নিউজ ডেস্ক:
একটি নয়, দু’টি বিশ্বপদক পেয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। এ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন নিউজিল্যান্ডের নারী ক্রিকেটার সুজি বেটস। এ জন্য তাকে অভিনন্দন জানান আইসিসি মহিলা ওডিআই এবং বছরের (২০১৬) টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড়েরা। সুইজারল্যান্ড ক্রিকেট সুজি বেটসকে উষ্ণ অভিনন্দন জানায়। কারণ তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা ওডিআই ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় হিসেবে চমৎকার পারফরম্যান্স করেছেন ২০১৬ সালে।
হোয়াইট ফার্নসের ব্যাট ও বল খেলার মওসুমে ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল ও টিটোয়েন্টি ক্রিকেটে বিজয়ী হওয়ায় বিশ্বে প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে খেতাব পান তিনি। সুজি বেটস ৮ উইকেটে গড়ে ৯৪ রান হিসেবে আট ম্যাচে ৪৭২ রান করেন। টি-টোয়েন্টিতে করেন ৪২৯ রান। গড়ে ৪২ দশমিক ৯ এবং ১১৫ স্ট্রাইক রেটে প্রথম সারির স্থান দখলে সক্ষম হন। আইসিসি মিডিয়ায় উচ্ছ্বসিত সুজি বলেন, ‘আমি একটি নয়, দু’টি পদকের অধিকারী, এটি অনেকের কাছে বিস্ময়ের মনে হচ্ছে বলে বুঝতে পারছি। খেলায় পারফরম্যান্সের জন্য স্বীকৃতি পাওয়া যেমন মহা আনন্দের, তেমনি ক্রিকেটে এক বছর ব্যস্ততার পর সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে সফলতা ধরে রাখতে যারপরনাই চেষ্টা করেছি। বলা যেতে পারে, এ চেষ্টায় আমি সফল হয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘খেলায় পাওয়া পদকগুলো যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছে। তবে আরো যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো- আমাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আমি দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছি। দলের অবস্থানকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
খেলাপাগল সুজি বেটস অস্ট্রেলিয়ান মহিলা বিগব্যাস লিগের পার্থ স্কোরচার্সে ক্যাপটেনের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ দায়িত্বে ছিলেন ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত। আর সেটি করতে পেরেছেন নিজ যোগ্যতা বলেই। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট নির্বাহী ডেভ হোয়াইট বলেছেন, ‘বিশ্বে উভয় ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ায় এমনটি বলা যায়, তিনি (সুজি) পেশাদারিত্ব, দৃঢ়তা ও সব দক্ষতার এক বিরাট সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। আমরা তার পারদর্শিতায় বিশেষভাবে গর্বিত। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট দলের সবার পক্ষ থেকে আমি তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই।’
২০১৫ সালে তিনি চমৎকার সফলতা দিয়েছেন হোয়াইট ফার্নস টিমকে। সুজি সিরিজ জয় করেন ভারতে বিশ্ব টি-টোয়ান্টি সেমিফাইনালে জেতাসহ অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে। দশম আন্তর্জাতিক নারী ক্রিকেটারের মর্যাদা পেয়েছেন তিন হাজার ওডিআই রানের মাধ্যমে। বেটসের চমৎকার এ অর্জনকে প্রশংসা করেন হোয়াইট ফার্নসের প্রশিক্ষক হাইদে টিফিফন। তিনি বলেন, ‘সুজির জন্য এটা চমৎকার সংবাদ। তা ছাড়া তিনি বরাবরই এমন স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। কেননা, সুজি ব্যাটিং ও বোলিং উভয় ফিল্ডে চমৎকার পারদর্শী। বলা যেতে পারে, তিনি পেশা হিসেবে খেলাকে বেছে নেন তার শারীরিক অবস্থা ভেঙে অবিশ্বাস্য কঠোর চর্চার মাধ্যমে।’
সুজি মনে করেন, ‘কোনো কিছুর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হলে বুঝেশুনে কঠোর অনুশীলন প্রয়োজন। সঠিক নিয়মে অনুশীলন বা চর্চা করলে তা একদিন ঠিকই কাজে আসে।’ মাঠে সুজি সামনে থেকে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে মেয়েদের খেলায় তিনি সেরাদের একজন। সুজি বেটস ওডিআই পুরস্কার লাভ করেন ২০১৩ সালে, তবে প্রথমবারের মতো অর্জন করেন টি-টোয়েন্টি পদক। বাস্কেটবল খেলায়ও ভালো অভিজ্ঞতা আছে তার। ২০০৯ সালে উইমেন্স ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপে অংশ নেন তিনি।
সুজি বেটসের পুরো নাম সুজান্নাহ উইলসন বেটস। জন্ম ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭, নিউজিল্যান্ডের ওটাগোর ডুনেডিনে।