শিরোনাম :
Logo ইবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে সিওয়াইবির তদারকি Logo ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হলে আবার জ্বলে উঠবে আগ্নেগিরির মতো তরুণ প্রজন্ম- পঞ্চগড়ে ছাত্র শিবির সভাপতি Logo চুয়াডাঙ্গায় শিকারি পাখি সহ ধরা, মোবাইল কোর্টে জরিমানা Logo তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কচুয়ায় কৃষকদের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী Logo ভারতের সঙ্গে আকাশ ও স্থল সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা পাকিস্তানের Logo পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত Logo অসুস্থ শ্রমিককে হুইল চেয়ার উপহার দিলো ইয়ুথ ফোরাম ও চর্যাপদ একাডেমি Logo পাকিস্তান জঙ্গিরাষ্ট্র, পাক সেনাপ্রধান লাদেনের মতোই সন্ত্রাসবাদী, বিস্ফোরক প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্তা Logo ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন বিষয়ক ক্যাম্পেইন’ – ল অ্যাওয়ারনেস এন্ড এনালাইটেন্ড সোসাইটি Logo শিক্ষার্থীদের ভাবনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ

জয়ের সমান ড্র বাংলাদেশের

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৫:১৭:৪১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  • ৭৩৯ বার পড়া হয়েছে

Bangladeshi cricketer Liton Das plays a shot during the fifth and final day of the first cricket Test between Bangladesh and Sri Lanka at Zahur Ahmed Chowdhury Stadium in Chittagong on February 4, 2018. / AFP PHOTO / MUNIR UZ ZAMAN (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)

নিউজ ডেস্ক: পঞ্চম দিনের ১৭টি ওভার তখনো বাকী। লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল ম্যাচ ড্রয়ের প্রস্তাব দিল। তখন ক্রিজে ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। তাই আক্ষরিক অর্থেই দুই অধিনায়ক এগিয়ে এসে হাত মিলিয়ে ড্রই মেনে নিলেন।

ইতিহাসের স্বাক্ষী হওয়ার প্রতীক্ষার ক্ষণগণনা শুরু ৭০তম ওভার থেকে। সেই ওভারের শেষ বলে মুমিনুল হক গেলেন স্ট্রাইকে। গ্যালারির আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন দর্শকেরা। গোটা বাংলাদেশও কী উঠে দাঁড়িয়েছিল! সবার চোখেমুখে তখন এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকার তৃষ্ণা। কিন্তু লাহিরু কুমারার শেষ বলটি শর্ট অব লেংথ থেকে বেশ উঠে আসায় মুমিনুল খেলার চেষ্টাই করলেন না। বাড়ল প্রতীক্ষা।
মুমিনুল স্ট্রাইক পেলেন পরের ওভারের চতুর্থ বলে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বরাবর কাট করেছিলেন। বল ফিল্ডারের হাতে জমা পড়ায় রান হলো না। গ্যালারিতে উৎকণ্ঠা। হবে তো! পরের বলেই হয়ে গেল। সান্দাকানের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিটি অফ সাইডে ঠেলে দিয়েই জায়গা বদল করলেন মুমিনুল। এরপর সেই চিরাচরিত সেঞ্চুরির উদ্‌যাপন।
টেস্টে এ পর্যন্ত ৮৭ ক্রিকেটার বাংলাদেশের সাদা জার্সি গায়ে তুলেছেন। তাদের মধ্যে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে নিতে পেরেছেন কেবল মুমিনুল। ভীষণ চাপের মধ্যে মুমিনুলের গড়া এই কীর্তি নেই শচীন টেন্ডুলকারেরও!
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করে ধনঞ্জয়ার শিকার হন মুমিনুল। ধনঞ্জয়ার যে বলটিতে মুমিনুল আউট হলেন, তার চেয়ে ঢের কঠিন বল এই ইনিংসেই খেলেছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সময় ব্যাটিংয়ের ক্লান্তিতেই কিনা, ধনঞ্জয়া অফস্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটিতে ব্যাট পেতে দিলেন। ব্যাটের কানায় লেগে সেটি চলে গেল স্লিপে দাঁড়ানো দিমুথ করুনারত্নের হাতে।
মুমিনুলের আউটের মধ্যে দিয়ে ভেঙে যায় চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৮০ রানের জুটি। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এই টেস্টে মুমিনুলকে দুহাত ভরে দিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাঁকে ফিরিয়ে দেয়নি। তাঁর অসাধারণ এই ইনিংসে ব্যক্তিগত রেকর্ডের পাতা সমৃদ্ধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এটি ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন। রেকর্ডের চেয়েও এই সেঞ্চুরির মহিমা এটিই। তাঁর এই ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৭৪ বলে, ৫টি চার ও ২ ছক্কায়।
মুমিনুল ফেরার পর বেশিক্ষণ থাকেননি লিটন দাসও। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সুবাস পেতে থাকা লিটনের কী হয়েছিল কে জানে! ব্যক্তিগত ৯৪ রানে হেরাথের বলটি কেন তুলে মারতে গেলেন সেটা শুধু্ লিটনই বলতে পারবেন। লিটন-মুমিনুল চতুর্থ উইকেটে ১৬৭ রানের জুটি গড়ার সময়ই আগের রেকর্ডটি ছুঁয়ে ফেলেন। চতুর্থ উইকেট এর আগে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল নাঈম ইসলাম ও সাকিব আল হাসানের, ২০১২ সালে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
মুমিনুল হক ও লিটন দাস আউট হওয়ার পরও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের তেমন একটা ছন্দপতন হয়নি। ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে হাল ধরেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চা-বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৮১। হাতে ৫ উইকেট রেখে ৮১ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর তারাই বাংলাদেশকে জয়ের সমান এক ড্র এনে দেন।
প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রান করেও ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে ম্যাচের চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮১ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আজ ইনিংস হার এড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল আরো অন্তত ১১৯ রানের। পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের সেই রান করতে কতটা বেগ পেতে হয় সেই নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। সেই অনিশ্চিয়তা দূর করে দলকে লিড এনে দিয়েছিলেন দুই ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও লিটন দাস। পরে তারা আউট হলে মাহমুদুউল্লাহ ও সৈকত দলের হাল ধরেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৫১৩ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ৭১৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে সিওয়াইবির তদারকি

