শিরোনাম :
Logo জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী অ্যালামনাসদের রুয়া’র নির্বাচন বর্জন Logo মুখোমুখি অবস্থানে ভারত-পাকিস্তান, ভারতীয় নৌবাহিনীর মিসাইল ধ্বংসের পরীক্ষা Logo কাশ্মীরে হামলার পর তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা পাকিস্তানের Logo কাতারে উচ্চ পর্যায়ের মধ্যাহ্নভোজে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা Logo জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ, দেওয়া হয়েছে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম Logo অন্তর্বর্তী সরকারকে অকার্যকর প্রমাণের চক্রান্ত চলছে: রিজভী Logo ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জামায়াতের ব্যানারে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেন আমির Logo পুলিশের ঊর্ধ্বতন বড় কর্মকর্তা বরখাস্ত Logo পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক Logo বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ

শেরপুর জেলায় রেললাইন আরও কতদূর: কবে খুলবে দ্বার!

মানুষ বহুবছর ধরে শুনে আসছে শেরপুর জেলায় রেললাইন হবে। কিন্তু এখনো তা কল্পনার মধ্যেই, বাস্তব রূপ পাই নি এখনো। আধেও কি রেললাইন হবে? তাহলে কবে কবে? আর কত শুনতে হবে? আর কত চাইতে হবে? এমন প্রশ্ন শেরপুর জেলার প্রতিটি মানুষের মধ্যে। কত আন্দোলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন করেও শেরপুরে চালু করানো যায় নি রেল নেটওয়ার্ক।

গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষা ইতিহাস সমৃদ্ধ শেরপুর জেলা আয়তনে ছোট হলেও দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলার মধ্যে অন্যতম। এখানে একসময় এক হাজারেরও বেশি চালকল বা চাতাল ছিল। বর্তমানে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির অটোমেটিক হলার মিলের সংখ্যা হয়েছে শতাধিক, যা দেশের অন্য কোনো জেলায় নেই। চালের পাশাপাশি রয়েছে জেলায় উৎপাদিত সবজিসহ বিভিন্ন মৌসুমের নানা কৃষিপণ্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জেলার অর্থনৈতিক মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে এ চাল ও কৃষিপণ্য উৎপাদন। এসব উৎপাদিত চাল ও কৃষিপণ্য দেশ-বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

কিন্তু কেবল সড়কপথ ছাড়া জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার অন্য কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। যদিও গত শতাব্দীর ষাটের দশক সময় পর্যন্ত জেলার মূল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল নৌপথ। কিন্তু সে নৌপথ ৭০ দশকের আগেই পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বর্তমানে জেলায় উৎপাদিত চালসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য ও সবজি, খনিজ বালু, পাথর, বাঁশ, কাঠ ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র পরিবহনের একমাত্র পথ সড়কপথ।

শেরপুর জেলায় রেললাইন হলে ভোগান্তি কমবে তেমনি পণ্য পরিবহন হবে সহজ। ব্যয়ভার অনেকাংশে কমে যাবে বলে জানিয়েছেন শেরপুরের বিভিন্ন স্তরের যাত্রী সাধারণ, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের নেতারা।

বাংলাদেশ রেলওয়ে, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, শেরপুর জেলায় রেলপথ স্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার ত্রিশের দশকে প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। পরে ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। পাকিস্তান আমলে ষাটের দশকে জামালপুর থেকে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর বনগাঁ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সত্তরের দশকের শেষের দিকে তৎকালীন রেলওয়ে পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া ভায়া শেরপুর রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। সে কারণে স্বাধীনতার পর থেকেই শেরপুর-জামালপুর হয়ে রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সে রেলপথের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের গ্যাড়াকলে আটকে ছিল ৪৩ বছর।

এরপর ২০১৪ সালের ৮ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জামালপুরের পিয়ারপুর রেলস্টেশনে আন্ত নগর তিস্তা ট্রেনের আনুষ্ঠানিক যাত্রাবিরতি উদ্বোধনকালে পিয়ারপুর থেকে শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। সেদিন মন্ত্রীর এ ঘোষণায় শেরপুর জেলাবাসীর মনে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর নতুন এক আশার আলো জেগে ওঠে। মন্ত্রীর ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জামালপুর জেলার পিয়ারপুর রেলস্টেশন থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর দিয়ে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা হয়ে জেলা শহর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রেললাইনের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ চলছে। এ জন্য ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নতুন রেল সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু এরপর অদৃশ্য ছায়ায় ঢেকে যায় পিয়ারপুর-শেরপুর রেলপথ নির্মাণকাজ। একসময় ময়মনসিংহ থেকে হালুয়াঘাট উপজেলা হয়েও শেরপুর জেলাকে রেলপথ নেটওয়ার্কে আনার চিন্তাভাবনা চালানো হয়। এরপর কয়েক দফায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সম্প্রসারণ এবং রেলের নানা উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলেও পিয়ারপুর-শেরপুর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি কোনো আলোচনায় ওঠেনি।

