যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে)-এর সঙ্গে দেশটির বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক মীমাংসায় পৌঁছেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় এই চুক্তি করা হয়েছে।
এই মীমাংসার ফলে বোয়িংকে আর অপরাধমূলক মামলার মুখোমুখি হতে হবে না বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ার ফ্লাইট ৬১০ (২০১৮) এবং ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩০২ (২০১৯)-এর দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে এই মীমাংসা হলো, যেখানে মোট ৩৪৬ জন নিহত হন।
বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মোট মীমাংসার অর্থের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হবে বোয়িং-এর নিরাপত্তা, গুণগত মান এবং নিয়মনীতি মানার কার্যক্রম উন্নত করার জন্য। এর মধ্যে প্রায় ৪৪৫ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য।
আদালতের নথি অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে বোয়িং-কে ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রেগুলেটরদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে আর ফৌজদারি মামলার মুখে পড়তে হবে না।
তবে নিহতদের অনেক পরিবারের সদস্য এই চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষায়, ‘এই চুক্তি আমাদের জন্য দুঃখজনক এবং হতাশাজনক।’
নিহতদের পরিবারের পক্ষের আইনজীবী পল ক্যাসেল এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী কর্পোরেট অপরাধ। এমন একটি চুক্তি একেবারেই অনুচিত।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রতিনিধিত্ব করা পরিবারগুলো আদালতের কাছে আবেদন জানাবে যেন এই চুক্তি বাতিল করা হয়।’
বোয়িং চুক্তি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে বিচার বিভাগ বলেছে, ‘পরিবারের মতামত, প্রমাণ ও আইন বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, এই চুক্তি জনস্বার্থের জন্য যথাযথ ও ন্যায়সঙ্গত।’
বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ‘এটি ভবিষ্যতের বিমান ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যদিও কোনো কিছুই নিহতদের ফিরে আনতে পারবে না, এই চুক্তি বোয়িং-কে আর্থিকভাবে জবাবদিহিতার মধ্যে আনে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য কিছুটা হলেও সুবিচার আনে।’