শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল Logo বাজেট উপস্থাপনের সময় পরিবর্তন Logo কুবির সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির নিন্দা ও প্রতিবাদ Logo রোটারেক্ট ক্লাব অব এইচএসটিইউ এর নেতৃত্বে সিয়াম-নিলয় Logo চুয়াডাঙ্গায় গাফফার হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ Logo বিজিএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মাহমুদ হাসান খান বাবু জীবননগর উপজেলা বিএনপিসহ প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে অভিনন্দন Logo চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ভারতীয় নাগরিক Logo বিচারহীনতায় বাড়ছে মানব পাচার, কার্যকর উদ্যোগ নেই সরকারের6 Logo এবার নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন জামায়াত আমির

কালীগঞ্জে কেঁচো সারের ব্যাপক উৎপাদন করে ক্ষেতে ব্যবহার ও বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন মনি গোপাল

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:০৬:২৭ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৬ মে ২০১৮
  • ৭৩৪ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কেঁচো সারের ব্যাপক উৎপাদন করে ক্ষেতে ব্যবহার ও বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন অনেকই। রাসায়নিক সার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দীর্ঘদিন ধরে জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। এ সারে উৎপাদিত শাকসবজি, ফসল খেয়ে মানুষ খেলে নানা কঠিন ও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সে ক্ষেতে জৈব সার ব্যবহার করলে উৎপাদন ব্যয় কম হয়। সাথে সাথে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে তাছাড়াও অল্প খরচে বাড়িতে তৈরী করা যায়। যা জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফসল পাওয়া যায়। সে কারনে জৈব সারের ওপর ঝুকে পড়েছেন। কথাগুলো বললেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কাদিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মনি গোপাল সরকার। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ কৃষক বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন করে একদিকে ক্ষেতে ব্যবহার করছেন অন্যদিকে বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়,বাড়ির একপাশের একটি টিনের চালার ভিতরে প্রায় ২ শতাধিক মাটির চাড়ি সারি সারি বসানো রয়েছে। চাড়ির উপরে দেয়া বস্তা সরিয়ে দেখা যায় ভিতরে রয়েছে গোবর। এরমধে ছেড়ে দেয়া হয়েছে কেঁচো। কেঁচো গুলো গোবর খেয়ে পায়খানা করছে। এটাই অধিক উর্বরাক্ষম কেঁচো কম্পোস্ট সার। মনি গোপাল সরকার জানান, প্রায় থেকে ১০ বছর আগে জাপান ভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন হাঙ্গার ফ্রি ওয়াল্ড থেকে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরীর প্রশিক্ষন নিয়ে বাড়িতে কোঁচো সার তৈরী শুরু করে নিজ জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেতে থাকেন। প্রথম পর্যায়ে এসার তৈরীর উপকরণ গোবর বাড়িতে না থাকায় কিনতে শুরু করেন। এরপর নিজের পানের বরজ ও সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্য পান। আশপাশের সবজি ক্ষেত ও পান বরজের মালিকেরা প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে বিক্রি শুরু করেন। ক্ষেত মালিকেরা ভালো ফলন পাওয়ায় বাড়তে থাকে তার সারের চাহিদা। প্রতি বছর কম্পোস্ট বিক্রি করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ হয় তার। মনি আরো জানান, মাঠে তার মাত্র ২ বিঘা মত চাষযোগ্য জমি আছে। জমিগুলো জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে কিছু ফসল আসে। এছাড়াও কেঁচো সার তৈরীর পাশাপাশি বাজারে ডেকোরেটরের একটি ছোট ব্যবসাও রয়েছে তার। সেখানে বেশি সময় দেয়া লাগে না। তিনি জানান, এক সময়ে তার সংসারে ব্যাপক অভাব ছিল। বর্তমানে কেঁচো কম্পোস্ট সার বিক্রি ও ডেকোরেটরের দোকান মিলে এখন সংসারে বেশ স্বচ্ছলতা ফিরেছে। সাথে সাথে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। তিনি জানান,বড় ছেলে অনন্ত সরকার ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেছে। ছোট ছেলে প্রশান্ত সরকার ঝিনাইদহ কেসি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স করছে। আর মেয়ে দীপিকা সরকার ফরিদপুরে সারদা সুন্দরী কলেজে দর্শনে অনার্স শেষ বষের ছাত্রি। মনি সরকার আরো জানান, কম্পোস্ট বিক্রির মাধ্যমে যে টাকা আসছে সেটা তার সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসার চালাতে সহায়ক হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নজরল ইসলাম জানান, মনি সরকারের কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি করা কারখানায় তিনি নিজে গিয়েছেন। তার এলাকায় সাধ্যমত জৈব সার ক্ষেতে ব্যবহারের জন্য কৃষকদেরকে উৎসাহিত করে আসছেন।

