেট সময় : ১১:৪২:০৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। একে মোকাবিলায় ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে, আতঙ্কিত করে তুলেছে দেশের দক্ষিণ উপকূলের বাসিন্দাদের।

এদিকে সাতক্ষীরা উপজেলার গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, কাশিমাড়ী পদ্মপুকুর মুন্সিগঞ্জ রমজান নগর কৈখালী এলাকার কয়েকটি বেড়িবাঁধ অতিঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরাও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, বুড়িগোয়ালিনীর দুর্গাবাটি ও দাতিনাখালীর ৩ জায়গায় বাঁধের অবস্থা ভালো না। গত আম্ফানে জায়গাগুলো ভেঙে গিয়েছিল। পরে মেরামত করা হলেও তা পুরোপুরি ঠিক হয়নি।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন মোট ৩৮০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ ও ৩ কিলোমিটার অতি-ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ঝড়ের আভাস পেয়ে অতি-ঝুঁকিপূর্ণ ৩ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা চলছে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সানাউল ইসলামের ভাষ্য, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মাটির ধরন অন্য এলাকার থেকে ভিন্ন। বাঁধ নির্মাণের সময় কোন মাটিতে কাজ করা হচ্ছে, কোন লেয়ার দিয়ে করা হচ্ছে এবং কোন সময়ে করা হচ্ছে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। সম্ভবত এর অনেক কিছু মাথায় রাখা হয়নি। তাই এই অবস্থার মধ্যে বার বার পড়তে হয় উপকূলীয় মানুষদের।

খুলনা অঞ্চলে এর আগে ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার সম ৬৮৩ কিলোমিটার এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় ৪৭৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যার ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলবাসী। এর মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় শক্তি।

অপরদিকে, ভোলা জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ মোকাবিলায় এরই মধ্যে ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মাটির কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ হাজার ৮৬০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। ৯৮টি মেডিকেল টিম এবং গবাদিপশুর জন্য ২১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসকের ত্রাণ তহবিলে মজুত আছে ২ লাখ ২৯১ টন চাল, এক হাজার ১৫ প্যাকেট শুকনো খাবার। এ ছাড়া ছয় লাখ ২২ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।