নিউজ ডেস্ক:
আগামী বাজেটে কালো টাকা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গত মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বিদেশে বিনিয়োগ করছে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম গড়ে তোলা হচ্ছে। মূলত কালো টাকা দেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ না থাকায় টাকা পাচার হচ্ছে। পাশাপাশি কমছে প্রবাসী আয়ও। এই দুই কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে আগামী অর্থবছরে।
তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা চলছে। তা প্রতিরোধ করতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে। আগামী বাজেটে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন অর্থনীতিবিদরা। আমিও মনে করি কিছু করা দরকার। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বাজেটে কিছু একটা করা হবে।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘প্রবাসী আয় কমেছে। তবে বিদেশে জনশক্তি রপ্তনি বেড়েছে। এতে প্রবাসী আয়ে ঘাটতি কিছুটা সমন্বয় হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘আগে পর পর দুটি বাজেটে জমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু করা হয়নি। গ্রামে জমির পরিমাণ কমছে। পাশাপাশি জনসংখ্যাও বাড়ছে। আগামীতে গ্রামগুলোতে বহুতল ভবন নির্মাণে উৎসাহী করা হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়াতে নেওয়া হয়েছে।
জেলা বাজেট বাস্তবায়ন না হওয়ায় অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করেছেন, এ কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা বাজেট বাস্তবায়নের সঙ্গে বড় ধরনের প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা দরকার। এদিকে নজর দিতে পারছি না। সে কারণে জেলা বাজেট বস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে এ ধরনের ৪৬টি কর্মসূচি চলছে। আগামীতে তা কমিয়ে আনা হবে। এ ধরনের নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সরকার বিনিয়োগ বাড়াবে। ফলে সংস্কার করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থাগুলোর তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। একেক সংস্থার তথ্য একেক ধরনের হচ্ছে। এক্ষেত্রে বড় ধরনের উন্নতি করা দরকার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ সংশ্লিষ্ট চারটি সংস্থাকে সমন্বয় করা গেলে তা সম্ভব। এটি খুব সহজে সমন্বয় করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। এসব সুপারিশের মধ্যে আছে- বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর প্রাইভেটাইজেশন করা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হেলথ কেয়ার চালু, আর্থিক খাতের সংস্কার, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি পূরণ, মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণ, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনায় মনিটরিং করা।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নেন- প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, মামুনুর রশীদ, আহসান এইচ মনসুর, প্রাক্তন অর্থসচিব এম তারেক রহমান প্রমুখ।