মঙ্গলবার | ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পলাশবাড়ীতে পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা Logo সুন্দরবন কয়রায় কোস্ট গার্ডের দুটি অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, জিম্মি জেলে মুক্ত ও হরিণের মাংসসহ শিকারি আটক Logo খুবিতে নতুন উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ট্রেনিং অনুষ্ঠিত Logo পলাশবাড়ীতে অফিসের হাটের বেদখল জায়গা উদ্ধারে জোর দাবি: আরইউটিডিপির বরাদ্দে আধুনিক স্থাপনা চায় পৌরবাসী Logo পলাশবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস আজ Logo টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে নারী ও শিশুসহ ৭ জন উদ্ধার, আটক-৩ Logo কয়রায় জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী  গণসংযোগ Logo ইবিতে প্রশাসনের কমিটি থেকে পদত্যাগ বিএনপিপন্থী ৩ শিক্ষকের Logo খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা প্রত্যাশায় কয়রায় বিএনপির দোয়া মাহফিল Logo পলাশবাড়ীতে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত 

ব্যাংক থেকে ১৭০০ কোটি ডলার লুট করেছে হাসিনার দোসররা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৪:৫৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৭৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের ব্যাংকখাত থেকে ১৭০০ কোটি মার্কিন ডলার লুট করেছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর টাইকুন বা ধনকুবেররা। আর এ কাজে তারা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর এ কথা জানিয়েছেন।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাথে যুক্ত টাইকুনদের বিরুদ্ধে তার শাসনামলে ব্যাংকিং খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচারের জন্য দেশের শক্তিশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সাথে কাজ করার অভিযোগ করেছেন।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিযুক্ত হন আহসান মনসুর। ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) নেতৃস্থানীয় ব্যাংকগুলো জোরপূর্বক দখলের কাজে সহায়তা করেছিল। মনসুর বলেন, ব্যাংকগুলো দখলে নেওয়ার পর আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন টাকা বা ১ হাজার ৬৭০ কোটি মার্কিন ডলার লুট করা হয়েছে। মূলত ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর নতুন শেয়ারহোল্ডারদের ঋণ দেওয়া এবং আমদানি চালান স্ফীত করার মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে এই অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যেকোনও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড়, সর্বোচ্চ ব্যাংক লুটপাট। বিশ্বের আর কোথাও এই পরিমাণে লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি এবং এর পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল এবং গোয়েন্দারা (ব্যাংকের সাবেক সিইওদের) মাথায় বন্দুক না ধরলে এটি ঘটতে পারত না। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্য্ংকের এই গভর্নর বলেন, শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার সহযোগীরা ডিজিএফআই-এর সহায়তায় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ন্যূনতম ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদেরকে ঋণ দিতো।

অবশ্য সাইফুল আলমের পক্ষে ল ফার্ম কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভানের দেওয়া এক বিবৃতিতে এস আলম গ্রুপ বলেছে, আহসান মনসুরের এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত প্রচারণা যথাযথ প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিগুলোকেও সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি ইতোমধ্যেই বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে অবদান রেখেছে। গ্রুপের রেকর্ড এবং অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গভর্নরের অভিযোগগুলোকে আশ্চর্যজনক এবং অযৌক্তিক বলে দেখতে পাচ্ছি…।

ফিনান্সিয়াল টাইমস বলছে, এ বিষয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ডিজিএফআই-এর সাথেও যোগাযোগ করা যায়নি। ১৭ কোটি মানুষের দেশ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশে শেখ হাসিনা মোট দুই দশক ধরে ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু তার শাসনামলে ভোট কারচুপি, বিরোধীদের জেল ও নির্যাতন এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং তার বর্তমান অবস্থান অজানা। হাসিনার পলায়নের পর নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। এরপর থেকে এই সরকার হাসিনার দোসরদের লুট ও পাচার কর অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সাবেক আইএমএফ কর্মকর্তা আহসান মনসুর এর আগে গত মাসে এফটিকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার মিত্রদের বৈদেশিক সম্পদের তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, হাসিনার শাসনামলে নেতৃস্থানীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বোর্ডের সদস্যদের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হোটেলের মতো অন্যান্য স্থানে নিয়ে যায় এবং বন্দুকের মুখে তাদের ব্যাংকের সমস্ত শেয়ার এস আলমের কাছে বিক্রি করতে এবং তাদের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলত। একের পর এক ব্যাংকে তারা এটা করেছে। বাংলাদেশের একটি ব্যাংকের সাবেক সিইও এফটিকে বলেছেন, জোরপূর্বক ব্যাংক দখলের অংশ হিসাবে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। দেশের অন্যতম বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক সিইও মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেছেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি তৎকালীন সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাপে পড়েছিলেন।

মান্নান বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তাকে একটি বোর্ড মিটিংয়ে যাওয়ার পথে তুলে নেওয়া হয় এবং পরে একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার সাথে তাকে দেখা করতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য পুরো একটি কার্যদিবস বসিয়ে রাখা হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত মান্নান। তিনি বলেন, তারা ভুয়া স্টেশনারি নিয়ে ব্যাংকের চিঠি তৈরি করে। আমাকে একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল। অবশ্য এস আলম গত এক দশকে ব্যাংকিংয়ে বৈচিত্র্য এনেছেন দাবি করে গ্রুপের ওয়েবসাইট বলছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকে তাদের “উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ” রয়েছে।