তবে ২০২২ সালের মার্চে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্প যাচাই কমিটির সভার সূত্র ধরে আবারও শেরপুরকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। সে সময় ‘জামালপুর-শেরপুর-বকশীগঞ্জ হয়ে রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা এবং জারিয়া-জাঞ্জাইল থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং ডিটেইল ডিজাইন’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়।

শেরপুর জেলাসহ, পাশের জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার আরো চারটি উপজেলার প্রায় ২৬ লাখ মানুষের এখন প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে শেরপুর জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা।

সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শেরপুরে রেললাইন আসি আসি করেও আসছে না। জনমনে তাই প্রশ্ন উঠেছে, শেরপুরে রেলপথ, আর কত দূর?
প্রতিবছর নির্বাচনের আগে শেরপুরের সাধারণ মানুষ জেলার উন্নয়ন নিয়ে আশায় বুক বাঁধে। এবার বুঝি রেল আসবে, মেডিক্যাল কলেজ হবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সীমান্ত জনপদে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে নাগরিকদের পক্ষ থেকে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে স্থান না পাওয়ায় নির্বাচনের পর এসব ইস্যু বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহির ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে নানান উন্নয়ন মূলক কাজ হাতে নিয়েছে।

তাই আবারও নাগরিকদের পক্ষ থেকে শেরপুরে রেললাইন স্থাপন, মেডিক্যাল কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো আলোচনায় উঠে আসছে।

সর্বশেষ গতবছরে জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকা থেকে শেরপুর সদর-শ্রীবরদী উপজেলা, বকশীগঞ্জ উপজেলা হয়ে রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পটি কিছুটা সংশোধন করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে রেলওয়ের পরিকল্পনা সেলে পাঠানো হয়েছিল।

এ ব্যপারে স্থানীয় লোকজন জানায়, আমাদের শেরপুর জেলার সুনাম থাকলেও খুবই অবহেলিত। জেলায় বড় বড় নেতাকর্মী থাকতেও তেমন উন্নয়ন হয় নি। এখনো বিভিন্ন উপজেলার রাস্তাঘাট দেখলে মনে হবে শেরপুরে উন্নয়নের ছোয়াই লাগে নি। শেরপুর জেলার দিকে দৃষ্টি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহবান জানান স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী অ্যালামনাসদের রুয়া’র নির্বাচন বর্জন

শেরপুর জেলায় রেললাইন আরও কতদূর: কবে খুলবে দ্বার!

আপডেট সময় : ০২:১৭:৫৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

মানুষ বহুবছর ধরে শুনে আসছে শেরপুর জেলায় রেললাইন হবে। কিন্তু এখনো তা কল্পনার মধ্যেই, বাস্তব রূপ পাই নি এখনো। আধেও কি রেললাইন হবে? তাহলে কবে কবে? আর কত শুনতে হবে? আর কত চাইতে হবে? এমন প্রশ্ন শেরপুর জেলার প্রতিটি মানুষের মধ্যে। কত আন্দোলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন করেও শেরপুরে চালু করানো যায় নি রেল নেটওয়ার্ক।

গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষা ইতিহাস সমৃদ্ধ শেরপুর জেলা আয়তনে ছোট হলেও দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলার মধ্যে অন্যতম। এখানে একসময় এক হাজারেরও বেশি চালকল বা চাতাল ছিল। বর্তমানে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির অটোমেটিক হলার মিলের সংখ্যা হয়েছে শতাধিক, যা দেশের অন্য কোনো জেলায় নেই। চালের পাশাপাশি রয়েছে জেলায় উৎপাদিত সবজিসহ বিভিন্ন মৌসুমের নানা কৃষিপণ্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জেলার অর্থনৈতিক মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে এ চাল ও কৃষিপণ্য উৎপাদন। এসব উৎপাদিত চাল ও কৃষিপণ্য দেশ-বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

কিন্তু কেবল সড়কপথ ছাড়া জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার অন্য কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। যদিও গত শতাব্দীর ষাটের দশক সময় পর্যন্ত জেলার মূল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল নৌপথ। কিন্তু সে নৌপথ ৭০ দশকের আগেই পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বর্তমানে জেলায় উৎপাদিত চালসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য ও সবজি, খনিজ বালু, পাথর, বাঁশ, কাঠ ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র পরিবহনের একমাত্র পথ সড়কপথ।

