শিরোনাম :
Logo আজকের নামাজের সময়সূচি Logo যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার আলোচনা করতে চায় সরকার Logo চাঁদপুর পৌরসভার ১২৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা Logo জবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা সমঝোতার চেষ্টা শাখা ছাত্রদলের, দফায় দফায় বৈঠক Logo তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নিন্দা Logo যুব সমাজের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ না থাকায় আজ যুব সমাজ অধপতনে নিমর্জিত ……..কে. এম ইয়াসিন রাশেদসানী Logo কচুয়ার কাদলা ইউনিয়ন যুবদলের আলোচনা সভা ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ‘পঞ্চায়েত’ আমার জীবন বদলে দিয়েছে Logo ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প Logo সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা হালকা থেকে মাঝারি

মৃত সন্তানের সঙ্গে ২ সপ্তাহ !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৭:০৭:৪২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • ৭৫৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

চার সপ্তাহের বেশি পৃথিবীর আলো দেখেনি ইভলিন। বাবা-মার ছোঁয়া বুঝতে পারেনি খুব বেশি।

তাই মৃত্যুর পরেও তাকে নিজেদের কাছে রেখে দিলেন ইংল্যান্ডের এক দম্পতি। ইয়র্কের বাসিন্দা আটিলা জ্যাকেজের সঙ্গে শার্লটের বিয়ে হয়েছিল ২০১৫-তে। শার্লটের ২১তম জন্মদিনের দিন ২৯ এপ্রিলই সুখবরটা আসে। জানতে পারেন মা হতে চলেছেন তিনি।শুরু হয় একটু নতুন ভাবে বাঁচা। একটু নতুন করে স্বপ্ন দেখা। কিন্তু ২০ সপ্তাহের স্ক্যান রিপোর্ট দেখে হঠাৎই চারপাশটা নিকষ অন্ধকার। চিকিৎসকরা জানান, ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশ ঠিক মতো হচ্ছে না। দ্রুত শুরু হয় নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশঙ্কাটাই সত্যি হয়। অ্যামনিওটিক ফ্লুইড টেস্টে ধরা পড়ে বিরল ক্রোমোজোমাল বিকৃতি রয়েছে ইভলিনের দেহে। জানা যায়, এই ধরনের রোগে বাঁচার আশা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু তত দিনে পেরিয়ে গিয়েছে গর্ভপাতের নির্দিষ্ট সময়সীমা।

ইভলিনকে জন্ম দেয়া ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না। ১৩ ডিসেম্বর জন্ম হয় ইভলিনের। অপরিণত মস্তিষ্ক, নাক, ফুসফুস নিয়ে জন্ম থেকেই ভেন্টিলেটরে জায়গা হল ইভলিনের। হাজার যন্ত্রপাতি, পাইপ, সূঁচের আশ্রয়ে কোনও মতে কৃত্রিমভাবে তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও হল। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে দ্রুত। চিকিৎসকরাও পরামর্শ দেন হাসপাতালে নয়, শেষ সময়টুকু ইভলিনকে নিজেদের কাছেই রাখুক শার্লট-আটিলা।

শার্লট জানান, প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। ইভলিনের এই কষ্ট সহ্য করতে পারছিলাম না। ফলে এক সপ্তাহ পর সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম। চাইনি আমাদের মিষ্টি মেয়েটা ভেন্টিলেশনের কষ্টের মধ্যে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাক।

আটিলার জানান, এটা ছিল তাদের জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত। ইভলিনকে একটু ভাল রাখতে শেষ পর্যন্ত শান্ত-সুন্দর একটা হোমে যাওয়া স্থির করেন তারা। তাকে ভেন্টিলেশনের বাইরে নিয়ে আসেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায় ইভলিন। কিন্তু পরিপূর্ণ ভালবাসায় তাকে আবার ‘বাঁচিয়ে’ তোলেন আটিলা-শার্লট।

শার্লট জানালেন, মেয়েটাকে কখনও এত শান্ত, নিশ্চিন্ত দেখিনি। ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনার পর ইভলিনকে দেখে মনে হয়েছিল ও যেন নতুন করে বাঁচল।

ইভলিনকে চিরবিদায় দেয়ার আগে আরও কিছু সুন্দর মুহূর্ত তার সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলেন ওই দম্পতি। ১০ জানুয়ারি হোমে আসে ইভলিন। আড়াই কেজির ছোট্ট দেহটায় তখন প্রাণের কোনও লক্ষণ নেই। কিন্তু কখনও বাবা-মার কোলে, কখনও তার জন্য নির্দিষ্ট ‘রেফ্রিজারেটর কট’-এ ছোট্ট ইভলিনকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। সেলফি, গ্রুপফি, ‘কট’-এ চেপে বাগানে বেড়ানো সবটাই হল। ১০ দিন পর অবশেষে হোম থেকে নিজের বাড়িতে এল ইভলিন।

শার্লট বললেন, ‘বাড়িতে চার দিন ছিল ইভলিন। একটা সম্পূর্ণ পরিবারের মতো দিনগুলো কাটিয়েছি আমরা। ইভলিনকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম যাতে পরে আবার ও এই বাড়িতেই আসতে পারে!’ সূত্র : আনন্দবাজার

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সূচি

মৃত সন্তানের সঙ্গে ২ সপ্তাহ !

