শিরোনাম :
Logo পাকিস্তানকে ১৩৪ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ Logo সাজিদের ইস্যুতে ইবি শিক্ষার্থীদের মৌন অবস্থান, আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি Logo ফিলিপাইনে ভয়াবহ বন্যা Logo ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহত ১৫ Logo বীরগঞ্জে রাস্তার গাছ কাটা ও চাঁদা দাবীর অপরাধে এনসিপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা Logo শেষবিদায় দিলেন মেয়ের কফিনে চুমু দিয়ে Logo বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবির প্রত্যেকটিই যৌক্তিক বলে মনে করে সরকার Logo আজ এইচএসসি ও সমমানের সকল পরীক্ষা স্থগিত Logo কয়রায় নবনিযুক্ত ইউএনও মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকীর সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সত্য উদঘাটন ও পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচি

যার মাথায় মাথায় ঠুকলেই গজায় শিং, হয় প্রেম !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:০৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৪৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

প্রেমের টানেই প্রাণীকুলে শিংয়ের আবির্ভাব হয়েছিল। এমনই তথ্য মিলছে পুরাজীববিদ্যার নতুন গবেষণায়।

আর এই তথ্য আবিষ্কারের করেছেন তিন পুরাজীববিজ্ঞানী। যাদের মধ্যে আবার রয়েছে দু’জন বাঙালি।

জুরাসিক যুগের আগেই যে শিং ওয়ালা প্রাণী পৃথিবীর বুকে এসেছিল সেই প্রমাণ আগে কখনও মেলেনি। পাঁচ বিজ্ঞানির সেই আবিস্কারই বলছে শুধুমাত্র প্রেমের খাতিরেই আবির্ভাব সিংয়ের। আরও অবাক করা তথ্য, ২৫ কোটি বছর আগের সেই শিংওয়ালা প্রাণীর নিবাস ছিল ভারত।

বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ট্রায়াসিক যুগের প্রাণীর নাম রাখা হয়েছে শৃঙ্গসরাস। বয়স আনুমানিক ২৪ কোটি ৪৫ লাখ প্রায়। মাথায় দু’টি শিং। এই ভারতীয় শৃঙ্গধারীকে নিয়েই এখন হইচই পুরাজীববিদ্যায়। কারণ এর আগে তার সমসাময়িক কোনও শিংওয়ালা প্রাণীর খোঁজ মেলেনি। ভারতে তো নয়ই, সারা পৃথিবীতেও মেলেনি।

শৃঙ্গসরাস ইন্ডিকাস নামে এই সম্পূর্ণ নতুন প্রাণীটির হদিস পেয়েছেন যে গবেষকরা, তাঁরা হলেন আর্জেন্টিনার গবেষক মার্টিন ডি এজকুরা, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউটের পুরাজীববিদ্যার অধ্যাপক শাশ্বতী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইএসআই-প্রাক্তনী, বর্তমানে দুর্গাপুর কলেজের শিক্ষক শারদী সেনগুপ্ত।

গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ন্যাচার গোষ্ঠীর সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে । কিন্তু প্রেমের সঙ্গে শিংয়ের সম্পর্কটা কেমন ? বিজ্ঞানীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ কোটি বছর আগে দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৩ ফুট, উচ্চতা ৪-৫ ফুটের শৃঙ্গসরাসের শিং ব্যবহৃত হত মূলত সঙ্গীদের আকর্ষণ করতেই। যার শিং যত বড় বা যত ভালো সে সঙ্গীনি আকর্ষণে ততই ক্ষমতাশীল।

