শিরোনাম :
Logo মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে Logo স্বর্ণের দামে সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস Logo দুবাইয়ে বিগ টিকিট লটারি জিতে লাখপতি দুই বাংলাদেশি Logo বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ Logo এটিএম আজহার মুক্তি না পাওয়ায় আমরা ব্যথিত, তবে হতাশ নই Logo আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ৩ বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে বিএনপি Logo ধর্ম নিরপেক্ষতা বিলুপ্তে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত বিএনপি Logo হঠাৎ বৃষ্টিতে চাঁদপুর শহরের মুসলিম কবরস্থান রোড এলাকা সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী Logo ইনসাফের আকাঙ্ক্ষা থেকেই চব্বিশের লড়াই:ব্যারিস্টার ফুয়াদ Logo ইবিতে বিভাগের নাম পরিবর্তসহ দুই দফা দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ

ঝিনাইদহে ভিক্ষুকদের সরকারি সুবিধায় পেট চলছে না, নতুন করে পুরানো পেশা জমজমাট

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:২০:৩৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১১ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৫২ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ  ঝিনাইদহে ভিক্ষুকদের সরকারি সুবিধায় পেট চলছে না, নতুন করে পুরানো পেশা জমজমাট ভাবে শুরু হয়েছে ৬টি উপজেলায়। ভিক্ষুক সাইফুল উপকরণ হিসেবে পেয়েছিলো একটি ছাগল। বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরই ছাগলের অসুখ হয়। ছাগলের পেছনে তিনি ব্যায় করেন তিনশ টাকা। তারপরও ছাগলটি বাঁচাতে পারেনি। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য তাকে একটি মাত্রই ছাগল দেওয়া হয়। এখন তিনি নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করছেন। সাইফুল জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি। তার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের রাউতাইল গ্রামে। সংসারে পিতা, মাতা, স্ত্রী ও এক সন্তানের ভরন পোষন তাকেই করতে হয়। ভিক্ষুক সাইফুল প্রশ্ন তুলে জানান, প্রতি মাসে তার খরচ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। সরকারের দেওয়া ছাগল দিয়ে তো তার সংসার চলবে না। এজন্য তিনি নতুন করে ভিক্ষায় নেমেছেন। উপকরণ নিয়ে সংসার না চলায় তার মতো অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরেছেন। তবে সরকারী উপকরণ হিসেবে গরু ছাগল নিয়ে কিছুদিন অনেকেই ভিক্ষুক চক্ষু লজ্জায় ভিক্ষা করতেন না। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয় ৩ মাস আগে। ভিখারিদের স্বাবলম্বী করতে গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগিসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।

সরকারী সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ভিক্ষুক আছে ৬৫১ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভায় আছে ৭০ জন। এসব ভিক্ষুকদের জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদসহ ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ফিস, উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে দেওয়া হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৭১ টাকা। সর্বমোট বিভিন্ন খাত থেকে ভিক্ষুকদের দেওয়া হয় ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সরকারী ভাবে দাবী করা হয় সদর উপজেলায় ৫৮০ ও পৌরসভায় ৭০ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১৯ জনকে ফেয়ার প্রাইজ কার্ড, ১ জনকে সেলাই মেশিন, ১১৬ জনকে হাঁসমুরগী, ২১ জনকে ওয়েট মাপার মেশিন, ৩৪ জনকে ছাগল, ৭৩ জনকে নগদ অর্থ, ১৫ জনকে প্রতিবন্ধি ভাতা, ২০ জনকে বিধবা ভাতা, ৩১ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৩০ জনকে ভিজিডি কার্ড, ৪ জনকে ৭টি করে শাড়ি-লুঙ্গি ও ১৭ জনকে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়।

পৌরসভার ৭০ জন ভিক্ষিুককেও অনরুপ উপকরণ দেয় সরকার। এসব প্রদানের পরও কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আগের মতোই গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারে ভিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে। ভিখারিদের বক্তব্য, সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সুবিধা তারা পেয়েছেন, তা দিয়ে পেট চালানো যাচ্ছে না, তাই পুরানো পেশায় ফিরছেন তারা। ঝিনাইদহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড আবদুল আলীম জানান, মহিলা কলেজ পাড়ার এক ভিক্ষুক তাকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারী উপকরণে দেওয়া হয়েছিলো। তিনি ওই পাড়ায় একটি জমি কিনেছেন। জমি রেজিষ্ট্রির জন্য ভিক্ষা করার অনুমতি চান। তিনি বলেন, এই পেশা থেকে সহজে তাদের সরানো যাবে না। আস্তে আস্তে একদিন তারা সরে আসবে। তিনি বলেন আগের চেয়ে জেলায় ভিক্ষুক অনেক কমে এসেছে। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। একই কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আশা করা যায় দ্রুত জেলা ভিক্ষুকমুক্ত হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে

