শতভাগ আবাসন ও রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষর্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, নির্বাচনের আচারণ বিধি ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা।   
রবিবার (১৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর কেটে গেলেও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যাবস্থা। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, জুলাই আন্দোলনের ৯ দফার অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি হলো ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন এবং তার সাথে আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিলো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির মূল উৎপাটন করা। আমরা মনে করছি কার্যকর রাকসু গঠনের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো সম্ভব। কিন্তু যারা এ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চায় তারাই এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন রাকসু নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিয়েছিলেন কিন্তু তা আমরা এখনও বাস্তবায়ন হতে দেখিনি।এবং তিনি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন আমরা মনে করছি সেটা একটা হাটুভাঙ্গা নির্বাচন কমিশন কারণ তারা কোনো খসড়া ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই অনতিবিলম্বে খসড়া ভোটার তালিকা দিতে হবে, যতোদিন না দেওয়া হবে ততদিন এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হয় আমরা যে রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম তার কোন কিছু করা হয়নি। আমাদের সুষ্ঠ ক্যাম্পাসের জন্য রাকসু নির্বাচন ও আবাসিকতা নিশ্চিত করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু তার কোন কিছু করা হয়নি। আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদের সময় যেসব শিক্ষক-কর্মচারী ছিলো তারা সেখানেই বহাল থেকে আবার ছাত্রলীগ দোষরদের মাধ্যমে এই ক্যাম্পাসের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তারা। শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবি রাকসু নিয়ে যেখানে শিক্ষার্থীরা  শান্তিপুর্ন ক্যাম্পাস পরিচালনা ও পুর্ন আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যেখানে ২৮এপ্রিল প্রতিটি হলে একটা করে খসড়া ভোটার তালিকা পর্যন্ত করে দিতে পারে নাই।আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব রাকসু নিয়ে সকল বিষয় ও পুর্ন আাবসিকতা বিষয়ে সকল দাবি মেনে নিয়ে কাজ শেষ করবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার আরেক সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, রাকসু আমাদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ৯দফার অন্যতম একটি দাবি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের যে পরিমান তৎপরতা প্রথমদিকে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিটি গঠন করার পর থেকে তৎপরতা ততটাই কম লক্ষ্য করছি আমরা। গত মাসে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করব হলেও এখনো তারা একটি ফর্মাল মিটিং করতে পারেনি, এর চেয়ে অথর্ব কমিটি আর কী হতে পারে বলে মনে হয়? আমাদের এই আজকের আন্দোলন আজকেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা। আমরা আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলনে ফিরে যাব যতদিন পর্যন্ত রাকসু বাস্তবায়ন না হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আবাসন সংকট সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি রোডম্যাপ দিতে হবে যে কতদিনের মধ্যে আমাদের শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন দিতে পারবে। যতদিন পর্যন্ত শতভাগ আবাসন আমাদের শিক্ষার্থীদের না দিতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শতভাগ আবাসন ও রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৫২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষর্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, নির্বাচনের আচারণ বিধি ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা।   
রবিবার (১৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর কেটে গেলেও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যাবস্থা। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, জুলাই আন্দোলনের ৯ দফার অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি হলো ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন এবং তার সাথে আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিলো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির মূল উৎপাটন করা। আমরা মনে করছি কার্যকর রাকসু গঠনের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো সম্ভব। কিন্তু যারা এ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চায় তারাই এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন রাকসু নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিয়েছিলেন কিন্তু তা আমরা এখনও বাস্তবায়ন হতে দেখিনি।এবং তিনি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন আমরা মনে করছি সেটা একটা হাটুভাঙ্গা নির্বাচন কমিশন কারণ তারা কোনো খসড়া ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই অনতিবিলম্বে খসড়া ভোটার তালিকা দিতে হবে, যতোদিন না দেওয়া হবে ততদিন এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হয় আমরা যে রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম তার কোন কিছু করা হয়নি। আমাদের সুষ্ঠ ক্যাম্পাসের জন্য রাকসু নির্বাচন ও আবাসিকতা নিশ্চিত করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু তার কোন কিছু করা হয়নি। আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদের সময় যেসব শিক্ষক-কর্মচারী ছিলো তারা সেখানেই বহাল থেকে আবার ছাত্রলীগ দোষরদের মাধ্যমে এই ক্যাম্পাসের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তারা। শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবি রাকসু নিয়ে যেখানে শিক্ষার্থীরা  শান্তিপুর্ন ক্যাম্পাস পরিচালনা ও পুর্ন আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যেখানে ২৮এপ্রিল প্রতিটি হলে একটা করে খসড়া ভোটার তালিকা পর্যন্ত করে দিতে পারে নাই।আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব রাকসু নিয়ে সকল বিষয় ও পুর্ন আাবসিকতা বিষয়ে সকল দাবি মেনে নিয়ে কাজ শেষ করবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার আরেক সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, রাকসু আমাদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ৯দফার অন্যতম একটি দাবি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের যে পরিমান তৎপরতা প্রথমদিকে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিটি গঠন করার পর থেকে তৎপরতা ততটাই কম লক্ষ্য করছি আমরা। গত মাসে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করব হলেও এখনো তারা একটি ফর্মাল মিটিং করতে পারেনি, এর চেয়ে অথর্ব কমিটি আর কী হতে পারে বলে মনে হয়? আমাদের এই আজকের আন্দোলন আজকেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা। আমরা আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলনে ফিরে যাব যতদিন পর্যন্ত রাকসু বাস্তবায়ন না হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আবাসন সংকট সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি রোডম্যাপ দিতে হবে যে কতদিনের মধ্যে আমাদের শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন দিতে পারবে। যতদিন পর্যন্ত শতভাগ আবাসন আমাদের শিক্ষার্থীদের না দিতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে।