ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নীতি না বদলালে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরান কোনো আলোচনায় বসবে না। ইরান সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সম্প্রতি নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত হতে ইরানকে দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজি না হলে তেহরানে হামলারও হুমকি দেন তিনি। যার তীব্র সমালোচনা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। যুক্তরাষ্ট্রকে বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (২৩ মার্চ) এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের সর্বোচ্চ নেতার কাছে একটি সম্ভাব্য নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন, যা সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ এড়ানোর প্রচেষ্টা। সবকিছু সামরিক উপায়ে সমাধান করার প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন উইটকফ।
যদিও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের নীতি পরিবর্তন না হলে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘চিঠি লেনদেন কূটনীতির অংশ, কিন্তু একই সাথে তা চাপ এবং হুমকির অংশও হতে পারে।’
আরাঘচি আরও বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সবসময় যুদ্ধ এড়িয়ে চলে এবং যুদ্ধ চায় না, তবে ইরান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং যুদ্ধকে ভয় পায় না। ইরানের পররাষ্ট্রনীতি অবশ্যই কূটনীতি এবং যুদ্ধ এড়িয়ে চলার ওপর ভিত্তি গড়ে উঠেছে, যদি যুদ্ধ অনিবার্য না হয়ে ওঠে।
ট্রাম্পের চিঠিকে হুমকি হিসেবে দাবি করে দ্রুতই তেহরান এর জবাব দেবে বলেও জানান আরাঘচি। তিনি বলেন, ট্রাম্পের প্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই, আমরা আমাদের নিজস্ব স্বার্থে কাজ করি। যা কল্যাণকর সেটাই করা হয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হচ্ছি না, এর কারণ একগুঁয়েমি নয় বরং অভিজ্ঞতা ও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। বিশেষজ্ঞদের মত হলো, এখন যে পরিস্থিতি তাতে কিছু পরিবর্তন না এলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় প্রবেশ করা আর সম্ভব নয়।’
২০১৮ সালে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে ওয়াশিংটনের ওপর তেহরানের বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়। ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও ট্রাম্প এ বছর পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে ইরানের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।