শেরপুর জেলায় রেললাইন হলে ভোগান্তি কমবে তেমনি পণ্য পরিবহন হবে সহজ। ব্যয়ভার অনেকাংশে কমে যাবে বলে জানিয়েছেন শেরপুরের বিভিন্ন স্তরের যাত্রী সাধারণ, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের নেতারা।

বাংলাদেশ রেলওয়ে, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, শেরপুর জেলায় রেলপথ স্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার ত্রিশের দশকে প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। পরে ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। পাকিস্তান আমলে ষাটের দশকে জামালপুর থেকে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর বনগাঁ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সত্তরের দশকের শেষের দিকে তৎকালীন রেলওয়ে পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া ভায়া শেরপুর রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। সে কারণে স্বাধীনতার পর থেকেই শেরপুর-জামালপুর হয়ে রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সে রেলপথের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের গ্যাড়াকলে আটকে ছিল ৪৩ বছর।

এরপর ২০১৪ সালের ৮ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জামালপুরের পিয়ারপুর রেলস্টেশনে আন্ত নগর তিস্তা ট্রেনের আনুষ্ঠানিক যাত্রাবিরতি উদ্বোধনকালে পিয়ারপুর থেকে শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। সেদিন মন্ত্রীর এ ঘোষণায় শেরপুর জেলাবাসীর মনে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর নতুন এক আশার আলো জেগে ওঠে। মন্ত্রীর ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জামালপুর জেলার পিয়ারপুর রেলস্টেশন থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর দিয়ে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা হয়ে জেলা শহর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রেললাইনের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ চলছে। এ জন্য ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নতুন রেল সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু এরপর অদৃশ্য ছায়ায় ঢেকে যায় পিয়ারপুর-শেরপুর রেলপথ নির্মাণকাজ। একসময় ময়মনসিংহ থেকে হালুয়াঘাট উপজেলা হয়েও শেরপুর জেলাকে রেলপথ নেটওয়ার্কে আনার চিন্তাভাবনা চালানো হয়। এরপর কয়েক দফায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সম্প্রসারণ এবং রেলের নানা উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলেও পিয়ারপুর-শেরপুর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি কোনো আলোচনায় ওঠেনি।

তবে ২০২২ সালের মার্চে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্প যাচাই কমিটির সভার সূত্র ধরে আবারও শেরপুরকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। সে সময় ‘জামালপুর-শেরপুর-বকশীগঞ্জ হয়ে রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা এবং জারিয়া-জাঞ্জাইল থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং ডিটেইল ডিজাইন’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়।

শেরপুর জেলাসহ, পাশের জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার আরো চারটি উপজেলার প্রায় ২৬ লাখ মানুষের এখন প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে শেরপুর জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা।

সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শেরপুরে রেললাইন আসি আসি করেও আসছে না। জনমনে তাই প্রশ্ন উঠেছে, শেরপুরে রেলপথ, আর কত দূর?
প্রতিবছর নির্বাচনের আগে শেরপুরের সাধারণ মানুষ জেলার উন্নয়ন নিয়ে আশায় বুক বাঁধে। এবার বুঝি রেল আসবে, মেডিক্যাল কলেজ হবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সীমান্ত জনপদে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে নাগরিকদের পক্ষ থেকে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে স্থান না পাওয়ায় নির্বাচনের পর এসব ইস্যু বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহির ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে নানান উন্নয়ন মূলক কাজ হাতে নিয়েছে।

তাই আবারও নাগরিকদের পক্ষ থেকে শেরপুরে রেললাইন স্থাপন, মেডিক্যাল কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো আলোচনায় উঠে আসছে।

সর্বশেষ গতবছরে জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকা থেকে শেরপুর সদর-শ্রীবরদী উপজেলা, বকশীগঞ্জ উপজেলা হয়ে রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পটি কিছুটা সংশোধন করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে রেলওয়ের পরিকল্পনা সেলে পাঠানো হয়েছিল।

এ ব্যপারে স্থানীয় লোকজন জানায়, আমাদের শেরপুর জেলার সুনাম থাকলেও খুবই অবহেলিত। জেলায় বড় বড় নেতাকর্মী থাকতেও তেমন উন্নয়ন হয় নি। এখনো বিভিন্ন উপজেলার রাস্তাঘাট দেখলে মনে হবে শেরপুরে উন্নয়নের ছোয়াই লাগে নি। শেরপুর জেলার দিকে দৃষ্টি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহবান জানান স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা।