নিউজ ডেস্ক:
অ্যানিমেটেড ছবি ফ্রোজেনের নায়িকা এলসাকে মনে আছে নিশ্চয়ই। কল্পরাজ্য অ্যারানডেলের রানী এলসার শিশু বয়স থেকেই ছিল বরফ তৈরির ক্ষমতা। দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পোপোয় বালোবেডু প্রজাতির ১২ বছরের রানী মাসালানাবো মোদজাজির রয়েছে বৃষ্টি আনার ক্ষমতা। এমনটাই দাবি রানীর প্রজাদের।
তবে রানী হলেও এখনও রাজ্যাভিষেক হয়নি মাসালানাবোর। ফ্রোজেনে যেমন ১৮ বছর বয়সে এলসার রাজ্যাভিষেক হয়েছিল, তেমনই মাথায় মুকুট উঠতে মাসালানাবোকে অপেক্ষা করতে হবে আরও ৬ বছর। আপাতত স্কুলের পোশাক ছেড়ে রানীর পোশাক পরার পরে রঙিন হেডব্যান্ডই যেন মুকুট মাসালানাবোর।
প্রায় দুইশো বছরের পুরনো বালোবেডু প্রজাতি নারীতান্ত্রিক। পূর্বতন রানী ছিলেন মাসালানাবোর মা। তিনি ছিলেন, ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত, কম্পিউটার এবং গাড়ি চালানোতে দক্ষ। ২০০৫ সালে মায়ের মৃত্যুর পরে রানী হয় তিন মাসের শিশু মাসালানাবো। মায়ের মৃত্যুর পরে পালক মা–বাবা অ্যাঞ্জি এবং মাথোলে মোৎশেগার কাছে থাকে মাসালানাবো। তার দাদা জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
আইনজীবী মাথোলে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী অ্যাঞ্জি মাসালানাবোকে নিজেদের সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গেই আজকের যুগের যাবতীয় শিক্ষাও দিচ্ছেন। আর পাঁচটা সাধারণ কিশোরীর মতোই সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় মাসালানাবো।
জোহানেসবার্গের উত্তরে মোলোতোৎসি উপত্যকায় মাসালানাবোর পূর্বপুরুষের গ্রাম মোদজাজিস্ক্লুফ। স্কুলের ছুটিতে সেখানের বাড়িতে গিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে পড়াশোনা করে মাসালানাবো। প্রশিক্ষণের মধ্যে আছে বৃষ্টি আনতে শেখার পূজাও। বংশানুক্রমে বৃষ্টির পূজারি মোদজাজিরা দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তের সময় বৃষ্টির উপাসনা করে। পুজার প্রধান পূজারি রানী স্বয়ং। শুধু রাজ পরিবারই বৃষ্টিপূজায় যোগ দিতে পারে। ৫ সপ্তাহ ধরে ৫টি মন্দিরে চলে পূজা। শেষ দিনে বৃষ্টি নামলে চলে উৎসব। বিশেষ লক্ষণযুক্ত একটি গরুকে বিশেষভাবে তৈরি বিয়ার পান করানো হয়। বাকি বিয়ার পান করে রাজপরিবার। তারপর চলে নাচ, গান, প্রার্থনা।
জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জেকব জুমার সঙ্গে দেখাও করেছে মাসালানাবো। ফলে ১৮ বছর হলে রানীর পরিবার সরকারি সাহায্য পাবে। উইৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেভিড কপল্যান্ড বললেন, বৃষ্টি আনার ক্ষমতা থাকে বলে নিজের সমাজে পবিত্র বলে মনে করা হয় মোদজাজি রানীকে। ঠিক যেমন খ্রিস্টানরা মনে করেন পোপকে।