উল্লেখ্য, আজকের হরিণ বা অন্যান্য প্রাণীর শিংয়ের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়ে থাকে। কিভাবে খোঁজ মিলল এই শৃঙ্গসরাসের ? মধ্যপ্রদেশে দেনওয়া নদীর ধারে সাতপুরা-গন্ডোয়ানা বেসিন অঞ্চলে দুই বাঙালি নারী বিজ্ঞানী ও আর্জেন্টেনীয় বিজ্ঞানী ডি এজকুরা প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে খনন চালাচ্ছিলেন। বেশ কিছু হাড়ের ফসিল সেখানে খুঁজে পান তাঁরা। সেই ফসিলগুলি বিচার-বিশ্লেষণ করে একসঙ্গে সাজিয়ে ক্রমে যে আদল পাওয়া মেলে, তা ছিল এক আদ্যপান্ত নতুন প্রাণী। দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৩ ফুট, উচ্চতা ৪-৫ ফুটের কাছাকাছি। পাতার মতো দাঁতের গড়ন দেখে শৃঙ্গসরাসকে নিরামিষাশী বলেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে নজরকাড়া বৈশিষ্ট্যটি হল, মাথার ওপরকার শিং দু’টো। যা থেকেই শৃঙ্গসরাস নাম, ভারতে পাওয়া গিয়েছে বলে ইন্ডিকাস পদবী।

শৃঙ্গসরাস ট্রায়াসিক কালপর্বের প্রাণী। তাদের মধ্যে এর আগে শিং দেখা যায়নি। ফলে এত দিন মনে করা হতো, ক্রেটাশিয়াস যা ১৪ কোটি থেকে সাড়ে ৬ কোটি বছর আগেকার যুগের, এই ডায়নোসরদেরই প্রথম শিং গজায়। সেখানে তিন শিংওয়ালা ডায়নোসরেরও দেখা মেলে। কিন্তু নতুন আবিস্কার বলছে শৃঙ্গসরাসরা চলাফেরা করত ২৫ কোটি ১০ লক্ষ-১৯ কোটি ৯০ লক্ষ বছর আগে। অর্থাৎ এ বার দুই শিংওয়ালা শৃঙ্গসরাস এসে সেই ইতিহাস আরও ১০ কোটি বছর পিছিয়ে দিল। যা বিবর্তনের ধারাকেও নতুন ভাবে দেখতে শেখাবে।

উল্লেখ্য, শৃঙ্গসরাসের সময়টা হল আদি থেকে মধ্য ট্রায়াসিক যুগ। ট্রায়াসিক যুগ শেষ হয় আনুমানিক ২০ কোটি বছর আগে। তত দিনে শৃঙ্গসরাস পুরোপুরি অবলুপ্ত। ট্রায়াসিক যুগের শেষে প্রাণিজগতের বিরাট অংশই গণহারে অবলুপ্ত হয়ে যায়। তার পরেই জুরাসিক যুগ থেকে বৃহদাকার ডায়নোসরদের রাজত্ব শুরু।

সূত্র: কলকাতা টোয়েন্টিফোর

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানকে ১৩৪ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ

যার মাথায় মাথায় ঠুকলেই গজায় শিং, হয় প্রেম !

আপডেট সময় : ১২:৩৭:০৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

প্রেমের টানেই প্রাণীকুলে শিংয়ের আবির্ভাব হয়েছিল। এমনই তথ্য মিলছে পুরাজীববিদ্যার নতুন গবেষণায়।

আর এই তথ্য আবিষ্কারের করেছেন তিন পুরাজীববিজ্ঞানী। যাদের মধ্যে আবার রয়েছে দু’জন বাঙালি।

জুরাসিক যুগের আগেই যে শিং ওয়ালা প্রাণী পৃথিবীর বুকে এসেছিল সেই প্রমাণ আগে কখনও মেলেনি। পাঁচ বিজ্ঞানির সেই আবিস্কারই বলছে শুধুমাত্র প্রেমের খাতিরেই আবির্ভাব সিংয়ের। আরও অবাক করা তথ্য, ২৫ কোটি বছর আগের সেই শিংওয়ালা প্রাণীর নিবাস ছিল ভারত।

বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ট্রায়াসিক যুগের প্রাণীর নাম রাখা হয়েছে শৃঙ্গসরাস। বয়স আনুমানিক ২৪ কোটি ৪৫ লাখ প্রায়। মাথায় দু’টি শিং। এই ভারতীয় শৃঙ্গধারীকে নিয়েই এখন হইচই পুরাজীববিদ্যায়। কারণ এর আগে তার সমসাময়িক কোনও শিংওয়ালা প্রাণীর খোঁজ মেলেনি। ভারতে তো নয়ই, সারা পৃথিবীতেও মেলেনি।

