শিরোনাম :
Logo সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন Logo বর্ষায় মসলা সংরক্ষণের ৫ উপায় Logo ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে ব্যাংক Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরে মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ Logo সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo অর্থের বিনিময়ে পলাশবাড়ীর খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ দিয়ে লাপাত্তা টিসিএফ Logo ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু; শিক্ষার্থীরা রাবি মেডিকেলের নাম দিল নাপা সেন্টার Logo জাতির উন্নতির জন্য জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন – মির্জা গালিব Logo গোপালগঞ্জে চলমান কারফিউ’র মেয়াদ বাড়লো Logo লেডি দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক সভা মাদক সমাজ ও জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয় ………….সাখাওয়াত জামিল সৈকত

‘পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের একজন নেতার এমন বক্তব্য উদ্বেগজনক’

গুজরাটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক বক্তব্যকে ‘ঘৃণা-উদ্দীপিত সহিংসতার আহ্বান’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান।

আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের একজন নেতার কাছ থেকে এমন বক্তব্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং রাজনৈতিক পরিপক্বতার ঘাটতির প্রকাশ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের কণ্ঠে ক্রমেই যে উসকানিমূলক ও অসহিষ্ণু বক্তব্য শোনা যাচ্ছে, তা গোটা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এসব বক্তব্যের বিপজ্জনক প্রভাব বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকত আলী খান বলেন, ‘মোদি তার বক্তব্য দিয়েছেন যেন সেটা একটি নির্বাচনী মঞ্চ, অথচ তার উচিত ছিল দায়িত্বশীল রাষ্ট্রনায়কের মতো আচরণ করা। এটি একটি উদ্বেগজনক নজির।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের রাজনীতিতে পরিপক্বতা ও শালীনতার ক্রমাগত অবক্ষয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

তিনি আরও বলেন, মোদির এই বক্তব্য জাতিসংঘ সনদের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী, যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে পারস্পরিক বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়েছে এবং অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ কিংবা হুমকি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শফকত আলী খান বলেন, ‘পাকিস্তান মনে করে এই বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি—যার লক্ষ্য হলো ভারতীয় অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জনসংখ্যাগত প্রকৃতি পরিবর্তনের চেষ্টাগুলো থেকে আন্তর্জাতিক মনোযোগ সরিয়ে দেওয়া।’

তিনি পাকিস্তানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় অবদানের কথাও তুলে ধরেন, যা ভারতের আগ্রাসী বক্তব্যের চেয়ে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।

মুখপাত্র আরও বলেন, ভারতের ভেতরে হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের প্রভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠবাদ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিকভাবে প্রান্তিক করে ফেলার যে প্রবণতা, সেটিও এখন আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।

পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক সম্মান ও সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক চায় জানিয়ে শফকত আলী খান বলেন, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা বা ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকির যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আলোকে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, ভারতীয় নেতৃত্বের ক্রমবর্ধমান উসকানিমূলক ও আগ্রাসী বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হোক, যা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাই নয়, দীর্ঘস্থায়ী শান্তির সম্ভাবনাকেও বিপন্ন করে তুলছে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন

‘পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের একজন নেতার এমন বক্তব্য উদ্বেগজনক’

আপডেট সময় : ০৪:২৪:২৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

গুজরাটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক বক্তব্যকে ‘ঘৃণা-উদ্দীপিত সহিংসতার আহ্বান’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান।

আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের একজন নেতার কাছ থেকে এমন বক্তব্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং রাজনৈতিক পরিপক্বতার ঘাটতির প্রকাশ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের কণ্ঠে ক্রমেই যে উসকানিমূলক ও অসহিষ্ণু বক্তব্য শোনা যাচ্ছে, তা গোটা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এসব বক্তব্যের বিপজ্জনক প্রভাব বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকত আলী খান বলেন, ‘মোদি তার বক্তব্য দিয়েছেন যেন সেটা একটি নির্বাচনী মঞ্চ, অথচ তার উচিত ছিল দায়িত্বশীল রাষ্ট্রনায়কের মতো আচরণ করা। এটি একটি উদ্বেগজনক নজির।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের রাজনীতিতে পরিপক্বতা ও শালীনতার ক্রমাগত অবক্ষয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

তিনি আরও বলেন, মোদির এই বক্তব্য জাতিসংঘ সনদের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী, যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে পারস্পরিক বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়েছে এবং অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ কিংবা হুমকি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শফকত আলী খান বলেন, ‘পাকিস্তান মনে করে এই বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি—যার লক্ষ্য হলো ভারতীয় অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জনসংখ্যাগত প্রকৃতি পরিবর্তনের চেষ্টাগুলো থেকে আন্তর্জাতিক মনোযোগ সরিয়ে দেওয়া।’

তিনি পাকিস্তানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় অবদানের কথাও তুলে ধরেন, যা ভারতের আগ্রাসী বক্তব্যের চেয়ে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।

মুখপাত্র আরও বলেন, ভারতের ভেতরে হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের প্রভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠবাদ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিকভাবে প্রান্তিক করে ফেলার যে প্রবণতা, সেটিও এখন আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।

পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক সম্মান ও সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক চায় জানিয়ে শফকত আলী খান বলেন, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা বা ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকির যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আলোকে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, ভারতীয় নেতৃত্বের ক্রমবর্ধমান উসকানিমূলক ও আগ্রাসী বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হোক, যা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাই নয়, দীর্ঘস্থায়ী শান্তির সম্ভাবনাকেও বিপন্ন করে তুলছে।