মনসুর বলেন, হাসিনার সরকারের আমলে দেউলিয়া হওয়া প্রায় ডজন খানেক ব্যাংকের অডিট শেষ করে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা সেই অডিটটিকে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয়ভাবে আইনের আদালতে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করতে চাই।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পলাশবাড়ীতে পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

ব্যাংক থেকে ১৭০০ কোটি ডলার লুট করেছে হাসিনার দোসররা

আপডেট সময় : ০৭:৩৪:৫৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশের ব্যাংকখাত থেকে ১৭০০ কোটি মার্কিন ডলার লুট করেছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর টাইকুন বা ধনকুবেররা। আর এ কাজে তারা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর এ কথা জানিয়েছেন।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাথে যুক্ত টাইকুনদের বিরুদ্ধে তার শাসনামলে ব্যাংকিং খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচারের জন্য দেশের শক্তিশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সাথে কাজ করার অভিযোগ করেছেন।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিযুক্ত হন আহসান মনসুর। ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) নেতৃস্থানীয় ব্যাংকগুলো জোরপূর্বক দখলের কাজে সহায়তা করেছিল। মনসুর বলেন, ব্যাংকগুলো দখলে নেওয়ার পর আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন টাকা বা ১ হাজার ৬৭০ কোটি মার্কিন ডলার লুট করা হয়েছে। মূলত ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর নতুন শেয়ারহোল্ডারদের ঋণ দেওয়া এবং আমদানি চালান স্ফীত করার মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে এই অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যেকোনও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড়, সর্বোচ্চ ব্যাংক লুটপাট। বিশ্বের আর কোথাও এই পরিমাণে লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি এবং এর পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল এবং গোয়েন্দারা (ব্যাংকের সাবেক সিইওদের) মাথায় বন্দুক না ধরলে এটি ঘটতে পারত না। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্য্ংকের এই গভর্নর বলেন, শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার সহযোগীরা ডিজিএফআই-এর সহায়তায় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ন্যূনতম ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদেরকে ঋণ দিতো।

অবশ্য সাইফুল আলমের পক্ষে ল ফার্ম কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভানের দেওয়া এক বিবৃতিতে এস আলম গ্রুপ বলেছে, আহসান মনসুরের এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত প্রচারণা যথাযথ প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিগুলোকেও সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি ইতোমধ্যেই বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে অবদান রেখেছে। গ্রুপের রেকর্ড এবং অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গভর্নরের অভিযোগগুলোকে আশ্চর্যজনক এবং অযৌক্তিক বলে দেখতে পাচ্ছি…।

ফিনান্সিয়াল টাইমস বলছে, এ বিষয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ডিজিএফআই-এর সাথেও যোগাযোগ করা যায়নি। ১৭ কোটি মানুষের দেশ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশে শেখ হাসিনা মোট দুই দশক ধরে ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু তার শাসনামলে ভোট কারচুপি, বিরোধীদের জেল ও নির্যাতন এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং তার বর্তমান অবস্থান অজানা। হাসিনার পলায়নের পর নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। এরপর থেকে এই সরকার হাসিনার দোসরদের লুট ও পাচার কর অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সাবেক আইএমএফ কর্মকর্তা আহসান মনসুর এর আগে গত মাসে এফটিকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার মিত্রদের বৈদেশিক সম্পদের তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, হাসিনার শাসনামলে নেতৃস্থানীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বোর্ডের সদস্যদের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হোটেলের মতো অন্যান্য স্থানে নিয়ে যায় এবং বন্দুকের মুখে তাদের ব্যাংকের সমস্ত শেয়ার এস আলমের কাছে বিক্রি করতে এবং তাদের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলত। একের পর এক ব্যাংকে তারা এটা করেছে। বাংলাদেশের একটি ব্যাংকের সাবেক সিইও এফটিকে বলেছেন, জোরপূর্বক ব্যাংক দখলের অংশ হিসাবে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। দেশের অন্যতম বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক সিইও মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেছেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি তৎকালীন সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাপে পড়েছিলেন।

মান্নান বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তাকে একটি বোর্ড মিটিংয়ে যাওয়ার পথে তুলে নেওয়া হয় এবং পরে একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার সাথে তাকে দেখা করতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য পুরো একটি কার্যদিবস বসিয়ে রাখা হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত মান্নান। তিনি বলেন, তারা ভুয়া স্টেশনারি নিয়ে ব্যাংকের চিঠি তৈরি করে। আমাকে একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল। অবশ্য এস আলম গত এক দশকে ব্যাংকিংয়ে বৈচিত্র্য এনেছেন দাবি করে গ্রুপের ওয়েবসাইট বলছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকে তাদের “উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ” রয়েছে।

মনসুর বলেন, হাসিনার সরকারের আমলে দেউলিয়া হওয়া প্রায় ডজন খানেক ব্যাংকের অডিট শেষ করে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা সেই অডিটটিকে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয়ভাবে আইনের আদালতে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করতে চাই।