নিউজ ডেস্ক:
মহানগরীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিশিল্প সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে সরাতে সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর ডেডলাইন দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তা না হলে হাজারীবাগের গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে জানান। রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চামড়াশিল্প উন্নয়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে। রোডম্যাপের আওতায় এ শিল্পের টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এখনো ট্যানারি স্থানান্তরের কাজ হচ্ছে না। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ১৫৫টি প্লটের বিপরীতে মাত্র ৩৩টি প্লটে প্রাথমিক উৎপাদন কাজ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে ৫০টি ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠান সাভারে ট্যানিং ড্রাম স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। ৩৩টি কারখানায় উৎপাদন শুরু করেছে। কারখানা চালুর জন্য প্রায় ৩০টি ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে। এ পর্যন্ত পানির জন্য আবেদন করেছে ৫০টি প্রতিষ্ঠান। আর গ্যাসের জন্য আবেদন করেছে শতাধিক।
বারবার ডেডলাইন দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ট্যানারি স্থানান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, বর্তমানে যেসব ট্যানারি গিয়েছে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে ওয়েড ব্লু প্রসেস করতে পারছে। গ্যাসের অভাবে ক্রাশড ও ফিনিশ করার সক্ষমতা এখনো বিসিকের প্লটগুলোর হয়নি।
সাভারের বিসিক শিল্পনগরীর মহাব্যবস্থাপক মোস্তফা মজুমদার বলেন, বর্তমানে আমাদের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। ট্যানারি এলেই আমরা পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করতে পারি। কিন্তু এখনো হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি আসছে না।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে দুই শতাধিক ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০০২ সালে। ২০০৩ সালে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে ৭০ ভাগ কাজ হয়। এর পর বারবার তাগাদা দিয়েও স্থানান্তর করা যাচ্ছে না ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো সাভারে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট ২০০৯ সালে ২৩ জুন সরকার ও ট্যানারি মালিকদের দ্বিতীয় দফা সময় বেঁধে দেন। এতে বিগত ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের সব চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠান সাভারে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও সরকার ট্যানারি স্থানান্তর করতে না পারায় আদালত আবার ২০১১ সালের ৩১ মে সময়সীমা বেঁধে দেন। এর পর বিসিক ও ট্যানারি মালিকদের দুই সংগঠনের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতাস্মারক অনুযায়ী, ট্যানারি মালিকদের ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হাজারীবাগের সব ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের কথা ছিল। পরে আরও দুই দফা সময় বাড়িয়ে ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। এর পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তিন দিনের মধ্যে ট্যানারি সরানোর কথা বললেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। পরে জুন মাসে ট্যানারি স্থানান্তর করা হলে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা হয় যা ১০ হাজার টাকায় হ্রাস হয়। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে শিল্পমন্ত্রী ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য ৩০ ডিসেম্বর ডেডলাইন দেন।