আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জে রেললাইনের পাশ থেকে শিলা খাতুন (২৪) নামে এক গৃহবধূর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, নিহত শিলাকে তার স্বামী হত্যা করে রেললাইনের ধারে ফেলে রেখেছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের সন্নিকট থেকে গৃহবধূ শিলা খাতুনের রক্তাক্ত মরহেদ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিলা খাতুন জেহালা ইউনিয়নের রোয়াকুলি গ্রামের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী রাসেল হোসেনের স্ত্রী ও একই উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামের হামিদুল ইসলামের মেয়ে।
ঘটনার পর থেকে স্বামী রাসেল ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। তবে নিহত শিলার পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছেন রাসেল ও তার পরিবারের লোকজন। এদিকে খবর পেয়ে বেলা ১১ টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানসহ জিআরপি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় বছর আগে রাসেল ও শিলার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি দেড় বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই রাসেল মাদক সেবন করতো। এ নিয়ে শিলা প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করতেন। বিভিন্ন সময় পরিবারের কাছে টাকা দাবি করতেন। টাকা না দিলে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন রাসেল। গত রোববার দুপুরে ১৫০ টাকা চুরির অভিযোগ তুলে শিলাকে মারধর করে রাসেল। ওই দিন রাত ১২ টার দিকে শিলা নিখোঁজ বলে রাসেল তার শ্বশুরের পরিবারকে ফোনে জানান। রাতভর শিলার পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করে। পরে সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জ এলাকার রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই সাহেব আলী জানান, রোববার দুপুরে শিলাকে মারপিট করে রাসেল। রাতে মোবাইলে রাসেল জানান তার বোন বাড়ি থেকে চলে গেছে, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে মুন্সিগঞ্জ রেললাইনের পাশ থেকে বোনের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, তার বোনকে রাসেল পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে গেছে।
পোড়াদহ রেলওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) জহির হোসেন বলেন, লাশের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এটি হত্যা। তদন্তের প্রয়োজনে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাতে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলেও জানান তিনি।