জয়ের সমান ড্র বাংলাদেশের

আপডেট সময় : ০৫:১৭:৪১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নিউজ ডেস্ক: পঞ্চম দিনের ১৭টি ওভার তখনো বাকী। লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল ম্যাচ ড্রয়ের প্রস্তাব দিল। তখন ক্রিজে ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। তাই আক্ষরিক অর্থেই দুই অধিনায়ক এগিয়ে এসে হাত মিলিয়ে ড্রই মেনে নিলেন।

ইতিহাসের স্বাক্ষী হওয়ার প্রতীক্ষার ক্ষণগণনা শুরু ৭০তম ওভার থেকে। সেই ওভারের শেষ বলে মুমিনুল হক গেলেন স্ট্রাইকে। গ্যালারির আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন দর্শকেরা। গোটা বাংলাদেশও কী উঠে দাঁড়িয়েছিল! সবার চোখেমুখে তখন এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকার তৃষ্ণা। কিন্তু লাহিরু কুমারার শেষ বলটি শর্ট অব লেংথ থেকে বেশ উঠে আসায় মুমিনুল খেলার চেষ্টাই করলেন না। বাড়ল প্রতীক্ষা।
মুমিনুল স্ট্রাইক পেলেন পরের ওভারের চতুর্থ বলে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বরাবর কাট করেছিলেন। বল ফিল্ডারের হাতে জমা পড়ায় রান হলো না। গ্যালারিতে উৎকণ্ঠা। হবে তো! পরের বলেই হয়ে গেল। সান্দাকানের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিটি অফ সাইডে ঠেলে দিয়েই জায়গা বদল করলেন মুমিনুল। এরপর সেই চিরাচরিত সেঞ্চুরির উদ্‌যাপন।
টেস্টে এ পর্যন্ত ৮৭ ক্রিকেটার বাংলাদেশের সাদা জার্সি গায়ে তুলেছেন। তাদের মধ্যে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে নিতে পেরেছেন কেবল মুমিনুল। ভীষণ চাপের মধ্যে মুমিনুলের গড়া এই কীর্তি নেই শচীন টেন্ডুলকারেরও!
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করে ধনঞ্জয়ার শিকার হন মুমিনুল। ধনঞ্জয়ার যে বলটিতে মুমিনুল আউট হলেন, তার চেয়ে ঢের কঠিন বল এই ইনিংসেই খেলেছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সময় ব্যাটিংয়ের ক্লান্তিতেই কিনা, ধনঞ্জয়া অফস্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটিতে ব্যাট পেতে দিলেন। ব্যাটের কানায় লেগে সেটি চলে গেল স্লিপে দাঁড়ানো দিমুথ করুনারত্নের হাতে।
মুমিনুলের আউটের মধ্যে দিয়ে ভেঙে যায় চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৮০ রানের জুটি। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এই টেস্টে মুমিনুলকে দুহাত ভরে দিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাঁকে ফিরিয়ে দেয়নি। তাঁর অসাধারণ এই ইনিংসে ব্যক্তিগত রেকর্ডের পাতা সমৃদ্ধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এটি ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন। রেকর্ডের চেয়েও এই সেঞ্চুরির মহিমা এটিই। তাঁর এই ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৭৪ বলে, ৫টি চার ও ২ ছক্কায়।
মুমিনুল ফেরার পর বেশিক্ষণ থাকেননি লিটন দাসও। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সুবাস পেতে থাকা লিটনের কী হয়েছিল কে জানে! ব্যক্তিগত ৯৪ রানে হেরাথের বলটি কেন তুলে মারতে গেলেন সেটা শুধু্ লিটনই বলতে পারবেন। লিটন-মুমিনুল চতুর্থ উইকেটে ১৬৭ রানের জুটি গড়ার সময়ই আগের রেকর্ডটি ছুঁয়ে ফেলেন। চতুর্থ উইকেট এর আগে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল নাঈম ইসলাম ও সাকিব আল হাসানের, ২০১২ সালে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
মুমিনুল হক ও লিটন দাস আউট হওয়ার পরও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের তেমন একটা ছন্দপতন হয়নি। ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে হাল ধরেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চা-বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৮১। হাতে ৫ উইকেট রেখে ৮১ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর তারাই বাংলাদেশকে জয়ের সমান এক ড্র এনে দেন।
প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রান করেও ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে ম্যাচের চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮১ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আজ ইনিংস হার এড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল আরো অন্তত ১১৯ রানের। পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের সেই রান করতে কতটা বেগ পেতে হয় সেই নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। সেই অনিশ্চিয়তা দূর করে দলকে লিড এনে দিয়েছিলেন দুই ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও লিটন দাস। পরে তারা আউট হলে মাহমুদুউল্লাহ ও সৈকত দলের হাল ধরেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৫১৩ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ৭১৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।