ঝালকাঠিতে গত শুক্রবার এক বেকারী শ্রমিককে ছাটাই করায় বেকারী মালিকের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট । বিক্ষুদ্বু বেকারী শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে চরম বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র চা-বিস্কুট বিক্রির দোকানী, বেকারী মালিক ও সাধারন ভোক্তারা।কোন প্রকার পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই বেকারী শ্রমিকদের ডাকা এ অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করলে তাদের হাতে জেলার বেকারী মালিক ও সাধারন মানুষ জিম্মি হয়ে পরেছে।
এঅবস্থায় ভাত ছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খাদ্র সামগ্রী বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনে খেতে হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে ঝালকাঠি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন এ ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় সকল বেকারী ও কারখানায় সবধরনের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।শহরের বেশ কয়েকটি চা দোকানদারের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, গত শনিবার থেকে আমরা জেলার বিভিন্ন বেকারী মালিকদের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করতে চাপ দিলেও তারা চাহিদা মাফিক মাল দিতে পারছেনা। আমরা এ অবস্থায় আমাদের নিয়মিত কাষ্টমারদের চাহিদা মতো খাদ্রসামগ্রী সরবারহ করতে পারছিনা। অথচ আমাদের কাছে তাঁদের অনেক টাকা পাওনা আছে কিন্তু বিক্রি বন্ধ হয়ে গেলে তাঁদেরটাকা পরিশোধ করাও সম্ভব হবে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে পাউরুটিসহ অন্যান্য বেকারীর খাদ্র সামগ্রী বরিশাল থেকে কিনে এনে আমাদের সরবারহ করছে।জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের আরেক চা বিক্রেতা বাদল জানান, আমরা স্থানীয় একটি বেকারী থেকে বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য রেখে বিক্রি করি। বেকারী শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে কারখানায় উৎপাদন না হওয়ায় তারা আমাদের বিক্রির জন্য পণ্য দিতে পারছে না। তাই তারা আমাদের নিয়মিত গ্রাহকদের ধরে রাখতে উচ্চ মূল্যে জেলা শহর সংলগ্ন বরিশাল বিভাগীয় শহর থেকে সকালে উচ্চ দামে পণ্য এনে দিয়ে যায়। আমাদের বিক্রি করতে হয় বেশি দামে। দরদাম নিয়ে ক্রেতাদের সাথে অনেক সময় তর্কাতকিও হয়ে যায়। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে আমরাও বিপদে আছি।
বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান পঙ্কু জানায়, ঝালকাঠির লঞ্চঘাট এলাকার সততা বেকারীতে বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতো। কিন্তু কোন কারন ছাড়াই মালিক পক্ষ তাকে কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে গত ৮ডিসেম্বর শুক্রবার তাকে ছাটাই করা হয়েছে। এনিয়ে শুক্রবার রাতে ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় তার ছাটাই বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ দেয়ার দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট ডাকা আহবানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আব্দুর রহিমকে পুনরায় নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট চলছে-চলবে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি বেকারী মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও কায়েদ বেকারীর সত্ত্বাধীকারী মোঃ মিজানুর রহমান জানায়, শ্রমিক নেতা আব্দুর রহিম শহরের লঞ্চঘাট এলাকার মেসার্স সততা বেকারীতে কাজ করতো। বর্তমানে তার বেকারীর উৎপাদন কমে যাওয়ায় ও প্রয়োজন অপেক্ষা শ্রমিকের সংখ্য অতিরিক্ত হওয়ায় কয়েক মাস পূর্ব থেকে তাকেসহ কয়েকজনকে ছাটাইয়ের কথা জানানো হয়। তিনি এতে কোন কর্ণপাত না করায় মালিকপক্ষ সর্বশেষ ২ সপ্তাহের সময় বেঁধে দিলে এ সময়ের পর আঃ রহিম আরো ১ সপ্তাহ সময় চেয়ে নেয়। সে আরো জানায়, ওই সময় শেষে বেকারী শ্রমিক আব্দুর রহিমকে কর্মস্থল ত্যাগের অনুরোধ করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায় জেলা বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নকে সাথে নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেয়। যে কারনে ঝালকাঠির কোন বেকারীতে শ্রমিকরা কাজ না করায় আমরা বরিশাল থেকে মাল ক্রয় করে এনে বিক্রি করছি। এতে সাধারন ক্রেতাদের অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে পণ্য কনতে হচ্ছে। অন্যদিকে আমরা বেকারী মালিকরা ও খুচরা বিক্রেতারা চা দোকানীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রমিক ইউনিয়নের নামে ঝালকাঠি বেকারী শ্রমিকদের খামখেয়ালি ও স্বেচ্ছাচারীতার কারণে তাঁদের কিছু বলা তে যাবেই না বরং বেকারী মালিকরা তাঁদের কাছে জিম্মি হয়ে চলছে।