জিয়াবুল হক, টেকনাফ: আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। আধুনিকতায় যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম গঞ্জের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী কৃষি ও গৃহস্থলি সামগ্রী।
আধুনিকতার উৎকর্ষের দাপটের কাছে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এক সময়ের জনসাধারনের বৃষ্টি থেকে বাচার প্রধান মাধ্যম বাঁশ ও বেতের তৈরী “জুঁই”। এমন এক বস্তু জুই‘র।বর্ষার মৌসুমে ধুমধামের সাথে তৈরী হত জুঁই‘র।ব্যস্ত সময় পার করত এসব গ্রামীন কারিগর। কিন্তু তাদের আর হাট,বাজারে দেখা যায়না। অনেকটা বেকার সময় পার করছে তারা।
গ্রামেগঞ্জে এখন পুরোপুরি যান্ত্রিক ঢেউ লেগেছে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ ও বেতের তৈরী জুঁই। টেকনাফ উপজেলা সহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী জুঁই আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে,
আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন জুঁই‘র কদর কমে যায়। গ্রাম বাংলার কৃষকদের বাড়ী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এ শিল্পটি। হাতে গোনা দুই একজন জেলে ও কৃষকের বাড়ীতে বাঁশ ও বেতের তৈরী প্রচীনতম বৃষ্টি থেকে বাচার একমাত্র সম্বল জুঁই এখনও চোখে পড়ে।
টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশ খালিয়া পাড়া গ্রামের শতোর্ধ মুরব্বী মকবুল আহমদ জানান, এক সময়ে জুঁই‘র খুব কদর ছিল। কিন্তু এখন কয়েক গ্রাম খোঁজ করে ও একটি জুঁই‘র পাওয়া মুশকিল।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ তা বিলুপ্তির পথে। শাহপরীর দ্বীপের হাজী জাফর আলম জানায় এই ঐতিহ্যবাহী জুঁই‘র অনেকটা স্মৃতিবশতই ধরে রেখেছি প্রায় ২০ বছর ধরে।
টেকনাফ সদরের তুলাতলী গ্রামের প্রবীন মুরব্বী, এক সময়ের জুই‘র শিল্পের অভিজ্ঞ কারিগর ফকির মোহাম্মদ বলেন জুঁইর তৈরী করে তার সংসার চালাত। বর্তমানে তার ব্যবহার কমে যাওয়ায় তিনি এ কাজ আর করেন না। অনেকটা বেকার সময় পার করছে বলে ও জানান সে।
গ্রামীণ জনপদের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে বাপ দাদার মাটি ও কুড়ে বাড়ী ঘরে বদলে ডিজাইন করে, ইটের বাড়ী ঘর তৈরী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেকে বাড়ীতে জুঁই ব্যবহার করতে চাইনা। তাই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জুঁই‘র বিলুপ্তির কারণে হয়তো আর কারও চোখে পড়বে না বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মাওঃ রফিক উদ্দীন জানান জুঁই‘র এক সময়ের খুবই প্রয়োজনীয় শিল্প। কালের পরিবর্তনে তেমন আর দেখা যায় না। এখন জুঁই বললে এখনকার অনেকে পরিচয় ও করতে পারবেনা।বলতে গেলে এটি এখন বিলুপ্ত প্রায়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী জুঁই‘র বিলুপ্তির কারণে হয়তো আর কারও চোখে পড়বে না বলে ও জানান তিনি।