নিউজ ডেস্ক:
অ্যাপেন্ডিসাইটিস হল অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ। একে জরুরি অবস্থা হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই লেপারোটমি (Laparotomy) বা লেপারোস্কপি (Laparoscopy) অপারেশনের মাধ্যমে এ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা হয়। এর চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। কারণ এর ফলে পেরিটোনিয়ামের (উদরের আবরকঝিল্লী) পচন ধরতে পারে।
কারণ
অ্যাপেন্ডিক্সের আস্তরণের ভেতরের প্রতিবন্ধকতাই অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর সম্ভাব্য কারণ। ব্যাকটেরিয়ার দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অ্যাপেন্ডিক্স ফুলে ওঠে ও এতে পুঁজ জমা হয়। যদি অবিলম্বে চিকিৎসা না করা হয় তবে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারে।
লক্ষণ
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:
পেটে তীক্ষ্ণ ব্যথা, তলপেটে ব্যথা, বমি, জ্বর, পেটের জ্বালাপোড়াসহ ব্যথা, শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা, ডায়রিয়া, পেটের উপরের দিকে ব্যথা, ঠাণ্ডায় কাঁপুনি, ক্ষুধামন্দা, পেট ফাঁপা।
যে যে কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়:
* অ্যাপেন্ডিসাইটিস সব বয়সের মধ্যে হতে পারে কিন্তু যাদের বয়স ১১ এবং ২০ বছরের মধ্যে তাদের এই রোগ বেশি হয়।
* নারীদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ১৪.১০ গুণ বেশি। সিস্টিক ফাইব্রোসিসে ভুগছে এরকম ছেলে শিশুর এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
* যারা কম ফাইবার এবং প্রক্রিয়াজাত শর্করা বা রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান তাদের অ্যাপেন্ডিসাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি ।
* অ্যাপেন্ডিক্সের একটি বিশেষ অবস্থা যা জন্ম ও বংশগত কারণেও হয়ে থাকে। যদি পরিবারের কারো এই রোগটি থাকে তবে শিশুর এই রোগ হতে পারে।
* অ্যাপেন্ডিসাইটিস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শীতকালে – অক্টোবর থেকে মে মাসের মধ্যে হয়ে থাকে।
* বিভিন্ন ভাইরাস ইনফেকশন অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
যদি কারো সন্দেহ হয় যে তার অ্যাপেন্ডিসাইটিস আছে তাহলে অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা নিতে হবে। যদি চিকিৎসা না করানো হয়, তবে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারে এবং ব্যাকটেরিয়া পেটের গহ্বরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে পুরো পেট জুড়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পরতে পারে যা পেরিটোনাইটিস নামে পরিচিত। অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কোনো ব্যথানাশক ওষুধ, অ্যান্টাসিড, ল্যাক্সাটিভ (Laxatives) বা গরম প্যাড ব্যবহার করা উচিৎ নয়, কারণ এর ফলে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারে।