একান্ত অপারগ অবস্থা ছাড়া অন্যের কাছে হাত পাতা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। আর একে অভ্যাস ও পেশা বানিয়ে নেওয়া মারাত্মক অন্যায় ও নিন্দনীয়। ভিক্ষাবৃত্তি ইসলামে ‘নিকৃষ্টতম বৈধ’ কাজ। হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। কোনো ভিক্ষুকের ব্যাপারে যদি ধারণা হয়, সে মাজবুর-অপারগ নয়; বরং ভিক্ষাবৃত্তি তার পেশা, তাহলে তাকে ভিক্ষা দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
আর মসজিদের ভেতর দাঁড়িয়ে এভাবে ভিক্ষা চাওয়া অবশ্যই সঠিক কাজ নয়। এ থেকে বিরত থাকা উচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘একজন ব্যক্তি তার হারানো জন্ত পওয়ার জন্য মসজিদে ঘোষণা করছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তা শুনে বলেন, ‘তুমি যেন তা না পাও। মসজিদ এ কাজের জন্য বানানো হয়নি। মসজিদ কেবল সে কাজেরই জন্য, যার জন্য (তথা নামায, ইবাদত-বন্দেগির) তা বানানো হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৬৯)
হাদিস এর ব্যাখ্যায় ইমাম খাত্তাবি (রহ.) বলেন, ‘অর্থাৎ এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এমন সব কাজ অন্তর্ভুক্ত, যার জন্য মসজিদ বানানো হয়নি। যেমন ক্রয়-বিক্রয়, পারস্পরিক লেনদেন ও নিজেদের হক ও অধিকার আদায় সংক্রান্ত বিষয়াদি। পূর্ববর্তী আলেমদের অনেকেই মসজিদে সাহায্য চাওয়া অপছন্দ করতেন। এবং তাদের কেউ কেউ মসজিদে সাহায্যপ্রার্থী লোকদের দান করাও পছন্দ করতেন না।’ (মাআলিমুস সুনান ১/১৪৩)
আল্লামা আইনি (রহ.)সহ অনেক মুহাদ্দিস হাদিসটির ব্যাখ্যায় এসব কথা বলেছেন। (শরহু সুনানে আবি দাউদ, আইনি ২/৮৭)
তাছাড়া ফরজ নামাজের সালামের পর এভাবে সাহায্য চাওয়াতে মাসবুক (যারা জামাতে পরে এসেছেন) ও তাৎক্ষণিক সুন্নতে দাঁড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের নামাজে বিঘ্ন সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। মুসল্লিদের দোয়া ও জিকির- আজকারের মধ্যেও বিঘ্ন সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। মসজিদে আওয়াজ-শোরগোল ও কখনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়—যা সম্পূর্ণভাবে মসজিদের আদব-শিষ্টাচার পরিপন্থী।