নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদা উপজেলার আগাম ফুলকপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকেরা। এ অঞ্চলের চাষিরা ইতোমধ্যে ফুলকপি চাষের জন্য জমিতে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার বীজতলা তৈরির কাজ শেষ করেছেন।
উপজেলার উত্তর চাঁদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল আলীম বলেন, ‘গ্রামের পশ্চিম মাঠে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপির বীজতলা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করেছি। চলতি মৌসুমে বীজ তলায় ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। এবার মাঠে সাড়ে চার বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপির চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছি। বীজতলার কোনো ক্ষতি না হলে সাড়ে চার বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। যদি বাজার দর ভালো হয়, তাহলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ফুলকপি বিক্রি করে লাভের আশা করছি। অসময়ে আগাম এই বীজতলা তৈরিতে খরচের মাত্রা সব সময় বেশি হয়। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে এবং আকাশে মেঘ দেখলে বুক কেঁপে ওঠে। এই বুঝি বীজতল নষ্ট হয়ে গেল। ফলে পলিথিনের মোড়ক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হয়। ফসল উৎপাদনের চেয়ে বীজতলা তৈরি এখন বাহাদুরির কাজ। গ্রামের উৎপাদিত সবজি নিজস্ব প্রযুক্তি, পরিচর্যা, সার ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ নিজেরাই করে থাকি। উৎপাদিত এসব সবজি ট্রাকভর্তি করে ঢাকার পাইকারি দরে কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে বিক্রি করে থাকি। তবে চলতি বর্ষায় বীজতলা তৈরি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বীজতলায় বীজ ছড়ানোর পর ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণ করতে হবে।’
একই গ্রামের আবু নছর, জাকির হোসেনসহ অনেকে ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা তৈরি করে মাঠে বীজতলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্থানীয় সুফলা বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী আজিজুল হক বলেন, বাজারে নানা জাতের কপির বীজ পাওয়া যাচ্ছ। তবে শীত মৌসুমে এ বীজের খুব চাহিদা থাকে। অসময়ে এ সবজি আবাদ করতে যেমন খরচের মাত্রা বেশি হয়, অপর দিকে কৃষকদের বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজার দর বেশি পাওয়ার আশায় চাষিরা আগাম কপির আবাদ করতে করতে করতে বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছে।
এ বিষয় উপজেলা কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দামুড়হুদা উপজেলার মাটিতে সব ধরনের ফসলের জন্য উপযুক্ত। অসময়ে এ ফুলকপির আবাদ করতে কৃষককে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন- সেচ, সার, কীটনাশক ও ছত্রাকজনিত বালাইনাশক প্রতিরোধ করতে প্রতি নিয়মিত ¯েপ্র করতে হয়। ফলে আগাম মৌসুমী সবজি আবাদের খরচ বেশি হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ায় কৃষকের নজরদারি কমতি হলে অসময়ের এ সবজির পুরো খেত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কৃষি অফিস আগাম জাতের সবজির আবাদের জন্য সার্বিকভাবে সব ধরনের পরামর্শ সহযোগিতা করছে। আবার অসময়ের এ সবজির আবাদ ভালো হলে কৃষক আশানুরুপভাবে লাভবান হয়ে থাকে।