চুয়াডাঙ্গায় জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাজতির মৃত্যু

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:৪৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • ৭১৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মহিরুল ইসলাম (৪০) নামের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে

আজ সোমবার (০২ জুন) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মহিরুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন কুড়ালগাছি গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে অন্তত মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, গতকাল রোববার (০১ জুন) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দর্শনা থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলামসহ দুজন পুলিশ সদস্য অভিযান চালিয়ে মাদক মামলায় ওয়ারেন্টকৃত আসামী মহিরুল ইসলামকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে নেই। ওইদিনই দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক জেল হাজতে প্রেরন করেন।

এদিকে, মহিরুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা, মেয়ে রিতা ও বড় ভাই সুমার আলী দাবি করেন, মহিরুল ইসলাম জামিনে ছিল। গ্রেপ্তার হবার কিছুক্ষণ আগে নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঝিনাইদহ থেকে নিজ বাড়ি আসে মহিরুল ইসলাম। একজন সুস্থসবল মানুষকে তারা ধরে নিয়ে গিয়ে হয়তো মারধর-নির্যাতন করেছে পুলিশ। এ কারণেই হয়তো মহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানি আমরা।

অপরদিকে পুলিশের ভাষ্য, মহিরুলের বিরুদ্ধে মাদকহ অন্তত তিনটি মামলা রয়েছে। ২০২৩ সালে দামুড়হুদা মডেল থানায় দায়ের হওয়া মাদক মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতের পাঠানো হয়।

দর্শনা থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক মামলায় ওয়ারেন্টকৃত আসামী মহিরুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। থানা হাজতে কিছুক্ষণ রেখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধর দূরের কথা, তার গায়ে একটা টোকাও পড়েনি। সে জানতো তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে, তাই নিজেই আমাদের সঙ্গে এসেছিলেন। যারা অভিযোগ করছেন তারা মিথ্যাচার করছেন৷

দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে কেন মারধর করবে পুলিশ? এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি। আর পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রকিন সাদী বলেন, রোববার দিবাগত রাত ২টা ২৫ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে হাজতি মহিরুলকে যখন জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিমুজ্জামান তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে ডা. নাসিমুজ্জামান তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. ফখর উদ্দিন বলেন, তিনি মাদক মামলায় জেল হাজতে ছিলেন৷ হঠাৎ রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

ট্যাগস :

দলের ফান্ডের জন্য টি-শার্ট, মগ, বই বিক্রি করবে এনসিপি

চুয়াডাঙ্গায় জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাজতির মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৯:১৭:৪৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মহিরুল ইসলাম (৪০) নামের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে

আজ সোমবার (০২ জুন) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মহিরুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন কুড়ালগাছি গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে অন্তত মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, গতকাল রোববার (০১ জুন) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দর্শনা থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলামসহ দুজন পুলিশ সদস্য অভিযান চালিয়ে মাদক মামলায় ওয়ারেন্টকৃত আসামী মহিরুল ইসলামকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে নেই। ওইদিনই দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক জেল হাজতে প্রেরন করেন।

এদিকে, মহিরুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা, মেয়ে রিতা ও বড় ভাই সুমার আলী দাবি করেন, মহিরুল ইসলাম জামিনে ছিল। গ্রেপ্তার হবার কিছুক্ষণ আগে নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঝিনাইদহ থেকে নিজ বাড়ি আসে মহিরুল ইসলাম। একজন সুস্থসবল মানুষকে তারা ধরে নিয়ে গিয়ে হয়তো মারধর-নির্যাতন করেছে পুলিশ। এ কারণেই হয়তো মহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানি আমরা।

অপরদিকে পুলিশের ভাষ্য, মহিরুলের বিরুদ্ধে মাদকহ অন্তত তিনটি মামলা রয়েছে। ২০২৩ সালে দামুড়হুদা মডেল থানায় দায়ের হওয়া মাদক মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতের পাঠানো হয়।

দর্শনা থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক মামলায় ওয়ারেন্টকৃত আসামী মহিরুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। থানা হাজতে কিছুক্ষণ রেখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধর দূরের কথা, তার গায়ে একটা টোকাও পড়েনি। সে জানতো তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে, তাই নিজেই আমাদের সঙ্গে এসেছিলেন। যারা অভিযোগ করছেন তারা মিথ্যাচার করছেন৷

দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে কেন মারধর করবে পুলিশ? এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি। আর পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রকিন সাদী বলেন, রোববার দিবাগত রাত ২টা ২৫ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে হাজতি মহিরুলকে যখন জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিমুজ্জামান তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে ডা. নাসিমুজ্জামান তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. ফখর উদ্দিন বলেন, তিনি মাদক মামলায় জেল হাজতে ছিলেন৷ হঠাৎ রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।