শৃঙ্গসরাস ইন্ডিকাস নামে এই সম্পূর্ণ নতুন প্রাণীটির হদিস পেয়েছেন যে গবেষকরা, তাঁরা হলেন আর্জেন্টিনার গবেষক মার্টিন ডি এজকুরা, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউটের পুরাজীববিদ্যার অধ্যাপক শাশ্বতী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইএসআই-প্রাক্তনী, বর্তমানে দুর্গাপুর কলেজের শিক্ষক শারদী সেনগুপ্ত।

গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ন্যাচার গোষ্ঠীর সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে । কিন্তু প্রেমের সঙ্গে শিংয়ের সম্পর্কটা কেমন ? বিজ্ঞানীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ কোটি বছর আগে দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৩ ফুট, উচ্চতা ৪-৫ ফুটের শৃঙ্গসরাসের শিং ব্যবহৃত হত মূলত সঙ্গীদের আকর্ষণ করতেই। যার শিং যত বড় বা যত ভালো সে সঙ্গীনি আকর্ষণে ততই ক্ষমতাশীল।

উল্লেখ্য, আজকের হরিণ বা অন্যান্য প্রাণীর শিংয়ের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়ে থাকে। কিভাবে খোঁজ মিলল এই শৃঙ্গসরাসের ? মধ্যপ্রদেশে দেনওয়া নদীর ধারে সাতপুরা-গন্ডোয়ানা বেসিন অঞ্চলে দুই বাঙালি নারী বিজ্ঞানী ও আর্জেন্টেনীয় বিজ্ঞানী ডি এজকুরা প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে খনন চালাচ্ছিলেন। বেশ কিছু হাড়ের ফসিল সেখানে খুঁজে পান তাঁরা। সেই ফসিলগুলি বিচার-বিশ্লেষণ করে একসঙ্গে সাজিয়ে ক্রমে যে আদল পাওয়া মেলে, তা ছিল এক আদ্যপান্ত নতুন প্রাণী। দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৩ ফুট, উচ্চতা ৪-৫ ফুটের কাছাকাছি। পাতার মতো দাঁতের গড়ন দেখে শৃঙ্গসরাসকে নিরামিষাশী বলেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে নজরকাড়া বৈশিষ্ট্যটি হল, মাথার ওপরকার শিং দু’টো। যা থেকেই শৃঙ্গসরাস নাম, ভারতে পাওয়া গিয়েছে বলে ইন্ডিকাস পদবী।

শৃঙ্গসরাস ট্রায়াসিক কালপর্বের প্রাণী। তাদের মধ্যে এর আগে শিং দেখা যায়নি। ফলে এত দিন মনে করা হতো, ক্রেটাশিয়াস যা ১৪ কোটি থেকে সাড়ে ৬ কোটি বছর আগেকার যুগের, এই ডায়নোসরদেরই প্রথম শিং গজায়। সেখানে তিন শিংওয়ালা ডায়নোসরেরও দেখা মেলে। কিন্তু নতুন আবিস্কার বলছে শৃঙ্গসরাসরা চলাফেরা করত ২৫ কোটি ১০ লক্ষ-১৯ কোটি ৯০ লক্ষ বছর আগে। অর্থাৎ এ বার দুই শিংওয়ালা শৃঙ্গসরাস এসে সেই ইতিহাস আরও ১০ কোটি বছর পিছিয়ে দিল। যা বিবর্তনের ধারাকেও নতুন ভাবে দেখতে শেখাবে।

উল্লেখ্য, শৃঙ্গসরাসের সময়টা হল আদি থেকে মধ্য ট্রায়াসিক যুগ। ট্রায়াসিক যুগ শেষ হয় আনুমানিক ২০ কোটি বছর আগে। তত দিনে শৃঙ্গসরাস পুরোপুরি অবলুপ্ত। ট্রায়াসিক যুগের শেষে প্রাণিজগতের বিরাট অংশই গণহারে অবলুপ্ত হয়ে যায়। তার পরেই জুরাসিক যুগ থেকে বৃহদাকার ডায়নোসরদের রাজত্ব শুরু।

সূত্র: কলকাতা টোয়েন্টিফোর