এর আগে গত ২০ মে অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়ন এবং দমন–পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীল করার দায়ে আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা‘ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সারাদেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) সাম্প্রতিক ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) যে অবস্থান গ্রহণ করেছে, তা দেশজুড়ে বিদ্যুৎখাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে জোর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই কর্মসূচিকে তারা অযৌক্তিক ও শৃঙ্খলা বিরোধী বলেছে। বুধবার (২১ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বার্তা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিভিন্ন সমাধানযোগ্য যৌক্তিক সুযোগ–সুবিধাদি প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি মাসে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সমিতিসমূহ পরিদর্শন করে প্রত্যেক সমিতির সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়ে আন্তরিকভাবে সকলের সাথে সাক্ষাৎপূর্বক তাদের যৌক্তিক সুযোগ–সুবিধাদি ইতিবাচক হয়ে তা দ্রুততম সময়ে সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ চলমান রয়েছে। মতবিনিময় ও ইতিবাচক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ কর্মরত কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের মধ্যে শৃংখলা, প্রণোদনা ও কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে।’
‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য অভিন্ন সার্ভিস কোড ও একীভূত করার বিষয়টি সরকার/রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত, এটি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বা সংস্থা প্রধানের এখতিয়ারভূক্ত নয়। এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এ বিষয়টি কেন্দ্র করে গ্রাহকদের জিম্মি করে অফিস শৃঙখলা পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না। সরকারি চাকরি বিধি ভঙ্গকারীদের এবং দেশদ্রোহী কাজে সম্পৃক্তকারীদের চাকরিচ্যুত করা হবে মর্মে সরকার সংস্কারমূলক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। গ্রাহক সেবা বিপর্যয় ঘটিয়ে ব্ল্যাক আউটের মতো অস্থিতিশীল ও দেশকে অকার্যকর করার কাজ করেছে অপসারিত কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা/কর্মচারী। বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ায় গ্রাহককে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়েছিল যার ফলে নেত্রকোনায় একজন রোগী হাসপাতালে বিদ্যুতের অভাবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে, যা রাষ্ট্রদ্রোহ কাজের সামিল।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘দেশকে উন্নত ও যুগোপযোগী করার জন্য সরকার যে সংস্কারমূলক কাজ করে যাচ্ছে তা সময়ের দাবী। ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার সঙ্গে এ সংস্কার কাজে সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। রাষ্ট্র সংস্কার কালে বিশৃঙখলা সৃষ্টি করে রাষ্ট্রের ভাব মুর্তি ক্ষুন্ন করা ও রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা শৃংখলা পরিপন্থী কাজের সামিল, যা রাষ্ট্র ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কোন মতেই মেনে নেওয়া হবে না।’
“সরকারি আদেশে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের স্বামী/স্ত্রী একই পবিস/কাছাকাছি কর্মস্থলে বদলি/পদায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫৪জন স্বামী/স্ত্রীকে তাদের চাহিদা/আবেদন মোতাবেক পছন্দের কর্মস্থলে বদলি করা হয়েছে। ৩৫ স্বামী/স্ত্রীর সমন্বয় বদলি প্রক্রিয়া চলমান আছে, যা একটি বিরল নজির। বদলি চাকুরীর বিধি অনুসারে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এটি কোন শাস্তি বা হয়রানি নয়। নতুন পবিসে বদলির মাধ্যমে কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ভিন্ন পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে, যা তাদের পেশাগত দক্ষতা ও সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়িয়েছে এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্মপদ্ধতির আদান প্রদান ঘটেছে, যা সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়নে সহায়ক হয়েছে বিধায় বিআরইবি ও পবিসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সন্তষ্টি প্রকাশ করেছে। কাজের প্রতি তাদের স্পৃহা বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।”