নিউজ ডেস্ক:
সরকারের ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির বিভিন্ন পর্বের মেয়াদ পূর্তির পর ৫ জুন পর্যন্ত মোট ৪৩ হাজার ১৪ জন যুবক ও যুব-নারীর কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫ হাজার ৫৯১ জনের এবং আত্মকর্মসংস্থান হয়েছে ৩৭ হাজার ৪২৩ জনের।
পাশাপাশি, দেশের ৩৭টি জেলার ১২৮টি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন সরকারের ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যে প্রথমপর্ব থেকে চতুর্থপর্ব পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব-নারীর অস্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়াও, বর্তমানে ৮৯ হাজার ১৫৮জন যুবক ও যুব-নারী অস্থায়ী কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) আবুল হাছান খান (যুগ্ম সচিব) বাসস’র সাথে আলাপকালে এসব তথ্য জানান।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতাধীন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি সেল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত এ খাতে ২ হাজার ৭৪ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
দেশের ৩৭টি জেলার ১২৮টি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন এই কর্মসূচির আওতায় সাতপর্বে মোট ১ লাখ ৯১ হাজার ৬৫০ জনের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় প্রথমপর্ব থেকে চতুর্থপর্ব পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৪ জন যুবক ও যুব মহিলাকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় মোট ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৮৫ জন যুবক ও যুব-মহিলাকে প্রশিক্ষন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এই কর্মসূচিতে নারী ও পুরুষের অনুপাত (অস্থায়ী সংযুক্তি প্রাপ্ত) ৫১ দশমিক ৪৯।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আ. ন. আহম্মদ আলী (যুগ্ম সচিব) বাসস’কে বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উচ্চ মাধ্যমিক ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের শিক্ষায় শিক্ষিত আগ্রহী বেকার যুবক ও যুব-নারীদের জাতি গঠনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্তকরনের মাধ্যমে অস্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি’ সূচিত হয়। তিনি বলেন, ‘এটি সরকারের অগ্রাধিকার প্রাপ্ত একটি কর্মসূচি যা মন্ত্রীসভা কর্তৃক অনুমোদিত ‘ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি নীতিমালা’ দ্বারা পরিচালিত হয়।’
তিনি জানান, এ কর্মসূচি প্রাথমিকভাবে পাইলট কর্মসূচি হিসাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৩টি জেলায় বাস্তবায়ন শুরু হয়।পরে মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত মতে দেশের দারিদ্র ম্যাপ অনুযায়ি পর্যায়ক্রমে পর্বভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি সেল সূত্রে জানা যায়, এই কর্মসূচির উপকারভোগিদের বয়স ২৪ বছর থেকে ৩৫ বছর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশ বা তদূর্ধ্ব। পার্বত্য উপজেলাগুলোর জন্য এই যোগ্যতা মাধ্যমিক (এসএসসি) পাশ।
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির নীতিমালা অনুযায়ি, দশটি সুনির্দিষ্ট মডিউলে তিনমাস মেয়াদি প্রশিক্ষন শেষে জাতি গঠনমূলক কাজে সম্পৃক্তকরনের মাধ্যমে অস্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়। প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রত্যেক প্রশিক্ষনার্থীকে দৈনিক ১০০ (একশত) টাকা ভাতা প্রদান করা হয়।
প্রশিক্ষণোত্তর দুই বছরের অস্থায়ী কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হওয়ার পর দৈনিক দুইশ টাকা হারে কর্মভাতা দেয়া হয়। কর্মভাতা থেকে প্রত্যেক মাস শেষে চারহাজার টাকা প্রদান করা হয় এবং দুইহাজার টাকা সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে জমা থাকে। অস্থায়ী কর্মের মেয়াদ শেষে এই টাকা ফেরত দেয়া হয়।
যুগ্ম সচিব আবুল হাছান খান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কার্যক্রম, স্কুল- কলেজ- মাদ্রাসা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ব্যাংক ও বিভিন্ন সেবামূলক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী কর্মস্থান সৃষ্টি হয়ে থাকে।