বৃহস্পতিবার | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা Logo চাঁদপুর ভূঁইয়ার ঘাট ডিঙ্গি মাঝি সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন Logo টেকনাফে বিজিবির অভিযানে সাগর পথে মানব পাচারকালে দুই দালালসহ ৭ জন ভিকটিম উদ্ধার Logo দেশকে এগিয়ে নেয়ার ‘ডিটেইল প্ল্যানিং’ শুধু বিএনপির আছে: তারেক রহমান Logo রাশিয়াকে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই কিয়েভের : জেলেনস্কি Logo তফসিল ঘোষণার পর বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান

মেহেরপুরে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ভুয়া এনজিও

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:১৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৭২ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর শহরের কুষ্টিয়া সড়কে দিঘীর পাড়ায় ‘সিডার’ ক্ষুদ্র ঋণ কমর্সূচি নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদের কাছে থেকে ঋণ দেওয়ার নাম করে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গতকাল রবিবার ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন আসবাবপত্র নিয়ে অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে এনজিওর কর্মকর্তারা।

এসময় সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনা, গোপালপুর, শ্যামপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে ঋণ দেওয়ার নামে ১০ শতাংশ করে জামানত সংগ্রহ করে সংস্থাটি। এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে গ্রাহকদের কাছে আশরাফুল আলম নামে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করেন। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।

জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে আব্দুল মতিন নামের একজনের কাছে থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা অফিস করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। হঠাৎ করে দু’একদিন আসা যাওয়া করেন। গতকাল রবিবার গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার দিনে তারা আসবাবপত্র নিয়ে উধাও হয়েছে। তবে তাদের কখনো কেউ দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। পরে বাড়ি মালিক এনজিও সাইনবোর্ড টি খুলে দেন।
নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের সীমা খাতুন জানান, ৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে। গতকাল রবিবার ঋণের ৩ লাখ টাকা দেওয়া কথা। কিন্তু সকালে অফিসে এসে দেখতে পাই অফিসে কেউ নেই। আসবাবপত্রও নেই। তিনি আরো বলেন, তার স্বামীকে গোপন করে তিনি এ টাকা দিয়েছেন। তার স্বামী জানতে পারলে তাকে বাড়িতে উঠতে দেবে না। এখন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।

একই গ্রামের হেলাল বলেন, আমাকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। নাজমা খাতুন, হাফিজুল ইসলাম সহ মদনাডাঙ্গা গ্রাম থেকে ৯ জন দিয়েছেন ১ লাখ টাকা। এসময় তাদের কাছে সংস্থাটি পাসবই দেয় বলে জানান তারা।
কুতুরপুর গ্রামের সাজেদা খাতুন এক লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, মর্জিনা খাতুন দিয়েছেন ৫হাজার টাকা, হিরা খাতুন ৭ হাজার, আনোয়ার হোসেন ৭ হাজার টাকা, শ্যামপুরের ভ্যান চালক মাসুম হোসেন ২ লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১২ হাজার। ঋণ নিতে এসে অফিস উধাওয়ের খবর পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এছাড়াও সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রাহকরা এসে অফিসে কাউকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং সেখানে অবস্থান নেন।

খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের শান্ত করেন এবং এনজিও কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গ্রাহকদের আশ্বাস দেন তারা।
তবে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী কাদের ফজলে রাব্বী বলেন, “সিডার নামের কোন এনজিওর অনুমোদন মেহেরপুরে নেই। এক ধরণের প্রতারকরা নাম সর্বস্ব এনজিও খুলে মানুষের কাছে থেকে টাকা লগ্নি করে উধাও হচ্ছে। এদের থেকে সচেতন থাকতে হবে। তাদের কাছে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে।”