 

ট্যাগস :

বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

কালীগঞ্জে কেঁচো সারের ব্যাপক উৎপাদন করে ক্ষেতে ব্যবহার ও বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন মনি গোপাল

আপডেট সময় : ০৯:০৬:২৭ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৬ মে ২০১৮

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কেঁচো সারের ব্যাপক উৎপাদন করে ক্ষেতে ব্যবহার ও বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন অনেকই। রাসায়নিক সার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দীর্ঘদিন ধরে জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। এ সারে উৎপাদিত শাকসবজি, ফসল খেয়ে মানুষ খেলে নানা কঠিন ও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সে ক্ষেতে জৈব সার ব্যবহার করলে উৎপাদন ব্যয় কম হয়। সাথে সাথে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে তাছাড়াও অল্প খরচে বাড়িতে তৈরী করা যায়। যা জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফসল পাওয়া যায়। সে কারনে জৈব সারের ওপর ঝুকে পড়েছেন। কথাগুলো বললেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কাদিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মনি গোপাল সরকার। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ কৃষক বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন করে একদিকে ক্ষেতে ব্যবহার করছেন অন্যদিকে বিক্রির করে সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়,বাড়ির একপাশের একটি টিনের চালার ভিতরে প্রায় ২ শতাধিক মাটির চাড়ি সারি সারি বসানো রয়েছে। চাড়ির উপরে দেয়া বস্তা সরিয়ে দেখা যায় ভিতরে রয়েছে গোবর। এরমধে ছেড়ে দেয়া হয়েছে কেঁচো। কেঁচো গুলো গোবর খেয়ে পায়খানা করছে। এটাই অধিক উর্বরাক্ষম কেঁচো কম্পোস্ট সার। মনি গোপাল সরকার জানান, প্রায় থেকে ১০ বছর আগে জাপান ভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন হাঙ্গার ফ্রি ওয়াল্ড থেকে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরীর প্রশিক্ষন নিয়ে বাড়িতে কোঁচো সার তৈরী শুরু করে নিজ জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেতে থাকেন। প্রথম পর্যায়ে এসার তৈরীর উপকরণ গোবর বাড়িতে না থাকায় কিনতে শুরু করেন। এরপর নিজের পানের বরজ ও সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্য পান। আশপাশের সবজি ক্ষেত ও পান বরজের মালিকেরা প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে বিক্রি শুরু করেন। ক্ষেত মালিকেরা ভালো ফলন পাওয়ায় বাড়তে থাকে তার সারের চাহিদা। প্রতি বছর কম্পোস্ট বিক্রি করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ হয় তার। মনি আরো জানান, মাঠে তার মাত্র ২ বিঘা মত চাষযোগ্য জমি আছে। জমিগুলো জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে কিছু ফসল আসে। এছাড়াও কেঁচো সার তৈরীর পাশাপাশি বাজারে ডেকোরেটরের একটি ছোট ব্যবসাও রয়েছে তার। সেখানে বেশি সময় দেয়া লাগে না। তিনি জানান, এক সময়ে তার সংসারে ব্যাপক অভাব ছিল। বর্তমানে কেঁচো কম্পোস্ট সার বিক্রি ও ডেকোরেটরের দোকান মিলে এখন সংসারে বেশ স্বচ্ছলতা ফিরেছে। সাথে সাথে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। তিনি জানান,বড় ছেলে অনন্ত সরকার ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেছে। ছোট ছেলে প্রশান্ত সরকার ঝিনাইদহ কেসি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স করছে। আর মেয়ে দীপিকা সরকার ফরিদপুরে সারদা সুন্দরী কলেজে দর্শনে অনার্স শেষ বষের ছাত্রি। মনি সরকার আরো জানান, কম্পোস্ট বিক্রির মাধ্যমে যে টাকা আসছে সেটা তার সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসার চালাতে সহায়ক হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নজরল ইসলাম জানান, মনি সরকারের কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি করা কারখানায় তিনি নিজে গিয়েছেন। তার এলাকায় সাধ্যমত জৈব সার ক্ষেতে ব্যবহারের জন্য কৃষকদেরকে উৎসাহিত করে আসছেন।