পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে আবারও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার তিনি বলেন, আমাদের একসাথে বসে শান্তির জন্য কথা বলতে হবে… এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা তাৎক্ষণিক মনোযোগ দাবি করে এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
পাকিস্তান-তুরস্ক-আজারবাইজান ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এই আহ্বান জানান। এসময় তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ উপস্থিত ছিলেন।
শেহবাজ শরীফ বলেন, পাকিস্তান চায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং কাশ্মীরি জনগণের আকাঙ্ক্ষার আলোকে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান। তিনি ভারতকে সন্ত্রাসবাদ, পানি এবং কাশ্মীর ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য আহ্বান জানান।
ভারতের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পাকিস্তান আল্লাহর করুণা, জনগণের সমর্থন এবং সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ় প্রতিক্রিয়ায় তা মোকাবিলা করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত সিন্ধু জল চুক্তিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে, যা পাকিস্তানের জনগণের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেহবাজ বলেন, ‘এটা কখনো সম্ভব হবে না। আমরা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় শিকার। গত কয়েক দশকে হারিয়েছি ৯০ হাজার প্রাণ এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫০ বিলিয়ন ডলার।
এরপরও তিনি জানান, ভারত আন্তরিক হলে পাকিস্তান বাণিজ্যসহ সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
তিনি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তিনি আল্লাহভীরু, নির্ভীক এবং দৃঢ়সংকল্পিত। ভারতের অভিযোগ সত্ত্বেও, পাকিস্তান কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেনি বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা প্রসঙ্গে শেহবাজ বলেন, পাকিস্তান, তুরস্ক ও আজারবাইজান ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক বন্ধনে আবদ্ধ। নাগোর্নো-কারাবাখ, উত্তর সাইপ্রাস এবং কাশ্মীর ইস্যুতে তিন দেশ একে অপরের পাশে থেকেছে এবং পারস্পরিক স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে।
এছাড়াও তিনি বলেন, বিশ্ব বর্তমানে সশস্ত্র সংঘাত, রোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এই প্রেক্ষাপটে মানবতা, সহানুভূতি ও সহযোগিতাই শান্তি ও সমৃদ্ধির একমাত্র পথ।