শেরপুর জেলার ন্যায্য উন্নয়ন ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে শেরপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে এক নাগরিক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শেরপুর শহরের অষ্টমীতলা থেকে খোয়ারপাড় শাপলাচত্ত্বর পর্যন্ত এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, শেরপুর একটি সম্ভাবনাময় জেলা হলেও দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ ও পর্যটন খাতে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। বাস্তবভিত্তিক সরকারি পদক্ষেপ ও অগ্রাধিকার ছাড়া এই জেলার কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে জেলার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হবে। দাবিগুলো হলো:
১. শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন:
শেরপুর জেলার শিক্ষার হার জাতীয় গড়ের তুলনায় পিছিয়ে থাকায় শিক্ষা খাতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি। পাশের জেলাগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও রাজনৈতিক উপেক্ষার কারণে শেরপুর পিছিয়ে আছে। তাই কৃষি, প্রযুক্তি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সময়ের দাবি।
২. স্বাস্থ্যসেবা:
শেরপুরের প্রায় ঘোল লাখ মানুষসহ পাশ্ববর্তী জেলা জামালপুর, কুড়িগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের অনেক মানুষ ভৌগোলিক কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে শেরপুরে আসে। অথচ জেলা সদর হাসপাতালটি জনবল ও আধুনিক সরঞ্জামের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। তাই আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ অথবা বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৩. কৃষি ও শিল্প:
খাদ্যউৎপাদনে শেরপুর দেশের অন্যতম হলেও কৃষি শিল্প গড়ে ওঠেনি। তুলশীমালা ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হয়নি। এজন্য একাধিক আধুনিক হিমাগার স্থাপন এবং শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) কে পূর্ণাঙ্গ কৃষি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়েছে।
৪. যোগাযোগ:
সুদীর্ঘদিন ধরেই জেলার মানুষ রেলপথ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে, যা কৃষিপণ্য পরিবহন ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত শেরপুরকে রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
৫. পর্যটন:
‘পর্যটনের আনন্দে, তুলশীমালার সুগন্ধে’ এই শ্লোগানে পরিচিত শেরপুরে গজনী অবকাশ, মধুটিলা ইকোপার্কসহ একাধিক সম্ভাবনাময় এলাকা থাকলেও কোনো টেকসই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পর্যটন বিকাশে আধুনিক হোটেল-মোটেল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, বন সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।
শেরপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জেলার সর্বস্তরের মানুষকে দলমত নির্বিশেষে এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের মতে, “এই পাঁচ দফা দাবি শুধু যৌক্তিক নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।”