বাড়ির মালিক আব্দুল মতিন জানান, কয়েক দিন আগে সিডার এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে আশরাফুল আলম নামে একজন ১৪ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া চুক্তিতে বাসা ভাড়া নেন। ১০ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করার কথা থাকলেও শনিবার থেকে এনজিও ম্যানেজারের ফোন বন্ধ পান। পরে বাড়ির সামনে গ্রাহকদের ভিড় জমতে দেখেন। বাসা ভাড়ার সময় একটি জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন তারা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা

মেহেরপুরে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ভুয়া এনজিও

আপডেট সময় : ০১:৪৮:১৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

মেহেরপুর শহরের কুষ্টিয়া সড়কে দিঘীর পাড়ায় ‘সিডার’ ক্ষুদ্র ঋণ কমর্সূচি নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদের কাছে থেকে ঋণ দেওয়ার নাম করে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গতকাল রবিবার ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন আসবাবপত্র নিয়ে অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে এনজিওর কর্মকর্তারা।

এসময় সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনা, গোপালপুর, শ্যামপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে ঋণ দেওয়ার নামে ১০ শতাংশ করে জামানত সংগ্রহ করে সংস্থাটি। এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে গ্রাহকদের কাছে আশরাফুল আলম নামে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করেন। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।

জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে আব্দুল মতিন নামের একজনের কাছে থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা অফিস করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। হঠাৎ করে দু’একদিন আসা যাওয়া করেন। গতকাল রবিবার গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার দিনে তারা আসবাবপত্র নিয়ে উধাও হয়েছে। তবে তাদের কখনো কেউ দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। পরে বাড়ি মালিক এনজিও সাইনবোর্ড টি খুলে দেন।
নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের সীমা খাতুন জানান, ৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে। গতকাল রবিবার ঋণের ৩ লাখ টাকা দেওয়া কথা। কিন্তু সকালে অফিসে এসে দেখতে পাই অফিসে কেউ নেই। আসবাবপত্রও নেই। তিনি আরো বলেন, তার স্বামীকে গোপন করে তিনি এ টাকা দিয়েছেন। তার স্বামী জানতে পারলে তাকে বাড়িতে উঠতে দেবে না। এখন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।

একই গ্রামের হেলাল বলেন, আমাকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। নাজমা খাতুন, হাফিজুল ইসলাম সহ মদনাডাঙ্গা গ্রাম থেকে ৯ জন দিয়েছেন ১ লাখ টাকা। এসময় তাদের কাছে সংস্থাটি পাসবই দেয় বলে জানান তারা।
কুতুরপুর গ্রামের সাজেদা খাতুন এক লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, মর্জিনা খাতুন দিয়েছেন ৫হাজার টাকা, হিরা খাতুন ৭ হাজার, আনোয়ার হোসেন ৭ হাজার টাকা, শ্যামপুরের ভ্যান চালক মাসুম হোসেন ২ লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১২ হাজার। ঋণ নিতে এসে অফিস উধাওয়ের খবর পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এছাড়াও সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রাহকরা এসে অফিসে কাউকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং সেখানে অবস্থান নেন।

খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের শান্ত করেন এবং এনজিও কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গ্রাহকদের আশ্বাস দেন তারা।
তবে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী কাদের ফজলে রাব্বী বলেন, “সিডার নামের কোন এনজিওর অনুমোদন মেহেরপুরে নেই। এক ধরণের প্রতারকরা নাম সর্বস্ব এনজিও খুলে মানুষের কাছে থেকে টাকা লগ্নি করে উধাও হচ্ছে। এদের থেকে সচেতন থাকতে হবে। তাদের কাছে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে।”

বাড়ির মালিক আব্দুল মতিন জানান, কয়েক দিন আগে সিডার এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে আশরাফুল আলম নামে একজন ১৪ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া চুক্তিতে বাসা ভাড়া নেন। ১০ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করার কথা থাকলেও শনিবার থেকে এনজিও ম্যানেজারের ফোন বন্ধ পান। পরে বাড়ির সামনে গ্রাহকদের ভিড় জমতে দেখেন। বাসা ভাড়ার সময় একটি জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন তারা।