আপডেট সময় : ০৭:০৭:৪২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

চার সপ্তাহের বেশি পৃথিবীর আলো দেখেনি ইভলিন। বাবা-মার ছোঁয়া বুঝতে পারেনি খুব বেশি।

তাই মৃত্যুর পরেও তাকে নিজেদের কাছে রেখে দিলেন ইংল্যান্ডের এক দম্পতি। ইয়র্কের বাসিন্দা আটিলা জ্যাকেজের সঙ্গে শার্লটের বিয়ে হয়েছিল ২০১৫-তে। শার্লটের ২১তম জন্মদিনের দিন ২৯ এপ্রিলই সুখবরটা আসে। জানতে পারেন মা হতে চলেছেন তিনি।শুরু হয় একটু নতুন ভাবে বাঁচা। একটু নতুন করে স্বপ্ন দেখা। কিন্তু ২০ সপ্তাহের স্ক্যান রিপোর্ট দেখে হঠাৎই চারপাশটা নিকষ অন্ধকার। চিকিৎসকরা জানান, ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশ ঠিক মতো হচ্ছে না। দ্রুত শুরু হয় নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশঙ্কাটাই সত্যি হয়। অ্যামনিওটিক ফ্লুইড টেস্টে ধরা পড়ে বিরল ক্রোমোজোমাল বিকৃতি রয়েছে ইভলিনের দেহে। জানা যায়, এই ধরনের রোগে বাঁচার আশা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু তত দিনে পেরিয়ে গিয়েছে গর্ভপাতের নির্দিষ্ট সময়সীমা।

ইভলিনকে জন্ম দেয়া ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না। ১৩ ডিসেম্বর জন্ম হয় ইভলিনের। অপরিণত মস্তিষ্ক, নাক, ফুসফুস নিয়ে জন্ম থেকেই ভেন্টিলেটরে জায়গা হল ইভলিনের। হাজার যন্ত্রপাতি, পাইপ, সূঁচের আশ্রয়ে কোনও মতে কৃত্রিমভাবে তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও হল। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে দ্রুত। চিকিৎসকরাও পরামর্শ দেন হাসপাতালে নয়, শেষ সময়টুকু ইভলিনকে নিজেদের কাছেই রাখুক শার্লট-আটিলা।

শার্লট জানান, প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। ইভলিনের এই কষ্ট সহ্য করতে পারছিলাম না। ফলে এক সপ্তাহ পর সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম। চাইনি আমাদের মিষ্টি মেয়েটা ভেন্টিলেশনের কষ্টের মধ্যে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাক।

আটিলার জানান, এটা ছিল তাদের জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত। ইভলিনকে একটু ভাল রাখতে শেষ পর্যন্ত শান্ত-সুন্দর একটা হোমে যাওয়া স্থির করেন তারা। তাকে ভেন্টিলেশনের বাইরে নিয়ে আসেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায় ইভলিন। কিন্তু পরিপূর্ণ ভালবাসায় তাকে আবার ‘বাঁচিয়ে’ তোলেন আটিলা-শার্লট।

শার্লট জানালেন, মেয়েটাকে কখনও এত শান্ত, নিশ্চিন্ত দেখিনি। ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনার পর ইভলিনকে দেখে মনে হয়েছিল ও যেন নতুন করে বাঁচল।

ইভলিনকে চিরবিদায় দেয়ার আগে আরও কিছু সুন্দর মুহূর্ত তার সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলেন ওই দম্পতি। ১০ জানুয়ারি হোমে আসে ইভলিন। আড়াই কেজির ছোট্ট দেহটায় তখন প্রাণের কোনও লক্ষণ নেই। কিন্তু কখনও বাবা-মার কোলে, কখনও তার জন্য নির্দিষ্ট ‘রেফ্রিজারেটর কট’-এ ছোট্ট ইভলিনকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। সেলফি, গ্রুপফি, ‘কট’-এ চেপে বাগানে বেড়ানো সবটাই হল। ১০ দিন পর অবশেষে হোম থেকে নিজের বাড়িতে এল ইভলিন।

শার্লট বললেন, ‘বাড়িতে চার দিন ছিল ইভলিন। একটা সম্পূর্ণ পরিবারের মতো দিনগুলো কাটিয়েছি আমরা। ইভলিনকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম যাতে পরে আবার ও এই বাড়িতেই আসতে পারে!’ সূত্র : আনন্দবাজার