বারাদি প্রতিনিধি ঃ মেহেরপুরে টানা ১২ দিন ধরে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিতে ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মাঠের মরিচও আউশ ধান ছাড়াও অন্যান্য ফসলী জমি তলিয়ে থাকায় কৃষকদের মাথায় হাত। গত কয়েক দিনের প্রবল টানা বর্ষণে সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আমসোনাগাড়ি বিলে ১শতাধিক আউশ ধান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে । মেহেরপুর জেলায় আবাদে জমি তলিয়ে গেছে অনন্ত ১৫হাজার হেক্টর জমির মরিচ ও আউশ ধানের বীজ। ধান রোপন করার আগ মুহুর্তে ধানের বীজসহ আবাদে জমি তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাঝে শুরু হয়েছে হাহাকার। ১২ দিনের বৃষ্টিতে ধানের বীজ, পাট, সবজি, অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সোনাপুর গ্রামের কৃষক ইসরাইল হোসেন জানান, আমি এ মৌসুমে আমসোনা গাড়ি বিলে ৬ বিঘা আউশ ধান লাগিয়েছি। সমস্থ ধান এই ভারি বর্ষণে পানির নিছে তলিয়ে গেছে। এই বিলের পানি দু-একদিনের মধ্য নিষ্কাসন না হলে কাঁচথোর ধান পচেঁ যাবে। কৃষক লুলুমিয়া জানান, আমার ৪ বিঘা আউশ ধান ছিল কিন্তু ভারি বর্ষণের ফলে সমস্থ জমির ধান এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এমনাবস্থায় মানোনীয় এমপি ও প্রশাসন আমাদের পাশে না দাড়ালে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। মনিরুল ইসলাম বলেন, এই বিলে আমার ৩ বিঘা আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে। অনেক বছর আগে এই বিলের পানি একটি খাল দিয়ে চুলকানগাড়ি বিল হয়ে গ্রামের ভেতর দিয়ে ভৈরব নদীতে আসত। আমসোনা গাড়ির বিলের পাশের ভরাট করার ফলে অনেক ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। খাল থাকাকালীন এই মাঠে কোন ফসল পানিবন্দী থাকত না। এই বিলে আলাউদ্দিনের ৩ বিঘা ধান, লাল্টু মিয়ার ২ বিঘা ধান, আখের আলীর ২ বিঘা ধান, সের আলীর ২ বিঘা ধান, দবিরউদ্দিনের ২ বিঘা আউশ ধানসহ গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষকের ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে।
মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-এর কাছে এলাকার চাষীদের একটাই দাবি- আমসোনাগাড়ি বিলের পানি নিরসনের জন্য একটি ড্রেন করে দিলে আমরা অনেক উপকৃত হব। আগামীতে এই ধরনের ক্ষতিতে আমরা আর পড়বো না। মাননীয় সংসদ সদস্য-এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকা কৃষকেরা।
এবিষয়ে পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সোনাপুর গ্রামের কৃষকদের অনেক ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে জানতে পেরে আমি বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। সরকারি কোন অনুদান আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেরপুর কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় ৫৫ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আউশ ধানের মধ্যে ১৫ হাজার হেক্টর আবাদে জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। এছাড়া প্রায় ৮হাজার হেক্টর জমির মরিচসহ অন্য সবজি ২৮০, বোনা আমন ৩০, মুগ ১শত , পানের বরজ ২০, আউস ধানের বীজতলা ২শত হেক্টর জমি ফসল পানির নিচে তলিয়ে আছে।