ঝিনাইদহে ভিক্ষুকদের সরকারি সুবিধায় পেট চলছে না, নতুন করে পুরানো পেশা জমজমাট

আপডেট সময় : ০৯:২০:৩৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১১ আগস্ট ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ  ঝিনাইদহে ভিক্ষুকদের সরকারি সুবিধায় পেট চলছে না, নতুন করে পুরানো পেশা জমজমাট ভাবে শুরু হয়েছে ৬টি উপজেলায়। ভিক্ষুক সাইফুল উপকরণ হিসেবে পেয়েছিলো একটি ছাগল। বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরই ছাগলের অসুখ হয়। ছাগলের পেছনে তিনি ব্যায় করেন তিনশ টাকা। তারপরও ছাগলটি বাঁচাতে পারেনি। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য তাকে একটি মাত্রই ছাগল দেওয়া হয়। এখন তিনি নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করছেন। সাইফুল জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি। তার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের রাউতাইল গ্রামে। সংসারে পিতা, মাতা, স্ত্রী ও এক সন্তানের ভরন পোষন তাকেই করতে হয়। ভিক্ষুক সাইফুল প্রশ্ন তুলে জানান, প্রতি মাসে তার খরচ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। সরকারের দেওয়া ছাগল দিয়ে তো তার সংসার চলবে না। এজন্য তিনি নতুন করে ভিক্ষায় নেমেছেন। উপকরণ নিয়ে সংসার না চলায় তার মতো অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরেছেন। তবে সরকারী উপকরণ হিসেবে গরু ছাগল নিয়ে কিছুদিন অনেকেই ভিক্ষুক চক্ষু লজ্জায় ভিক্ষা করতেন না। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয় ৩ মাস আগে। ভিখারিদের স্বাবলম্বী করতে গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগিসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।

সরকারী সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ভিক্ষুক আছে ৬৫১ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভায় আছে ৭০ জন। এসব ভিক্ষুকদের জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদসহ ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ফিস, উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে দেওয়া হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৭১ টাকা। সর্বমোট বিভিন্ন খাত থেকে ভিক্ষুকদের দেওয়া হয় ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সরকারী ভাবে দাবী করা হয় সদর উপজেলায় ৫৮০ ও পৌরসভায় ৭০ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১৯ জনকে ফেয়ার প্রাইজ কার্ড, ১ জনকে সেলাই মেশিন, ১১৬ জনকে হাঁসমুরগী, ২১ জনকে ওয়েট মাপার মেশিন, ৩৪ জনকে ছাগল, ৭৩ জনকে নগদ অর্থ, ১৫ জনকে প্রতিবন্ধি ভাতা, ২০ জনকে বিধবা ভাতা, ৩১ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৩০ জনকে ভিজিডি কার্ড, ৪ জনকে ৭টি করে শাড়ি-লুঙ্গি ও ১৭ জনকে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়।

পৌরসভার ৭০ জন ভিক্ষিুককেও অনরুপ উপকরণ দেয় সরকার। এসব প্রদানের পরও কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আগের মতোই গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারে ভিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে। ভিখারিদের বক্তব্য, সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সুবিধা তারা পেয়েছেন, তা দিয়ে পেট চালানো যাচ্ছে না, তাই পুরানো পেশায় ফিরছেন তারা। ঝিনাইদহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড আবদুল আলীম জানান, মহিলা কলেজ পাড়ার এক ভিক্ষুক তাকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারী উপকরণে দেওয়া হয়েছিলো। তিনি ওই পাড়ায় একটি জমি কিনেছেন। জমি রেজিষ্ট্রির জন্য ভিক্ষা করার অনুমতি চান। তিনি বলেন, এই পেশা থেকে সহজে তাদের সরানো যাবে না। আস্তে আস্তে একদিন তারা সরে আসবে। তিনি বলেন আগের চেয়ে জেলায় ভিক্ষুক অনেক কমে এসেছে। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। একই কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আশা করা যায় দ্রুত জেলা ভিক্ষুকমুক্ত হবে।